ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

লালকার্ড দেখে মেসির হৈচৈ

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ৮ জুলাই ২০১৯

 লালকার্ড দেখে মেসির হৈচৈ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সর্বশেষ দুই আসরের ফাইনালে পেনাল্টি শূটআউটে চিলির কাছে হেরে শিরোপা খোয়াতে হয়েছিল আর্জেন্টিনাকে। এবার কোপা আমেরিকায় টানা তৃতীয়বার দল দু’টি মুখোমুখি হয়। তবে মঞ্চটা আলাদা। ফাইনাল নয় তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ। সেই ম্যাচে শনিবার রাতে মুখোমুখি হয়েছিল দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম সেরা দল দু’টি। ব্রাজিলের সাওপাওলোর এ্যারেনা করিন্থিয়ান্সে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে চিলিকে ২-১ গোলে হারিয়ে তৃতীয় হয়েছে আর্জেন্টিনা। প্রতিশোধের জয় পেলেও সব ছাপিয়ে গেছে ম্যাচে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসির লালকার্ড বিতর্ক। অনাহূত এ ঘটনায় প্রথমার্ধের শেষের দিকে দু’দলই ১০ জনে পরিণত হয়। উত্তেজনা ও শারীরিক শক্তি প্রদর্শনের ম্যাচে আর্জেন্টিনার হয়ে একটি করে গোল করেন সার্জিও এ্যাগুয়েরো ও পাওলো দিবালা। পেনাল্টি থেকে চিলির হয়ে ব্যবধান কমানো গোলটি করেন আর্টুরো ভিদাল। দল দু’টি মুখোমুখি হওয়া মানেই উত্তেজনা ও শারীরিক শক্তি প্রদর্শন। প্রথমার্ধে ২১টি ফাউল যার বড় প্রমাণ। ম্যাচের ১১ মিনিটে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। মেসির ফ্রিকিক থেকে বল পেয়ে গ্যাব্রিয়েল এ্যারিয়েসের বাধা পেরিয়ে দারুণ শটে লক্ষ্যভেদ করেন ম্যানচেস্টার সিটি ফরোয়ার্ড এ্যাগুয়েরো। ২১ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ব্রাজিলের কাছে সেমিফাইনালে হেরে যাওয়া দলটি। জিওভানি লো সেলসোর থ্রু নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে দর্শনীয় চিপে গোল করেন দিবালা। এই ম্যাচে শুরুর একাদশে থাকলেও ব্রাজিলের বিরুদ্ধে বদলি হিসেবে শেষের দিকে নামেন দিবালা। অনেকের মতে তাকে শুরু থেকে খেলালে ফলাফল অন্যরকম হতে পারতো। ম্যাচের ৩৭ মিনিটে ঘটে ন্যক্কারজনক ঘটনা। চিলির রক্ষণভাগে মেসির সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান চিলির ডিফেন্ডার গ্যারি মেডেল। এ সময় পেছন থেকে মেসি বল নিয়ন্ত্রণে নিতে যেয়ে প্রথমে মেডেলকে কনুই দিয়ে ধাক্কা মারেন। এরপর ঘুরে দাঁড়িয়ে চিলিয়ান ডিফেন্ডার মেসিকে একের পর এক ধাক্কা দিতে থাকেন। এতে করে দু’দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ভিএআর না দেখেই রেফারি দু’জনকেই লালকার্ড দেখান। ফলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় আর্জেন্টিনা ও চিলি। এ ঘটনায় বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে। বিরতির পর পেনাল্টি গোলে ব্যবধান কমায় চিলি। ৫৯ মিনিটে আরাঙ্গুয়েজকে লো সেলসো ফাউল করলে রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। স্পট কিক থেকে গোল করে ব্যবধান ২-১ করেন ভিদাল। ম্যাচ শেষে মেসির লালকার্ড নিয়ে তুলকালাম কা- ঘটেছে। স্বয়ং মেসিই অভিযোগ করেছেন, রেফারিরা ব্রাজিলকে চ্যাম্পিয়ন করাতে পক্ষপাতমূলকভাবে বাঁশি বাজাচ্ছেন। ব্রাজিলকে জেতানোর জন্য এবারের কোপা আমেরিকা আসর দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক বলেন, খেলায় আর্জেন্টিনাকে সমান চোখে দেখা হয়নি। এছাড়া আমি দুর্নীতির অংশ হতে চাই না। মেসি বলেন, কোপা আমেরিকায় আমাদের যথাযথ সম্মান দেখানো হয়নি। আমরা আরও ভাল ফল করতে পারতাম। কিন্তু তারা (রেফারি) আমাদের ফাইনালে যাওয়ার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমর্থকদের ফুটবল উপভোগের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবারের আসরের দুর্নীতি ও রেফারি। এটা ফুটবলকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ক্ষুব্ধ মেসি এ কারণে ম্যাচ শেষে মঞ্চে যাননি মেডেল নিতে। ব্রাজিলের বিপক্ষে সেমিফাইনালে হারের পর পেনাল্টি না পাওয়ায় আক্ষেপ করেছিলেন মেসি। এছাড়া এর আগে ব্রাজিলের মাঠের সমালোচনাও করেন তিনি। পাঁচবারের ফিফা সেরা তারকা আরও অভিযোগ করে বলেন, ফাইনালে ব্রাজিলকে জেতানোর চেষ্টা করা হবে। এমন কথা বলার পর মেসিকে নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সত্য সবসময় উন্মোচন করা উচিত। তবে মেসির এসব কথাকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকা ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল। এক বিবৃতিতে কনমেবল জানায়, ফুটবলে আপনি কখনও জিতবেন, কখনও হারবেন। সম্মানের সঙ্গে সে ফল মেনে নেয়াই ফেয়ার প্লের অন্যতম অংশ। এটা রেফারির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সবসময় সবকিছু সুচারুভাবে সঠিক নাও হতে পারে। মেসির এ ধরনের মন্তব্য অগ্রহণযোগ্য। কারণ ১২ জাতির এ প্রতিযোগিতায় সবার জন্যই সমান নিয়ম। এমন মন্তব্য টুর্নামেন্টের প্রতি সম্মান না থাকাটাই বোঝায়।
×