ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এটিএম বুথের নিরাপত্তা

প্রকাশিত: ০৮:২২, ১০ জুলাই ২০১৯

এটিএম বুথের নিরাপত্তা

এখন নিজ ব্যাংক এ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা কত সহজ। অটোমেটেড টেলার মেশিনের (এটিএম) বুথে কার্ড ঢুকিয়ে বোতাম টিপে এক মিনিটের কম সময়ের মধ্যে টাকা তোলা সম্ভব। নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ছাড়াও আবাসিক এলাকার কাছাকাছি, এমনকি গ্রামাঞ্চলে মানুষের একেবারে হাতের নাগালেই বেশ কয়েকটি বেসরকারী ব্যাংকের এটিএম বুথ স্থাপন হওয়ায় অর্থ উত্তোলনে খুবই সুবিধা হয়েছে। প্রযুক্তির শুধু সুফল পাবে মানুষ এমন তো নয়, কিছু কুফলে পা আটকে যায়Ñ এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয় কতিপয় ক্রিমিনাল বা অপরাধীচক্রের কারণেই। বিগত বছরগুলোয় অনেক বুথে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে যাতে গ্রাহকদের নিরাপত্তা হয়েছে হুমকির সম্মুখীন। শুধু গ্রাহক নয়, ব্যাংক কর্তৃপক্ষও দুর্বৃত্তের দুষ্কর্মের শিকার হয়েছে। এটিএম বুথে টাকা লোড করার সময় লুটেরারা আক্রমণ চালিয়ে টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। এরপর ঘটল কার্ড জালিয়াতি। সর্বশেষ ঈদ-উল-ফিতরের আগে অভিনব জালিয়াতি হয়েছে, যা ছিল দুর্ভাবনার বিষয়। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বাড্ডার এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলা হলেও এর কোন রেকর্ড ব্যাংকের সার্ভারে নেই। এমনকি কোন গ্রাহকের হিসাব থেকেও টাকা কমে যায়নি। এমনটি আগে কখনও দেখা যায়নি। এবারের ঘটনায় পুরো এটিএম বুথের নিয়ন্ত্রণ নেয় জড়িত বিদেশীরা। এতে দেশের এটিএম সেবার নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে দেশে ১ কোটি ৬০ লাখ ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। এটিএম বুথ রয়েছে ১০ হাজার ৫৩৬টি। পয়েন্ট অব সেলস রয়েছে ৪৯ হাজার ৬২টি। দেশের ৫৭টি ব্যাংকের মধ্যে ৫১টি ব্যাংক কার্ড সেবার সঙ্গে যুক্ত। ব্যাংক মানুষের অর্থ সংরক্ষণের নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। ফলে যে কোন মাধ্যমেই হোক না কেন গ্রাহকের অর্থ খোয়া গেলে তার দায়ভার সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ওপরই বর্তায়। একটা বিষয় স্পষ্ট যে, প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং সেবায় গ্রাহকের ঝুঁকি বেড়ে চলেছে। অবকাঠামো, কার্ড ও তথ্যভা-ার নিরাপত্তায় উপযুক্ত প্রযুক্তির অনুপস্থিতির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রযুক্তিজ্ঞানের অভাবকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। জালিয়াতচক্র যেভাবে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে তাতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের পেশাদারিত্ব ও দায়িত্বশীলতা প্রশ্নের সম্মুখীন। দেশী-বিদেশী হ্যাকারদের অত্যাধুনিক জালিয়াতি রুখতে হলে এটিএম নিরাপত্তার জন্য অচিরেই নতুন ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। জনকণ্ঠের প্রতিবেদন বলছে: তিন বছরে দুই হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে এটিএম বুথে প্রতারকচক্রের হানার কারণে। তাই এটিএম-এ টাকা ওঠানোর কাজটি নিরাপদ নির্বিঘœ করার জন্য উদ্যোগী হতে হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে এটিএম বুথে এ্যান্টি স্কিমিং ডিভাইস সংযোজনের ব্যবস্থা নিতে হবে। এখন থেকেই অধিকতর সুরক্ষার উদ্যোগ নেয়ার বিকল্প নেই। এটিএম সেবার নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। প্রতিনিয়ত নিরাপত্তা হালনাগাদ করতে হবে।
×