ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে রাজধানীর ১৩ খাল

প্রকাশিত: ১০:০৮, ২৯ জুন ২০১৯

 আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে রাজধানীর ১৩ খাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংস্কারের জন্য ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে রাজধানীর ১৩টি খাল। ঢাকা ওয়াসা বলছে, জলাবদ্ধতা রোধে শুধু বর্ষাকালে একবার খাল পরিষ্কারের জন্য দেয়া হয়েছিল এই বরাদ্দ। বছরের অন্য সময়ে খাল পরিষ্কারের দায় ওয়াসার নয়। এ অবস্থায় ঢাকার খাল রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগ নিতে পরামর্শ দিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। ঢাকা ওয়াসার সাইনবোর্ড না দেখলে যে কেউ এ খালটিকে আবর্জনার ভাগাড় বলেই মনে করবেন। যদিও ৪০ কোটি টাকায় রাজধানীর যে ১৩টি খাল পরিষ্কার করার কথা তারা এখনও এটি করেনি। স্থানীয়রা বলছেন, গত বর্ষার আগে খালটি একবার পরিষ্কার করা হয়েছিল। এর পর আর পরিষ্কার না করায় ময়লা-আবর্জনা জমে তার ওপর গাছ ও ঘাস বেড়ে উঠেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, একই কারণে অন্যখালগুলোরও কমবেশি এমন বেহাল দশা। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করায় দুর্গন্ধ ও মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ তাদের জীবন। ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ নিলেও খাল পরিষ্কারের দায় ওয়াসার নয় বলে দাবি করছেন সংস্থাটির এমডি। ঢাকার অন্য ৭ টি সংস্থার ঘাড়ে দায় চাপিয়েছেন তিনি। ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেন, এটা পরিষ্কার কে করবে তার ঠিক নেই। এগুলোর জন্য সরকারের কাছে ৬০ কোটি টাকা চেয়েছিলাম, কিন্ত সরকার ৪০ কোটি টাকা দিয়েছে। এখন কাজ করে তো লাভ নেই। আবারও ময়লা হয়ে যাবে। আমাদের যে উদ্দেশ্য তা হলো বৃষ্টির পানি যেন বেরিয়ে যেতে পারে। সেই ব্যবস্থা করতে হবে। পরিবেশবাদীরা বলছেন, জবাবদিহিতা না থাকায় অকার্যকর সংস্থায় পরিণত হয়েছে ওয়াসা। বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ঢাকা ওয়াসাকে ননফাংশনাল বললে কম হয়ে যাবে। তাদের কোন রকম জবাবদিহিতা নেই। তবে খালগুলোকে বাঁচাতে হলে ওয়াসাসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে একসঙ্গে বসতে হবে। কাগজে কলমে ২৬টি খাল থাকলেও ঢাকায় ১৩টি খালের অস্তিত্ব আছে বলে জানিয়েছে ওয়াসা। খিলগাঁও-বাসাব খালটিতে কয়েক স্তরে ময়লা জমা পড়েছে। খালটি প্রায় মৃত খালে পরিণত হয়েছে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকা সিটির খালগুলোকে বাঁচানো গেলেই ঢাকাকে বাঁচানো যাবে। তাই প্রতিনিয়ত যেভাবে ময়লা পড়ছে ঠিক সেভাবে প্রতিনিয়ত পরিষ্কার করতে হবে ঢাকা ওয়াসাকে। সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হলেও সব ধরনের সেবা থেকে বঞ্চিত ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। ভাঙ্গা রাস্তা, ওয়াসার পানিতে দুর্গন্ধ, মশার উপদ্রব, মাদকসহ সমস্যার শেষ নেই ওয়ার্ডটিতে। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়নে থাকায় অবহেলিত ওয়ার্ডটির সমস্যা দূর করতে একটু সময় লাগবে। উত্তরবাড্ডা, মধ্যবাড্ডা, মেরুলবাড্ডা, আফতাবনগর, আদর্শনগর হয়ে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত সীমানা নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৭ নং ওয়ার্ড গঠিত। দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়নের অধীনে থাকায় ওয়ার্ডটিতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। বৈঠাখালি এলাকায় এখনও দেখা মেলে কাঁচা রাস্তা ও বাঁশের সাঁকো। বেশিরভাগ বাড়িঘর জলাশয় ভরাট করে গড়ে ওঠায় মশার উপদ্রবও বেশি।
×