ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভিজিএফ কার্ড ফেরত

প্রকাশিত: ০৮:২৮, ৯ জুলাই ২০১৯

ভিজিএফ কার্ড ফেরত

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন পরিষদে চাহিদা না থাকায় ১১ হাজার ৩৯৫টি ভিজিএফ কার্ড ফেরত দেয়ার খবরটি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। উল্লেখ্য, গ্রামাঞ্চলে দুস্থ ও অতি দরিদ্র পরিবারের জন্য ভিজিএফ তথা খাদ্য সহায়তা কর্মসূচীর আওতায় প্রতি মাসে ২০ কেজি চাল দেয়া হয়। ফকিরহাট উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল ২৯ হাজার ২৩৮টি ভিজিএফ কার্ড। উল্লিখিত সংখ্যক কার্ড ফেরত দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফেরত দেয়া হয়েছে বরাদ্দকৃত চালও। এতে প্রতীয়মান হয় যে, অত্র এলাকায় দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমেছে। একই সঙ্গে বেড়েছে দরিদ্রদের ক্রয়ক্ষমতা, সক্ষমতা ও সামাজিক মর্যাদা। তদুপরি এও প্রমাণিত হয় যে, স্থানীয় সরকার পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদে সুশাসন, জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা বাড়ছে। এবার চালের বাম্পার ফলন হয়েছে। সে অবস্থায় দেশের অন্যান্য স্থানেও খোঁজখবর নিলে এমন চিত্র পাওয়া দুর্লভ হবে না বলেই প্রতীয়মান হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সবিশেষ যা জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে তা হলো, বর্তমান গণমুখী সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর সম্প্রসারণ। এর আওতায় দরিদ্র ও বঞ্চিতদের মধ্যে সুবিধাভোগীর সংখ্যা আরও অন্তত ১৩ লাখ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫ হাজার ৩২১ কোটি টাকা। এতে সুবিধা পাবেন প্রায় ৮৯ লাখ দরিদ্র মানুষ। উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রায় ৭৬ লাখ মানুষ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচীর আওতায় নানা সুবিধা ভোগ করছেন। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে ভোটার সন্তুষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনই এর অন্যতম উদ্দেশ্য। তবে আরও ১৩ লাখ দরিদ্রকে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় যাদের নিয়ে আসা হচ্ছে তাদের মধ্যে অগ্রাধিকার দেয়া হবে প্রবীণদের। এর মধ্যে অন্যতম বয়স্ক ভাতা কর্মসূচী। এর আওতায় আরও ৪ লাখ প্রবীণকে দেয়া হবে বয়স্ক ভাতা। ফলে দেশব্যাপী ৪৪ লাখ প্রবীণ ব্যক্তি বয়স্ক ভাতার অন্তর্ভুক্ত হবেন। এর পাশাপাশি বিধবা ভাতা, স্বামী কর্তৃক নিগৃহীত নারী, অসচ্ছল প্রতিবন্ধীসহ চা শ্রমিকদের দারিদ্র্য বিমোচন তথা জীবনমান উন্নয়নের জন্য সুবিধাভোগীর সংখ্যা ও ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। গত অর্থবছরে মোট দেশজ প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৫১ মার্কিন ডলার, টাকার অঙ্কে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭৮৯ টাকা। দেশে দারিদ্র্যের হার কমে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৮ ভাগে। হতদরিদ্র মানুষের হার কমে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৩ ভাগে। উল্লেখ্য, অর্থবছরের শুরুতে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। শেষ পর্যন্ত তা বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। পরিকল্পনামন্ত্রীর মতে যেভাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হচ্ছে তাতে ২০৩০ সালের আগেই দারিদ্র্যের হার শূন্যের কোটায় নেমে আসতে পারে। আগামীতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীতে বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়ন তথা স্বনির্ভর কর্মসূচীর আওতা সম্প্রসারিত হলে দেশে দারিদ্র্যের হার আরও কমে আসবে নিঃসন্দেহে।
×