ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সেমিতে চিলি-পেরু, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা লড়াই

প্রকাশিত: ১১:৩৪, ১ জুলাই ২০১৯

সেমিতে চিলি-পেরু, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা লড়াই

জাহিদুল আলম জয় ॥ গ্রুপপর্বে ব্রাজিলের কাছে ৫-০ গোলে হেরেছিল পেরু। শুধু তাই নয়, কোনরকমে গ্রুপে তৃতীয় সেরা দলের একটা হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লেখায়। সেই দলটিই কিনা কোপা আমেরিকার ইতিহাসের সর্বোচ্চ ১৫ বারের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েকে বিদায় করে দিয়ে সেমিফাইনালে নাম লিখিয়েছে। শনিবার রাতে ব্রাজিলের সালভাদরে শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হয় পেরু ও উরুগুয়ে। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে খেলা গোলশূন্য অমীসাংসিত থাকে। এরপর ভাগ্যনির্ধারণী টাইব্রেকারে উরুগুয়েকে ৫-৪ গোলে হারিয়ে সেমির টিকেট পেয়েছে পেরু। টাইব্রেকারে উরুগুয়ের প্রথম শটে গোল করতে ব্যর্থ হন দলটির সেরা তারকা লুইস সুয়ারেজ। শেষ পর্যন্ত এটিই কাল হয়ে দাঁড়ায়। কেননা পেরু তাদের পাঁচটি শটেই গোল করে। এ কারণে উরুগুয়ে বাকি চার শটে গোল করেও লাভ হয়নি। ২০১১ সালে সর্বশেষ কোপা আমেরিকার শিরোপা জেতা উরুগুয়ে এ নিয়ে টানা তিন আসরে সেমিফাইনালে উঠতে পারল না। ২০১৫ সালে চিলির কাছে হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে গিয়েছিল তারা। ২০১৬ সালে বিদায় নিয়েছিল গ্রুপপর্ব থেকে। এর মধ্য দিয়ে সেমিফাইনালের লাইনআপ চূড়ান্ত হয়ে গেছে। ফাইনালের টিকেট পাওয়ার মিশনে প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। ম্যাচটি হবে আগামী বুধবার সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে। বৃহস্পতিবার একই সময়ে দ্বিতীয় সেমিতে লড়বে সর্বশেষ দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন চিলি ও পেরু। পেরুর বিরুদ্ধে বল দখল সমান সমান থাকলেও সুযোগ বেশি সৃষ্টি করে উরুগুয়ে। ৬টি শটের মধ্যে গোলমুখে ছিল ৩টি। পেরু তো সবমিলিয়ে শটই নিতে পারে ৩টি। তার মধ্যে একটি শটও গোলমুখে ছিল না। ম্যাচের ৪১ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার ভাল সুযোগ পায় অস্কার তাবারেজের দল। লুইস সুয়ারেজের বক্সের মধ্য থেকে নেয়া বাঁ পায়ের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপরও আরও কয়েকটি সুযোগ আসলেও কাজে লাগাতে পারেনি উরুগুয়ে। পেরু যে দুয়েকটি সুযোগ পায় সেগুলো গোল হওয়ার মতো ছিল না। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য ড্র নিয়ে নির্ধারিত সময় শেষ করে দুই দল। অতিরিক্ত সময়েও একই ফলাফল থাকার পর ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে কাঁদতে হয়েছে উরুগুয়েকে। আর দারুণ সাফল্যে উচ্ছ্বাস করেছে পেরু। ম্যাচ শেষে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন টাইব্রেকারে গোল করতে ব্যর্থ হওয়া সুয়ারেজ। হতাশ সতীর্থের পাশে দাঁড়ান সতীর্থরা। উরুগুয়ে কোচও দলকে বলেছেন ব্যর্থতা মেনে নিতে। টাইব্রেকারে সুয়ারেজের নেয়া প্রথম শট ফিরিয়ে দেন পেরুর গোলরক্ষক পেড্রো গালেসে। এর আগে উরুগুয়ের সর্বোচ্চ গোলদাতা জাল খুঁজে পেলেও অফসাইডের কারণে গোল হয়নি। ভেঙ্গে পড়া সুয়ারেজের পাশে দাঁড়ানো এডিনসন কাভানি মেনে নিচ্ছেন কঠিন বাস্তবতা। তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে গোল করতে না পারায় সুয়ারেজ ভীষণ হতাশ। কিন্তু এটাই ফুটবল এবং জীবন। কখনও আপনি জিতবেন, কখনও হারবেন। আমরা এর আগে কোপা আমেরিকা জিতেছি। কিন্তু এবার ছিটকে যাওয়াটা আমাদের মেনে নিতে হবে। সুযোগগুলো নষ্ট হওয়ায় হতাশ উরুগুয়ে ডিফেন্ডার দিয়াগো গডিন। তিনি বলেন, আমরা শুধু একটা গোল মিস করলাম। আমরা গোলের সন্ধানে ছিলাম কিন্তু এটা এলো না। যদি আমরা গোল করতে পারতাম, তাহলে ভিন্ন একটি ম্যাচ হতো। আমরা ভাল খেললাম কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ছিটকে গেলাম। আমরা গোল করতে পারিনি। পেরু আমাদের চেয়ে ভালভাবে পেনাল্টি শটগুলো নিয়েছে। হতাশ উরুগুয়ে কোচ অস্কার তাবারেজ বলেন, এটা ভীষণ একটা হতাশার বিষয়। কেননা আমরা শিরোপা জিততে এখানে এসেছিলাম। এদিকে সেমিফাইনালে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে মহারণ সামনে রেখে কথা বলেছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। তিনি জানিয়েছেন, মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে কেউ ফেবারিট নয়। বেলো হরিজন্টেতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ম্যাচকে সামনে রেখে মেসি বলেন, এটা বলা কঠিন এই ম্যাচে কে ফেবারিট। কোপা আমেরিকার মতো টুর্নামেন্টে বিষয়টি আরও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এখানে যে কোন দলই প্রতিপক্ষকে হারানোর যোগ্যতা রাখে। আমরা সবসময়ই তাদের শ্রদ্ধা করি, আমরা জানি ব্রাজিল কেমন দল। পাঁচবারের ফিফা সেরা তারকা আরও বলেন, ব্রাজিলের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে আমরা বেশ ভাল ফর্মে আছি। কিন্তু আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। কোপা আমেরিকায় এখন পর্যন্ত আমি সেরাটা দিতে পারিনি। তবে ভেনিজুয়েলার বিপক্ষে দলের পারফর্মেন্সে আমি খুশি। বিশেষ করে রক্ষণভাগে আমাদের কোন সমস্যা নেই।
×