ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

উদয় শংকর ও বুলবুল চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি

প্রকাশিত: ১০:৪৪, ৩০ জুন ২০১৯

 উদয় শংকর ও বুলবুল চৌধুরীর প্রতি  শ্রদ্ধাঞ্জলি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নাচই ছিল তাদের জীবনের প্রধানতম আরাধনা। তাদের অনবদ্য নাচের পরিবেশনা মুগ্ধ নয়নে উপভোগ করতেন দর্শকরা। আলোচনার সঙ্গে নাচের মুদ্রায় সেই দুই কিংবদন্তি দুই নৃত্যশিল্পীকে জানানো হলো শ্রদ্ধাঞ্জলি। জন্মগতভাবে তাদের একজন ভারতীয় উপমহাদেশের ও অপরজন বাংলাদেশের। সেই দুই শিল্পী হলেন উদয় শংকর ও বুলবুল চৌধুরী। শনিবার সন্ধ্যায় এক মঞ্চে দুজনের প্রতি অর্পিত হলো ভালবাসা। শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ শিরোনামে আয়োজনে স্মরণ করা হলো পথিকৃৎ দুই শিল্পীকে। একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে উদয় শংকরকে নিয়ে কথা বলেন নৃত্যগুরু আমানুল হক ও নৃত্য গবেষক সোমা মমতাজ এবং বুলবুল চৌধুরীকে নিয়ে কথা বলেন নৃত্যশিল্পী ড. নিগার চৌধুরী ও ভারতীয় নৃত্যশিল্পী মেহবুব হাসান। সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। উদয় শংকরের মূল্যায়নে আমানুল হক বলেন, ভারতীয় উপমহাদেশের নৃত্যে নতুন ধারার প্রবর্তন করেছিলেন তিনি। তারা বাবার ইচ্ছায় লন্ডনে চিত্রকলা নিয়ে পড়াশোনা করতে গেলে, বিশ্ব নৃত্যধারা সম্পর্কে তিনি ধারণা পান। ক্যানভাসে রং-তুলির আঁচড়ের মাধ্যমে তিনি নৃত্যের নতুন নতুন সব ধারার প্রবর্তন করেন। শাস্ত্রীয় ও লোক নৃত্যধারাকে ভেঙ্গে নিজের মতো করে নৃত্যধারা তৈরি করেছিলেন। সেটিই আজ সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশের নৃত্যশিল্পীরা অনুসরণ করছেন। তার মাধ্যমে ভারতীয় উপমহাদেশের নৃত্যধারা বিশ্বব্যাপী পরিচিত লাভ করেছে। বুলবুল চৌধুরীকে মূল্যায়ন করে নিগার চৌধুরী বলেন, তিনি বাংলাদেশের নৃত্যজগতের পথিকৃৎ। বাঙালী মুসলমানদের নৃত্য শিখিয়েছেন বুলবুল চৌধুরী। তিনি ছিলেন স্বশিক্ষিত নৃত্যশিল্পী। তিনি প্রকৃতির কাছ থেকে নৃত্যের তালিম নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন একজন চিত্রশিল্পীও। বিশ্বের বিভিন্ন বড় জাদুঘরে গিয়ে ছবি এঁকে তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নতুন নতুন নৃত্যধারা তৈরি করেছিলেন। নানা বিরূপ পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েও তিনি নৃত্যের সঙ্গে আপোস করেননি। তিনি মানুষের জন্য নৃত্য করেছেন। নৃত্যে মানুষের কথা বলেছেন, প্রতিবাদ করেছিলেন তাদের ওপরের অত্যাচারের। আলোচনা পর্ব শেষে ছিল উভয় শিল্পীকে নিবেদিত নৃত্যানুষ্ঠান। এ পর্বে শুরুতেই উদয় শংকর সৃষ্ট সুরের সঙ্গে ওয়ার্দা রিহাবের পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করেন ধৃতি নর্ত্তনালয়ের শিল্পীরা। এর পর ফারহানা চৌধুরী বেবীর পরিচালনায় বুলবুল চৌধুরীর ‘তরবারি নৃত্য’ পরিবেশন করেন বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টসের শিল্পীরা। ‘রাঙামাটির পথে লো মাদল বাজে’ গানের সঙ্গে সোহেল রহমানের পরিচালনায় উদয় শংকরের নৃত্য পরিবেশন করে বুলবুল ললিতকলা একাডেমির শিল্পীরা। এর পর ধৃতি নর্ত্তনালয়ের শিল্পীরা ‘হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বী’ গানের সঙ্গে উদয় শংকরের, বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টসের শিল্পীরা উদয় শংকরের সুরের সঙ্গে এবং বুলবুল ললিতকলা একাডেমির শিল্পীরা ‘ছন্দে আনন্দে’ গানের সঙ্গে বুলবুল চৌধুরীর নৃত্য পরিবেশন করেন।
×