ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হংকংয়ে ব্যাপক সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ০৮:৪৮, ২ জুলাই ২০১৯

হংকংয়ে ব্যাপক সংঘর্ষ

হংকংয়ে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। হংকংকে ব্রিটেন থেকে চীনের কাছে হস্তান্তরের ২২তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সোমবারের এ সংঘর্ষে ব্যাপক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। বার্ষিক পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে সমবেত লোকজনের ওপর পিপার স্প্রে এবং তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছোট একটি দল সরকারী ভবনে ভাংচুর চালায়। এর আগে বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিলের প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে হংকংয়ের জনগণ। তারা ধারাবাহিকভাবে কয়েক দিন বিক্ষোভ করে বিলটির বিরুদ্ধে। ওই বিল পাস হলে হংকংয়ের কোন অভিযুক্তকে মুল ভূখ- চীনের কাছে প্রত্যর্পণ করার সুযোগ সৃষ্টি হতো। বিক্ষোভের ফলে হংকংয়ের সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য এটি স্থগিত করতে সম্মত হয়েছে। তারপরও বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে এবং হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লামকে পদত্যাগের আহ্বান জানানো হয়েছে। ব্রিটেন থেকে চীনের কাছে হস্তান্তর উপলক্ষে প্রতিবছরই নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গণতন্ত্রপন্থীরা। এবারও নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে পুলিশ আয়োজকদের অনুষ্ঠান বাতিল বা সংক্ষিপ্ত করার আহ্বান জানায়।ব্যাপক সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি সত্ত্বেও হস্তান্তরের বার্ষিকী পালন উপলক্ষে হংকং কনভেনশন ও এক্সিবিশন সেন্টারের ভেতরে পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান করা হয়। কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমবার সকাল থেকেই অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশের সড়ক আটকে দিতে থাকে অনুষ্ঠান আয়োজনের সমর্থকরা। তারা ধাতব বিভিন্ন জিনিস ও প্লাস্টিকের প্রতিবন্ধক দিয়ে সড়ক অবরোধ করে। কনভেনশন ও এক্সিবিশন সেন্টারের বাইরে শিল্ড ও লাঠি হাতে প্রতিরক্ষা ব্যুহ তৈরি করে পুলিশ। অনুষ্ঠান শুরুর আগে সেখানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে প্রায় ৩০ মিনিট সংঘর্ষ হয় পুলিশের। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পিপার স্প্রে (মরিচের গুঁড়া ছিটানো) ব্যবহার করে পুলিশ। বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, সংঘর্ষে এক মহিলা আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের সময় আঘাতের ফলে তাঁর মাথা থেকে রক্ত বের হতে দেখা গেছে। এক বিবৃতিতে বিক্ষোভকারীদের অবৈধ কর্মকা-ের নিন্দা জানিয়েছে পুলিশ। বিবৃতিতে তারা জানায়, পাশের একটি ভবনের সাইট থেকে লোহার পোল ও গার্ড রেল নিয়ে আসে বিক্ষোভকারী। ওই বাহিনী পরে আরও জানায়, শুক্রবার সকালে বিক্ষোভকারী তাদের ওপর ‘অজ্ঞাত তরল পদার্থ’ ছুড়ে মারলে ১৩ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন এবং তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর ফলে কারও কারও শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা। স্থানীয় মধ্যাহ্নভোজের সময় বিক্ষোভকারীদের বিচ্ছিন্ন একটি দল আইন পরিষদ ভবনের দিকে অগ্রসর হয়। তারা ভবনটির গ্লাসের দরজা ভাঙ্গতে একটি ট্রলি দিয়ে তাতে আঘাত করতে থাকে। এ সময় পাশে থাকা অন্যরা তাদের উৎসাহ দিতে থাকে। এক সময় বিক্ষোভকারী গ্লাসের দরজাটি ভাঙ্গতে সক্ষম হলেও ভেতরে ঢুকতে পারেনি। এ সময় দাঙ্গা পুলিশকে দরজার ভেতরে অবস্থান করতে দেখা যায়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কিছু আইনপ্রণেতাও তাদের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা বন্ধে শক্তি প্রয়োগ না করার আহ্বান জানান। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সব ধরনের সহিংস কর্মকান্ড বন্ধের আহ্বান জানান। আর আইনপরিষদের আশপাশের সড়ক এড়িয়ে চলার জন্য সাধারণ মানুষের প্রতি অনুরোধ করেন তারা। সোমবার সকালে পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম বলেন, জনগণের কথা শুনতে তিনি আরও বেশ কিছু সময় সেখানে অবস্থান করবেন। -বিবিসি ও গার্ডিয়ান
×