ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সিদ্ধিরগঞ্জে ধর্ষক দুই শিক্ষকের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশিত: ০৯:৫৮, ১ জুলাই ২০১৯

 সিদ্ধিরগঞ্জে ধর্ষক দুই শিক্ষকের  ফাঁসির দাবিতে  মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি কান্দাপাড়া এলাকার অক্সফোর্ড হাই স্কুলের ২০ এর অধিক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত শিক্ষক আশরাফুল আরিফ ও প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকারের ফাঁসি দাবিতে মানববন্ধন করেছে ১৪টি স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও এলাকাবাসী। রবিবার বেলা ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মৌচাক বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ মানববন্ধন পালন করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা দুই শিক্ষকের ফাঁসির দাবি করে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকে। এছাড়াও মানববন্ধনে অক্সফোর্ড হাই স্কুলটি বন্ধে করে দেয়ারও দাবি জানানো হয়। এ সময় মানববন্ধনে ১৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও এলাকাবাসীরা অংশগ্রহণ করে। মানববন্ধনটি এ সময় মৌচাক বাসস্ট্যান্ড থেকে সানারপাড় বাসস্ট্যান্ডসহ মহাসড়কের পৌনে এক কিলোমিটার রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষকদের ফাঁসির দাবিতে আয়োজিত এ মানববন্ধনে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীদের সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদরাও অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে অংশ নেন সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পাশ্চমপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, মিজমিজি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সানারপাড় আনন্দলোক উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী আব্দুস সামাদ সিনিয়র মাদ্রাসা, এন আলম মেরিট কেয়ার স্কুল, গ্রিন বাংলা মডেল হাইস্কুল, মৌচাক আইডিয়াল স্কুল, প্রত্যাশা মডেল স্কুল, কান্দাপাড়া পাবলিক স্কুল, হলিচাইল্ড কিন্ডারগার্টেন স্কুল, নলেজ আইডিয়াল স্কুল, ক্যামব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও আনন্দলোক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ১৪ স্কুল। এ সময় মিজমিজি কান্দাপাড়া, সানারপাড়, পশ্চিমপাড়া, আব্দুল আলী পুল ও মৌচাক এলাকাবাসীও মানববন্ধনে যোগ দেয়। এ সময় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ ইকবাল হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক ভূইয়া রাজু, মিজমিজি পশ্চিম পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান, এন আলম মেরিট কেয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল আলম, আনন্দলোক উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুর রহিম মেম্বার ও প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান ও সমাজ সেবক হাকিম শাহ প্রমুখ। মানববন্ধনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা র‌্যাবের কর্মকর্তারা এসে ঘটনার সতত্যা খুঁজে পেয়েছেন এবং তাদের গ্রেফতারও করে নিয়ে গেছেন। ওই শিক্ষক র‌্যাবের কাছে স্বীকারোক্তিও দিয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি অক্সফোর্ড হাইস্কুলটি বন্ধ করে দেয়ার। যেহেতু আমরা সরকারী দলের লোক। সরকার সব ঘটনা ব্যবস্থা নিয়েছে এবং নিচ্ছে। যদি তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়া হয় তবে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, এটি একটি ন্যক্কারজনক ঘৃণিত কাজ। এ স্কুলটি আজ থেকে বন্ধ করে দিতে হবে। এ এলাকায় অক্সফোর্ড নামে আর কোন স্কুল থাকবে না। সহকারী শিক্ষক আশরাফুল আরিফ ও প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকার আলী ঘৃণিত কাজটি করেছেন। তাদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। এ স্কুলটি যারা চালু করার পাঁয়তারা করবে আমরা এলাকাবাসী ও এলাকার প্রতিটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে স্কুলটি জ্বালিয়ে দিবো। বক্তারা অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান উল্লেখ্য, অক্সফোর্ড হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক আশরাফুল আরিফ আপত্তিকর ছবি তুলে ২০-এর অধিক ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইলিং করে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ কাজে সহায়তা করেন একই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকার। এ অভিযোগে এলাকাবাসী ওই শিক্ষককে আটক করে গণধোলাই দেয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে র‌্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিনের নেতৃত্বে র‌্যাব ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে সহকারী শিক্ষক আশরাফুল আরিফ ও প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে আইসিটি এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। শিক্ষক আশরাফুল আরিফের দুটি মামলায় তিনদিন করে ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। এছাড়াও আশরাফুল আরিফকে মদদ দেয়ার অভিযোগ গ্রেফতারকৃত একই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকারের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এর আগে শনিবার দুপুরে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাদের আদালতে প্রেরণ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ।
×