ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড বড় ম্যাচ আজ

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ৩ জুলাই ২০১৯

বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড বড় ম্যাচ আজ

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড হাইভোল্টেজ ম্যাচ আজ। দু’দলের জন্যই লীগপর্বের শেষ ম্যাচ এটি। ৮ খেলায় ৫ জয় ২ হার ও ১ পরিত্যক্ত মিলিয়ে ১১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে কিউইরা। অন্যদিকে সমান জয়ের বিপরীতে ৩ হারে ১০ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে আয়োজক ইংলিশরা। সুতরাং কোনরকম সমীকরণে না গিয়ে সেমির পথ তৈরি করে রাখতে আজকের ম্যাচে জয় চাই দু’দলেরই। ঘরের মাটিতে ১২তম বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিট ইংল্যান্ড। কিন্তু টুর্নামেন্টে ইয়ন মরগানদের সময়টা যাচ্ছে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মতো হিসেবের বাইরে থাকা দুটি দলের কাছে পরাজয়ই মূলত তাদের ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়। নিউজিল্যান্ড দুটি ম্যাচ হারে যথাক্রমে আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার কাছে। গতবারের (২০১৫) রানার্সআপ কিউইরা অবশ্য খুব যে দাপটের সঙ্গে খেলছে তা নয়, বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে অনেকটা হারতে হারতে বেঁচে গেছে কেন উইলিয়ামসনের দল। চেস্টার লি স্ট্রিটে খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে তিনটায়। উদ্বোধনী ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়িয়ে দিয়ে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ শুরু করেছিল ফেবারিটের মতোই। ৮ উইকেটে ৩১১ রান করার পর প্রোটিয়াদের ২০৭ রানে গুটিয়ে দিয়ে মরাগনরা তুলে নিয়েছিল ১০৪ রানের বড় জয়। কিন্তু নটিংহ্যামে ‘হাইস্কোরিং’ ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ১৪ রানে হেরে বসে স্বাগতিকরা। ৩৪৮/৮-এর জবাবে ৩৩৪/৯ রানে থামে ইংলিশদের সংগ্রহ। কার্ডিফে পরের ম্যাচেই অবশ্য বাংলাদেশকে ১০৬ রানে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। ৬ উইকেটে ৩৮৬ রানের পাহাড়গড়া ইংলিশরা প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেয় ২৮০ রানে। এরপর ১৫০ রানের জয়ের পথে দুর্বল আফগানিস্তানকেও উড়িয়ে দিয়ে দারুণভাবে সেমির রেসে ফেরে মরগানবাহিনী। কিন্তু শ্রীলঙ্কার কাছে তাদের পরাজয়ে কেবল ইংল্যান্ড সমর্থকই নয়, গোটা ক্রিকেটবিশ্বই বিস্মিত হয়েছিল। মাত্র ২৩২ রান চেজ করতে গিয়ে লঙ্কানদের কাছে ২০ রানের হার, দলটির জন্য হজম করা ছিল কঠিন। অলআউট ২১২ রানে। যারা কিনা আগের ম্যাচেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে করেছিল রেকর্ড ৩৯৭ রান। ওই ম্যাচের পর ব্যাটিং নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন কোচ ট্রেভর বেইলিস। অথচ দলটিতে আছেন জনি বেয়ারস্টো, জেসন রয়, জো রুট, ইয়ন মরগান, জস বাটলার, বেন স্টোকসের মতো তুখোড় সব উইলোবাজ। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৬৪ রানের বড় হারে ফের পিছিয়ে পড়া ইংলিশরা অবশ্য পরের ম্যাচেই আরেক বড় ম্যাচে শক্তিশালী ভারতকে ৩১ রানে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ায়। পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে উঠে আসে টেবিলের চতুর্থ স্থানে। ৭ উইকেটে ৩৩৭ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ার পর বিরাট কোহলিদের ৩০৬/৫-এ থামিয়ে রাখে ইংলিশরা। ইংল্যান্ড তাদের বিশ্বকাপ যাত্রায় ‘পেস বল দিয়ে শত্রুদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়’ নীতিতে চলছে। তার যথার্থ ফলাফলও পাচ্ছে তারা। সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারির সেরা পাঁচজনের তালিকায় রয়েছে তাদের দু’জন পেস বোলার। নিয়মিত ১৪০ কিংবা ১৪৫-এর গতি দিয়ে ব্যাটসম্যান পরাস্ত করছেন দুই ইংলিশ পেসম্যান মার্ক উড ও জোফরা আর্চার। দারুণ ফর্মে আছেন অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। অন্যদিকে গত বিশ্বকাপের (২০১৫) ফাইনালে উঠেও প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারতে হয়েছিল কিউইদের। আধুনিক ক্রিকেটে সবসময়ই সমীহ জাগানিয়া দলটি আগের ১১ বিশ্বকাপে ছয়বারই সেমিফাইনালে খেলেছে। ব্যাটিং বোলিং ফিল্ডিং সব মিলিয়ে দারুণ ভারসাম্যপূর্ণ। ওপেনিংয়ে মার্টিন গাপটিল, কলিন মুনরো। টপঅর্ডারে অধিনায়ক উইলিয়ামসনের সঙ্গী ইনফর্ম রস টেইলর। উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান টম লাথামও প্রয়োজনে কম যান না। অলরাউন্ডার হিসেবে জিমি নিশাম, কলিন ডি গ্রান্ডহোম বেশ কার্যকর। স্পিনে মিচেল স্যান্টনার, ইশ সোধি। আর যেটির কথা আলাদা করে বলতে হয় সেটি নিউজিল্যান্ডের পেস আক্রমণ। ট্রেন্ট বোল্ট, ম্যাট হেনরি, লোকি ফার্গুসনের পাশাপাশি চতুর্থ ও পঞ্চম পেসার হিসেবে আছেন নিশাম আর গ্রান্ডহোম। তবে বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের জন্য দুশ্চিন্তার বিষয় ব্যাটিং। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ও অভিজ্ঞ রস টেইলর ব্যর্থ হলেই যেন সব এলোমেলো হয়ে পড়ছে। পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যাওয়া দুটি ম্যাচেই সেটি দেখা গেছে। আর জয় পাওয়া দুটি ম্যাচে ব্যাট হাতে বলতে গেলে একাই জিতিয়েছিলেন অধিনায়ক উইলিয়ামসন। সুতরাং বড় ম্যাচে আজ ওপেনিংয়ে মার্টিন গাপটিল, কলিন মুনরোকে ভাল করতে হবে। টপঅর্ডারে অধিনায়ক উইলিয়ামসনকে সঙ্গ দিতে এগিয়ে আসতে হবে অভিজ্ঞ রস টেইলকে। ইনফর্ম অলরাউন্ডার হিসেবে জিমি নিশাম, কলিন ডি গ্রান্ডহোমকেও সময়মতো জ্বলে উঠতে হবে। স্পিনে মিচেল স্যান্টনার আছেন। আর যেটির কথা আলাদা করে বলতে হয় সেটি নিউজিল্যান্ডের পেস আক্রমণ। ট্রেন্ট বোল্ট, ম্যাট হেনরি, লোকি ফার্গুসনের পাশাপাশি চতুর্থ ও পঞ্চম পেসার হিসেবে আছেন নিশাম আর গ্রান্ডহোম। ১০ উইকেটের বড় জয়ের পথে শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে মিশন শুরু করেছিল নিউজিল্যান্ড। এরপর একে একে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তারা হারিয়েছে যথাক্রমে ২, ৭, ৪ উইকেট ও ৫ রানে। আজ জিতলে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে সেমির রেসে অনেকদূর এগিয়ে থাকবে কিউইরা। কিন্তু হেরে গেলে ১১ পয়েন্ট নিয়ে চারে নেমে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে ৯ পয়েন্ট নিয়ে তাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলা পাকিস্তান শেষ ম্যাচে বাংলাদেশেকে বড় ব্যবধানে হারালে সমীকরণ বদলে যেতেও পারে। অন্যদিকে আজ জয় পেলে ১২ পয়েন্ট নিয়ে সেমির দৌড়ে বেশ শক্ত অবস্থানে থাকবে আয়োজক ইংলিশরা। ১৯৭৩ থেকে এ পর্যন্ত মুখোমুখি ৮৯ ওয়ানডের ৪৩টিতে জিতে এগিয়ে নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ডের জয় ৪০। টাই ২। পরিত্যক্ত ৪। বিশ্বকাপের পরিসংখ্যানেও এগিয়ে কিউইরা। এ পর্যন্ত ৮ দেখায় ৫ জয় তাদের। ইংল্যান্ডের জয় ৩টি। ওয়েলিংটনে গতবার (২০১৫) ইংলিশদের মাত্র ১২৩ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড।
×