ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর ও সীতাকুন্ডে পানি সরবরাহে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

প্রকাশিত: ১০:৪৪, ২৯ জুন ২০১৯

 বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর ও সীতাকুন্ডে পানি সরবরাহে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর এবং সীতাকুন্ড শিল্পাঞ্চলে চাহিদা অনুযায়ী বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে গ্রহণ করা হচ্ছে কয়েক হাজার কোটি টাকা সমন্বিত প্রকল্প। শুক্রবার সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ পরিকল্পনার কথা জানান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে এ সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, মন্ত্রণালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশ ইকনোমিক জোন অথরিটির (বেজা) সদস্য মোঃ হারুনুর রশিদ, ওয়াসার এমডি ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম ফজলুল্লাহ। চট্টগ্রাম চেম্বারের দীর্ঘদিনের দাবির গুরুত্ব বিবেচনায় এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, অর্থনৈতিকভাবে সেই পাকিস্তান আমল থেকে চট্টগ্রাম গুরুত্বপূর্ণ। যে কোন অঞ্চলের উন্নয়নই সারাদেশের জিডিপিতে ভূমিকা রাখে। জাতীয় অর্থনীতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের ভূমিকা অপরিসীম। তাই বৃহত্তর চট্টগ্রামের উন্নয়নে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং আরও প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ন্যূনতম ৫০ বছরের চাহিদার নিরিখে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে উল্লেখ করে তিনি এক্ষেত্রে দলমত নির্বিশেষে দায়বদ্ধ হয়ে চট্টগ্রামবাসীকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী উন্নত দেশ হওয়ার জন্য মাথাপিছু আয় ১২ হাজার ৫০০ ডলারে উন্নীত করা, ঢাকা-চট্টগ্রাম বুলেট ট্রেন ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণের মাধ্যমে যাতায়াতের সময় এক থেকে দেড় ঘণ্টায় নামিয়ে আনা, ব্লু ইকোনমির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং সর্বক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদানের আহ্বান জানান। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ২৪টি সেবা সংস্থা রয়েছে। তবে যথাযথ ক্ষমতায়ন এবং এসব সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে উন্নয়ন কর্মকান্ড যথাযথভাবে পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি পরিকল্পনা গ্রহণের পূর্বেই সমন্বয়করণ এবং আঞ্চলিক দফতরসমূহকে যথাযথভাবে ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, সীতাকুন্ড শিল্পাঞ্চলে প্রধানত ইস্পাত, সিমেন্ট, এলপিজি ও গার্মেন্টসসহ প্রায় ৪০০ শিল্পে হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ, লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব জাতীয় কোষাগারে জমা হয়। কিন্তু ওই এলাকায় ভূ-গর্ভস্থ পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আয়রণ থাকা এবং পানির স্তর অনেক গভীরে নেমে যাওয়ার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় এসব শিল্প কারখানা অস্তিত্ব সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। নতুন করে কোন শিল্প স্থাপন সম্ভব হচ্ছে না। এ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে চিটাগাং চেম্বার কয়েক বছর ধরে সরকারী বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে নিয়মিতভাবে দাবি জানিয়ে আসছে। তিনি মীরসরাই শিল্পাঞ্চল পর্যন্ত প্রয়োজনীয় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে প্রকল্প গ্রহণ করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের দাবি জানান। পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর উন্নয়ন, মহানগরের জলাবদ্ধতা নিরসন, কর্ণফুলী নদীর ড্রেজিং, চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়ক ৮ লেনে উন্নীতকরণ এবং এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ, তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু স্থাপন এবং কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণে দ্রুত ও কার্যকর অগ্রগতি দাবি করেন চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম।
×