ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা

জলাবদ্ধতা ॥ ভোগান্তিতে সৈয়দপুর পৌরবাসী

প্রকাশিত: ০৭:৪৭, ৩০ জুন ২০১৯

 জলাবদ্ধতা ॥ ভোগান্তিতে সৈয়দপুর পৌরবাসী

সংবাদদাতা, সৈয়দপুর, নীলফামারী, ২৯ জুন ॥ সৈয়দপুর শহরে অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পরিচ্ছন্নতার অভাবে সামান্য বৃষ্টিতেই ড্রেনের পানি উপচে ঘরে প্রবেশ করছে। দুর্গন্ধময় পানির জলাবদ্ধতায় শহরবাসীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এতে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়লেও দেখার যেন কেহ নেই। সূত্র মতে, ২০১৫ সাল থেকে স্থানীয় সরকারের অধীনে মিউনিসিপাল গবর্নেন্স সার্ভিসেস প্রজেক্টের আওতায় ও বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় সৈয়দপুর পৌর এলাকার প্রায় ৩ হাজার ৪শ’ কিলোমিটার নতুন ড্রেন নির্মাণ ও সংস্কার করা হচ্ছে। তবে অপরিকল্পিতভাবে এসব ড্রেন নির্মাণ করা ও পরিষ্কারের অভাবে প্রায় সব ড্রেনে পলিথিন ও ময়লা জমে ভরাট হয়ে গেছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে আধা ঘণ্টার বৃষ্টিপাত হলেই প্রতিটি মহল্লার সড়ক উপচে ঘরে ঢুকছে ময়লা পানি। দেখা যায়, পৌর এলাকার আউট লেট ড্রেনগুলোর একটি শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক হয়ে মুন্সিপাড়া মহল্লা ঘেঁষে নিয়মতপুর হয়ে মিশেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পচা নালায়। কয়েকটি মহল্লার ড্রেন ক্যান্টনমেন্ট বিগবন্ড ড্রেনে সংযোগ করা হয়েছে। আবার অনেক মহল্লার ছোট ড্রেন বড় ড্রেনের সঙ্গে সংযোগ দেননি পৌরসভার স্যানেটারি বিভাগ। এতে পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থার হযবরল অবস্থার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছে পৌরবাসী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পৌরসভার এক কর্মকর্তা জানান, ১৯৯৭ সালের দিকে আউট লেট মাস্টার ড্রেনগুলো তৈরি করা হয়। এরপর সেগুলো তদারকির অভাবে আবর্জনায় ভরে গেলে শহরের স্থায়ী জলাবদ্ধতার রূপ নেয়। দীর্ঘ এক যুগ পর গতবছর অর্ধশতকোটি টাকা বরাদ্দ পেয়ে নামমাত্র সংস্কার করা হলেও জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছে না। এছাড়া ড্রেনগুলো অপরিকল্পিত বলেই দ্রুত পানি নিষ্কাশনে বাঁধাগ্রস্ত হয়ে ড্রেনের নোংরা পানি উপচে প্রবাহিত হচ্ছে মহল্লায়। শহরের মুন্সিপাড়ায় জোড়াপুকুর ভরাট করে সেখানে ঈদগাহ নির্মাণ করেন সাবেক এমপি আলহাজ শওকত চৌধুরী। পাশাপাশি নতুনবাবু পাড়ার সিঙ্গি পুকুর, বাশবাড়ি, মিস্ত্রিপাড়া এলাকার প্রায় ১০টি রেলওয়ে পুকুর ভরাট করে বাড়ি নির্মাণ করায় এ সমস্যা আরও প্রকট হচ্ছে বর্ষা মৌসুমে। এতে দিন-দিন দুর্ভোগ যেন বাড়ছে। মুন্সিপাড়া এলাকাবাসী জানান, ওই এলাকায় পরিকল্পিত ড্রেন নির্মাণ না হলেও নোংরা পানি পড়ত জোড়া পুকুরে। সেখানে এখন ঈদগাহ। তাই সামান্য বৃষ্টিতে দুর্গন্ধযুক্ত পানি ঢুকে পড়ছে মানুষের ঘরে-ঘরে। একই অভিযোগ করেন, শহরের বাঙ্গালীপুর নিজপাড়া, মিস্ত্রীপাড়া, হাতিখানা, বাঁশবাড়ীসহ শহরের শহীদ ডাঃ জিকরুল হক সড়ককস্থবাসীগণ। এতে সড়কে চলাচলে নামাজি ও শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। পাশাপাশি চর্মরোগসহ ডায়রিয়া, আমাশয়, টাইফয়েড, প্যারাটাইফয়েড ও অন্যান্য পানিবাহিত রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা সৃৃষ্টি হয়েছে। তাদের দাবি সারাদেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। এখানেও উন্নয়ন হচ্ছে সরকারের ঋণের টাকায়। তবে এর সুফল ভোগের পরিবর্তে শহরবাসীকে জলাবদ্ধতায় স্বাস্থ্যগত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাই দ্রুত এ সমস্যার সমাধান দাবি করেন এলাকাবাসী।
×