ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিএমডিএ’র ৭৩ কর্মকর্তার বেতন জালিয়াতি

প্রকাশিত: ০৮:৫৩, ১০ জুলাই ২০১৯

বিএমডিএ’র ৭৩ কর্মকর্তার বেতন জালিয়াতি

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ বেতন স্কেল জালিয়াতি করে ধরা খেয়েছেন রাজশাহীর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) ৭৩ কর্মকর্তা। কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সরকারী এই সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন-ভাতা পেয়ে থাকেন। কিন্তু এ সংস্থার ৭৩ প্রকৌশল কর্মকর্তা জালিয়াতি করে নিজেরাই বাড়িয়ে নিয়েছেন নিজেদের বেতন স্কেল। সংস্থার হিসাব বিভাগকে ম্যানেজ করে মাসের পর মাস বাড়তি বেতন তুলছিলেন এরা। এই কা-ে জড়িত রয়েছেন সহকারী প্রকৌশলী ১৩ জন, সহকারী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) ৮ জন, সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী ৩২ জন ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী ২০ জন। তারা বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন অঞ্চল ও জেলার মাঠপর্যায়ে কর্মরত। বিষয়টি নিয়ে ২০১৭ সালে বাণিজ্যিক নিরীক্ষায় প্রথমে ধরা পড়ে। অডিট আপত্তির পরপরই কর্তৃপক্ষ হিসাব কর্মকর্তা ফারুক আজমকে প্রধান করে গঠন করে তদন্ত কমিটি। কমিটির প্রতিবেদনেও উঠে আসে জালিয়াতির বিষয়টি। এদিকে জালিয়াতির দায়ে অভিযুক্ত ৭৩ কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করে বেতন স্কেলের অতিরিক্ত উত্তোলিত টাকা ফেরত দিতে চিঠিও দেয়া হয়। কিন্তু এখনও তারা সেই টাকা ফেরত দেননি। টাকা ফেরত নেয়ার বিষয়ে উদাসীন খোদ বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ ঘোষিত হওয়ার পর বিএমডিএর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বেড়ে যায়। তবে নতুন বেতন স্কেল কার্যকরের কিছুদিন পর দেখা যায় সংস্থার ৭৩ প্রকৌশল কর্মকর্তা জালিয়াতি করে নিজেদের বেতন স্কেল বাড়িয়ে নেন। পরে সেই অনুযায়ী বেতনও উত্তোলন করেন। তাদের কারও কারও বেতন স্কেল জাতীয় বেতন স্কেলের প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। বিষয়টি শনাক্ত হওয়ার পর হিসাব করে দেখা যায়, ২০১৭ সাল পর্যন্ত সরকারী কোষাগার থেকে ৭৩ কর্মকর্তা মোট ৫৫ লাখ ৬০ হাজার ৬৩৯ টাকা অতিরিক্ত বেতন উত্তোলন করেছেন। বাণিজ্যিক নিরীক্ষা ও এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, নিজ নিজ স্কেলের অতিরিক্ত বেতন উত্তোলনকারীরা হিসাব বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে ইচ্ছেমতো বেতন বাড়িয়ে নেন। বিষয়টি জানাজানি হলে বিএমডিএতে তোলপাড় শুরু হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের নমনীয় ভূমিকায় এতদিনেও অতিরিক্ত উত্তোলিত টাকা সরকারী কোষাগারে জমা হয়নি। এছাড়া সরকারী টাকা আত্মসাতকারী এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৮ মার্চ বিএমডিএ’র নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশিদ অফিস আদেশ জারি করে অতিরিক্ত বেতন উত্তোলনকারী প্রকৌশল কর্মকর্তাদের নামের তালিকা প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নামের পাশে অতিরিক্ত উত্তোলনকৃত বেতনের পরিমাণ উল্লেখ করে মানি রসিদের মাধ্যমে সরকারী কোষাগারে তা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন।
×