ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অলিম্পিকে পদক জয়ের প্রত্যাশা...

প্রকাশিত: ১১:৪৯, ৪ জুলাই ২০১৯

 অলিম্পিকে পদক জয়ের প্রত্যাশা...

রুমেল খান ॥ নিজস্ব কোন ভেন্যু নেই। অনুশীলন করার ও খেলার জায়গা নেই। আর্থিক সঙ্গতি নেই। বলতে গেলে কিছুই নেই। শুধু নেই আর নেই। তারপরও এত প্রতিকূলতার মধ্যেও আছে কিছু ঈর্ষণীয় অর্জন-প্রাপ্তি। ব্রিজ খেলার কথা। বাংলাদেশের অন্যতম একটি জনপ্রিয় খেলা। গত ৩০ জুন জর্দানের আম্মানে অনুষ্ঠিত ব্রিজ ফেডারেশন এশিয়া মিডল ইস্ট (বিএফএএমই) জোনাল চ্যাম্পিয়নশিপে) শিরোপা জেতে বাংলাদেশ জাতীয় ব্রিজ দল। ফাইনালে তারা সর্বাধিক ১২ বারের শিরোপাধারী ভারতকে হারায়। এই আসরের শিরোপা জিতে আগামী অক্টোবরে চীনে অনুষ্ঠেয় ব্রিজ বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ। এ নিয়ে ব্রিজ বিশ্বকাপে দ্বিতীয়বারের মতো খেলতে যাচ্ছে তারা। এর আগে ২০১৭ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল লাল-সবুজবাহিনী। যে ব্রিজ খেলা দিয়ে দেশের জন্য এত বড় একটি অর্জন, অথচ এই খেলাটি নিয়ে দেশের অনেকেরই ভুল বা বাজে ধারণা আছে। সেটি হচ্ছে, ‘তাসে নাশ, তাসে সর্বনাশ!’ ব্রিজ খেলা মানেই জুয়া খেলা বা মন্দ খেলা! অথচ তারা জানেন না, এটা গায়ের জোরের খেলা না, এটা বুদ্ধিবৃত্তির খেলা। বাংলাদেশে সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রতিষ্ঠিত এই প্রবাদটির কারণেই বাংলাদেশে ব্রিজ খেলাটির উন্নতির পথে প্রধান অন্তরায়। ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশেই ব্রিজ খেলাকে এডুকেশন আইটেম হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটা হচ্ছে মাইন্ড গেমগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠতম খেলা। এশিয়ান গেমস এবং অলিম্পিকে ব্রিজ খেলা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পেলে বাংলাদেশ আগামীতে এশিয়ান গেমস এবং অলিম্পিক গেমস থেকে পদক অর্জন করতে পারবে। বুধবার বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের অডিটরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানান বাংলাদেশ ব্রিজ ফেডারেশনের সভাপতি মুশফিকুর রহমান মোহন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত ক্রীড়া সংগঠক ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা মোজাফফর হোসেন পল্টু, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (ক্রীড়া) ওমর ফারুক। সংবাদ সম্মেলনে মোহন তার তিনটি দাবির কথা জানান পল্টু, মাসুদ ও ফারুককে। সেগুলো হলো : ব্রিজ বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়া বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেয়া, যাতে প্রধানমন্ত্রীর সান্নিধ্যে এসে খেলোয়াড় আগামীতে আরও ভাল খেলার অনুপ্রেরণা লাভ করে; বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা খেলোয়াড়দের শীঘ্রই রাষ্ট্রীয়ভাবে সংবর্ধনা-মর্যাদা ও পুরস্কার দেয়া এবং ফেডারেশনের নিজস্ব খেলোয়াড়দের নিবিড় অনুশীলনের জন্য কমপক্ষে ছয় হাজার স্কয়ার ফিটের একটি ভেন্যু প্রদান। অবশ্য কয়েক বছর আগেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের টাওয়ারে অনেক বছর ধরেই ফাঁকা এবং অব্যবহৃত পড়ে থাকা ১০ ও ১৬ তলায় দুটি রুম অস্থায়ীভিত্তিতে চেয়ে ক্রীড়া পরিষদের কাছে আবেদন করেছিল ব্রিজ ফেডারেশন। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সেই প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে আছে। ওমর ফারুক আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, ‘পূর্বাচলে ৩৭ একর জায়গার ওপর একটি ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মিত হবে। এর রুমগুলো বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারশনকে বরাদ্দ দেয়া হবে। আশাকরি ব্রিজ ফেডারেশনও তাদের প্রত্যাশামতো রুম বরাদ্দ পাবে। তবে এ জন্য একটু ধৈর্য ধরতে হবে।’ মাসুদ করিমের কণ্ঠেও ছিল অভিন্ন সুর, ‘এনএসসি চেষ্টা করবে ব্রিজ ফেডারেশনকে যথাসম্ভব সাহায্য-সহযোগিতা প্রদান করতে।’ এখন দেখার বিষয়, দুই সচিবের আশ্বাস কতটা বাস্তবে রূপ নেয় আগামীতে।
×