ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বাল্যবিয়ের কুফল

প্রকাশিত: ০৯:০৯, ৫ জুলাই ২০১৯

 বাল্যবিয়ের কুফল

সংবাদদাতা, নান্দাইল, ময়মনসিংহ, ৪ জুলাই ॥ উপজেলায় ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণীর দুই মাদ্রাসা ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হয়ে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা নিয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে ফিরেছে। স্বামীর সঙ্গে যৌন আচরণে অভ্যস্ত হতে না পেরে তারা বাড়ি ফিরেছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে। ইউএনও বিয়ে দুটি বন্ধ করে পরিবারের কাছ থেকে অঙ্গীকারনামা নিয়ে আসলেও গভীর রাতে দুই মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে দেয় পরিবার। জানা গেছে, জুন মাসের ১৬ তারিখ নান্দাইল ইউনিয়নের একটি গ্রামের ষষ্ঠ শ্রেণীর এক মাদ্রাসা ছাত্রীর বিয়ে ঠিক হয় পাশের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায়। বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে ইউএনও মোসাদ্দেক মেহদী ইমাম ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিবকে শিক্ষার্থীর বাড়িতে পাঠিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেয়। এ সময় শিক্ষার্থীর বাবা মেয়ের বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না বলে লিখিত অঙ্গীকারনামাও দেন। তবে বয়স বেশি দেখিয়ে গভীর রাতে বিয়ে দিয়ে মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দেয় পরিবার। শিক্ষার্থীর দাদি জানায়, বিয়ের রাতে (বাসর) অসুস্থ হয়ে পড়ে তার নাতনি। খবর পেয়ে পরদিন লোক পাঠিয়ে মেয়েকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এখন সে নতুন করে মাদ্রাসায় যাওয়া শুরু করেছে। অপরদিকে সিংরইল ইউনিয়নের অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর ১লা জানুয়ারি বিয়ে হয় পাশের বাড়ির এক তরুণের সঙ্গে। ওই শিক্ষার্থী সম্প্রতি নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। শিক্ষার্থী জানায়, সেও স্বাসীর সঙ্গে যৌন আচরণে অভ্যস্ত হতে পারেনি। এজন্য স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে। এখন সে মাদ্রাসায় যাচ্ছে। এই শিক্ষার্থী বলে, তার বাবা একাধিক বিয়ে করেছেন। হঠাৎ তার বিয়ে ঠিক করলে সে রাজি না থাকায় হুমকি-দমকি দিয়ে জোর খাটায়। এই শিক্ষার্থীর নানি জানায়, নাতনির বাবা কৌশলে মেয়েকে আটকিয়ে জোর করে মসজিদের ইমামকে ডেকে বিয়ে পড়ায়। বিয়ের পর নাতনিকে কিছু খাওয়ানো হলে সে কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন ঘুম ভাঙলে নাতনি নিজেকে স্বামীর বিছানায় দেখতে পায়। কিছুদিন পরই নাতনি পালিয়ে চলে আসে।
×