ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বরিশালে তিন নদীর ভাঙ্গনে দিশাহারা বাবুগঞ্জবাসী

প্রকাশিত: ০৯:০১, ৪ জুলাই ২০১৯

 বরিশালে তিন নদীর  ভাঙ্গনে দিশাহারা  বাবুগঞ্জবাসী

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার মধ্যদিয়ে বহমান রাক্ষুসী সন্ধা, সুগন্ধ্যা ও আড়িয়াল খাঁ নদের ভয়াবহ ভাঙ্গনে ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে নদী তীরবর্তী শত শত ঘরবাড়ি, আবাদি জমি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এতে নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে শত শত পরিবার। নদী ভাঙ্গনে প্রতিনিয়তই বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছেন ভাঙ্গন কবলিত পরিবারের সদস্যরা। গত ছয় মাসে নদীতে বিলীন হওয়ায় বাবুগঞ্জের মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে সৈয়দ মোশারফ-রশিদা একাডেমি, আবুল কালাম কলেজ সংযোগ সড়কসহ বেশ কিছু স্থাপনা, বসতবাড়ি, আবাদি জমি, দোকান ঘরসহ কয়েক একর ফসলি জমি ও ফলদ বৃক্ষ। এছাড়া ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর (দোয়ারিকা) সেতু, মহিষাদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, আবুল কালাম ডিগ্রী কলেজ, জামেনা খাতুন মাধ্যামিক বিদ্যালয়, পূর্ব ক্ষুদ্রকাঠি গ্রাম, চরসাধুকাঠি মাদ্রাসা, ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর স্মৃতি জাদুঘর, শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বাবুগঞ্জ বাজার, মীররগঞ্জ ফেরিঘাট ও বাজারসহ বেশকিছু সরকারী-বেসরকারী স্থাপনা। অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে চলতি মৌসুমের প্রথমদিকে উপজেলার কয়েকটি বসতঘরসহ আবাদি জমি গ্রাস করে নিয়েছে রাক্ষুসী সুগন্ধা নদী। ইতোমধ্যে এসব ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামিম এমপি, বরিশাল-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ গোলাম কিবরিয়া টিপুসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধতন কর্মকর্তারা। ভাঙ্গন প্রতিরোধে এরই মধ্যে জিওব্যাগ ফেলানোর কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু ভাঙ্গনের অবস্থা এখন এতটাই তীব্র আকার ধারণ করেছে যে, প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। স্থানীয়দের দাবি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে অচিরেই ভাঙ্গন কবলিত এলকায় প্রতিরোধে কাজ শুরু না করলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে বাবুগঞ্জ উপজেলার নদী তীরবর্তী অসংখ্য গ্রাম। গাইবান্ধা নিজস্ব সংবাদদাতা গাইবান্ধা থেকে জানান, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। হরিপুর ইউনিয়নে রাস্তাঘাটসহ শতাধিক বসতবাড়ি এবং প্রায় ৩ শ’ হেক্টর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। নদী ভাঙ্গনে হরিপুর ইউনিয়নের মাদারিপাড়া ও পাড়াসাধুয়া গ্রামের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এদিকে উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে তিস্তা নদীর পানি সামান্য বাড়তে শুরু করেছে। এতে নদী ভাঙ্গনের তীব্রতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর, চ-িপুর, কাপাসিয়া ও শ্রীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চ-িপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীতে পলি জমে মূলনদী এসব এলাকায় একাধিক শাখা নদীতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে তিস্তার চরাঞ্চলে বেগুন, মরিচ, পটল, কড়লা, শসা, ঢেড়স, তোষাপাটসহ নানাবিধ ফসল উৎপাদিত হচ্ছে। নদী ভাঙ্গনে এ সমস্ত ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় ফসল ঘরে তুলতে না পেরে কৃষকরা চরম বিপাকে পড়েছে। হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাফিউল ইসলাম জিমি জানান, তার ইউনিয়নের ৮টি ওয়ার্ড পানিবন্দী হয়ে পড়েছে এবং দুটি গ্রামে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, এখনও পানিবন্দী পরিবারগুলো চরেই বসবাস করছে। পানি বেড়ে গেলে তাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোলেমান আলী জানান, পানি আবারও বাড়ছে। চরবাসীকে বন্যা পূর্ববর্তী প্রস্তুত থাকার পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
×