ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে মেনন

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করে আদালত অবমাননা করা হয়েছে

প্রকাশিত: ১২:৪৬, ৮ জুলাই ২০১৯

  গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করে আদালত অবমাননা করা হয়েছে

সংসদ রিপোর্টার ॥ গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি আদালত অবমাননা মন্তব্য করে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, এনার্জি রেগুলেটারি কমিশন-বিইআরসি গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করার মধ্য দিয়ে আদালতকে অবমাননা করেছে, সংসদকে অবমাননা করেছে, সর্বোপরি জনগণকে অবমাননা করেছে। ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে রবিবার মাগরিবের নামাজের পর সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি জানান, এ ব্যাপারে তিনি সংসদে ৬৮ বিধিতে একটি নোটিশ স্পীকারকে দিয়েছেন। জবাবে ডেপুটি স্পীকার বলেন, নোটিশটি স্পীকারের বিবেচনাধীন রয়েছে। নোটিশটি গ্রহণ করলে ওই নোটিশে সমর্থনকারী জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশ জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল, ওয়ার্কার্স পার্টির মোস্তফা লুৎফুল্লাহসহ অন্যরা বিশ আলোচনা করতে পারবেন। ফ্লোর নিয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, বাজেট অধিবেশনের সমাপ্তির পর পরই এনার্জি রেগুলেটরী কমিশন গ্যাসের মূল্য ৩২ দশমিক ৮ ভাগ বাড়িয়ে দিয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর প্রভাব গৃহস্থালীতে যেমন পড়বে, তেমনি শিল্প পরিবহনসহ অর্থনীতির সামগ্রীক সবক্ষেত্রে একটা প্রতিক্রিয়া হবে। যেটা কৃষিমন্ত্রী স্বীকারও করেছেন। তিনি (কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক) বলেছেন, জনগণের প্রতিক্রিয়া আছে। জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা আছে। আমি নিজেও হতাশ। তিনি বলেন, বাজেট বক্তৃতায় বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রীর সাফল্যের প্রশংসা করে বলেছিলাম গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে সংসদে আলোচনা করুন। যাতে সকল সংসদ সদস্য অংশগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু দেখলাম বাজেট অনুমোদনের চার ঘণ্টার মাথায় বিইআরসি গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়ে দিলেন, এটা সংসদের চরম অবমাননা। সংসদকে এড়িয়ে যাওয়া। মেনন বলেন, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে এলএনজির মূল্য সমন্বয়ের কথা বলা হচ্ছে। ভারত যেখানে এলএনজির আমদানি মূল্য সাড়ে ৬ ডলার প্রতি হাজার সিএফটিতে। আমাদের দেশ আমদানি করেছে সাড়ে ১০ ডলার দিয়ে। পাকিস্তানও সাড়ে ১০ ডলার। আমাদের দেশে হুইলিং চার্জিং চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, গ্যাস শহরের মানুষ ব্যবহার করে। গ্রামের মানুষ এলপিজি ব্যবহার করে। ইতোমধ্যে এলজিপির মূল্য প্রায় ৩২ শতাংশ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মূল্য সমন্বয়ের কারণে এলপিজির মূল্য ৭১ শতাংশ বেড়ে গেছে। যখন সিএনজি বন্ধ করে দেওয়া হবে, তখন সমস্ত সিএনজি স্টেশনগুলো এলপিজিতে রূপান্তরিত হবে। আসলে এলজিপি’র বাজার ঠিক করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কি না, সেটাও আলোচনা বিষয়। ক্ষমতাসীন জোটের এই শীর্ষ নেতা বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রীকে বিষয়টিকে অবহিত করে সংসদে আলোচনার দাবি করেন। তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত সরকার নেবে কোন সন্দেহ নাই, তবে জনগণের কথা শোনার দায়িত্বও সরকারের। বিইআরসি গণশুনানি নিয়ে মামলা হয়েছে, সেই মামলার রুল হয়েছে। সেটার বাইরে গিয়ে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেটা অবৈধ, বেআইনী, আদালতকে অবমাননা করা। তারা (বিইআরসি) সংসদকে অবমাননা করছেন, কোর্টকে অবমাননা করছেন এবং সর্বোপরি জনগণকে অবমাননা করছেন। এসময় ডেপুটি স্পীকার বলেন, নোটিশটি স্পীকারের বিচেনাধীন রয়েছে। তাই নোটিশ গ্রহণের পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত প্রতিমন্ত্রীর বিবৃতি দিতে চাচ্ছি না। যদি স্পীকার গ্রহণ করেন তাহলে তো বিশদ আলোচনা করার সুযোগ পাবেন।
×