ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বকাপের পাঁচ নিষ্প্রভ তারকা

প্রকাশিত: ০৯:৪১, ৯ জুলাই ২০১৯

 বিশ্বকাপের পাঁচ নিষ্প্রভ তারকা

রুমেল খান ॥ সেমিফাইনালে উঠতে না পেরে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে অংশ নেয়া দশ দলের ছয়টিই বাড়ির পথ ধরেছে। গত শনিবারই নিশ্চিত হয়ে যায় শেষ চারের প্রতিপক্ষ। যেখানে খেলবে স্বাগতিক ইংল্যান্ড, গত আসরের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া, দুবারের শিরোপাজয়ী ভারত ও গত আসরের রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপে অনেক খেলোয়াড়ই আলো জ্বালাবেন বলে মনে করা হয়েছিল। তাদের নিজ নিজ দলও ওইসব খেলোয়াড়দের ওপর অনেক ভরসা করেছিল। কিন্তু বিশ্বকাপের লীগ পর্বে তারা প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রত্যাশা সত্ত্বেও বিশ্বকাপে ভাল করতে পারেননি, এমন পাঁচ ক্রিকেটারের দিকে নজর দেয়া যাক। হাসান আলি (পাকিস্তান) ॥ ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জয়ে পাকিস্তান দলের অন্যতম ট্রামকার্ড ছিলেন হাসান আলি। সেই ইংল্যান্ডেই বিশ্বকাপ হওয়ায় ডানহাতি এই পেসারের ওপর অনেক আস্থা রেখেছিল তার দল। কিন্তু চরমভাবে হতাশ করেছেন হাসান। প্রথম চার ম্যাচ খেলে মাত্র দুটি উইকেট নিতে পেরেছেন তিনি। সেই সঙ্গে রানও দিয়েছেন প্রচুর। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ৮৪ রানে এক উইকেট নেয়ার পর একাদশ থেকে বাদ পড়েন হাসান। পাকিস্তানের হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্রুততম ৫০ উইকেট নেয়া বোলার এরপর আর সুযোগই পাননি। ক্রিস গেইল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) ॥ ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে আটটি ইনিংস খেলে খুব কমই রান পেয়েছেন। যার কারণে তার দলও শেষ চারে যেতে ব্যর্থ হয়। ৩৯ বছরের গেইল দুটি হাফ সেঞ্চুরিসহ মোট ২৪২ রানে বিশ্বকাপ ক্যারিয়ার শেষ করেন। এই বিশ্বকাপসহ যে পাঁচটি আসরে খেলেছেন, তার মধ্যে এবারই সবচেয়ে বেশি হতাশ করেছেন। যদিও বিশ্বকাপের শুরুটা অবশ্য দারুণই করেছিলেন ‘ইউনিভার্স বস’। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেই ৫০ রান করার পর আর তেমন হাসেনি তার ব্যাট। পুরো টুর্নামেন্টেই নিজের সঙ্গে সংগ্রাম করতে হয় তাকে। একসময়ের ছক্কার হাঁকানোর এই মেশিন পেস-স্পিন দুধরনের বোলিংয়ের বিরুদ্ধেই আটকে গেছেন। রশিদ খান (আফগানিস্তান) ॥ এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে আলোচনায় থেকে ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন রশিদ খান। তার স্পিন বোলিংয়ের দিকেই নজর ছিল সবার। কিন্তু বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে সেরা পারফর্ম করা টি-টুয়েন্টি সেনসেশন দেশের হয়ে নয়টি ম্যাচ খেলে শূন্য হাতেই ফিরেছেন। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর ও দলের প্রধান অস্ত্রকে অবশ্য আগলেই রাখছেন আফগানিস্তান অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ খেলার পর গুলবাদিন বলেন, ‘সে শতভাগ দিয়েছে, কিন্তু দুর্ভাগ্য!’ হাশিম আমলা (দক্ষিণ আফ্রিকা) ॥ গত পাঁচ বছর ব্যাটিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ভরসার নাম ছিলেন হাশিম আমলা। কিন্তু বিশ্বকাপে সাত ইনিংসে মাত্র ২০৩ রান করতে পেরেছেন তিনি। এই বিশ্বকাপে মাত্র দুটি হাফ সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন তিনি। এর এক ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা হেরেছে এবং অন্য ম্যাচটি ছিল সেমিফাইনালের দৌড় থেকে দল ছিটকে যাওয়ার পর অন্য ম্যাচে। প্রোটিয়াদের টপ অর্ডারে প্রতি ম্যাচেই প্রথম ১০ ওভারে ব্যর্থ হয়েছেন ব্যাটসম্যানরা। যেখানে ব্যর্থতার মোটা দাগটা আমলার পাশেই। তবে আমলা ভাল করলে দক্ষিণ আফ্রিকান ছাড়াও অন্য অনেকেরও ভাল লাগে। যেমন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমলা ৮০ রান করার পর ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে টুইট করেন, ‘আমলার রান পাওয়া দেখাটা সত্যিই খুব আনন্দের। আমাদের যুগের অন্যতম গ্রেট।’ মাশরাফি মর্তুজা (বাংলাদেশ) ॥ মাশরাফি মুর্তজা বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে সফল ওডিআই অধিনায়ক। কিন্তু পুরো আসরজুড়ে নিজের ফর্মের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে ৩৫ বছরের ম্যাশকে। আট ম্যাচে তার নামের পাশে মাত্র একটি উইকেট, সেটা আরও বড় করে ফুটিয়ে তুলেছে। পড়তি ফর্মের মাশরাফি অধিকাংশ ম্যাচেই তার কোটার ১০ ওভার বল করতে পারেননি! ফলে বাকি কাজ করতে হয়েছে দলের অন্য বোলারদের। বাংলাদেশেরও শেষটা হয়েছে হতাশায়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুর্দান্ত জয়ে শুরু বিশ্বকাপ শেষ হয় পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার দিয়ে।
×