ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এলএনজি আমদানিতে সব কর ও ভ্যাট প্রত্যাহারের অনুরোধ

প্রকাশিত: ১০:৩৯, ২৮ জুন ২০১৯

 এলএনজি আমদানিতে সব কর ও ভ্যাট প্রত্যাহারের অনুরোধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে সব ধরনের কর এবং ভ্যাট প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে এ বিষয়ে অনুরোধ জানিয়ে একটি চিঠি লিখেছেন। ওই চিঠিতে এলএনজির উপর বিভিন্ন পর্যায়ে আদায় করা ১৭ ভাগ কর প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে সহনীয় দামে পৌঁছে দেয়ার জন্য সাশ্রয়ী বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের ওপর কম করারোপের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। চিঠিতে প্রতিমন্ত্রী জানান, এলইডি বাতি, ভিআরএফ প্রযুক্তিসহ ইনভার্টারযুক্ত এসি, ইনভার্টারযুক্ত ফ্রিজ এর ওপর তুলনামূলক কম হারে ভ্যাট, ট্যাক্স ও আমদানি শুল্ক নির্ধারণ করা যেতে পারে। এছাড়া ভবন নির্মাণে জ্বালানি সাশ্রয়ী ইনসুলেটিং ম্যাটেরিয়াল, লো ইউভি গ্লাসের ওপর শুল্ক কমানো হলে জনগণ এসব পণ্য ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ হবে এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। জ্বালানি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে এলএনজির প্রতি ঘনমিটারের ক্রয়মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৩৯ টাকা। প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের বিক্রয়মূল্য সাত টাকা ১৭ পয়সা। অর্থাৎ প্রতিঘন মিটার এলএনজির আমদানির বিপরীতে ঘাটতি ৩১ টাকা ৮৩ পয়সা। দেশের উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারকে দুই অঙ্কে উন্নীত করার লক্ষ্যে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ করা জরুরী। চিঠিতে আয়কর শূন্য করার বিষয়ে বলা হয়, এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানির বিপরীতে দুই ভাগ হারে করের ৯৪১ দশমিক ৭০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। পেট্রোবাংলা একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এলএনজি আমদানি পর্যায়ে উৎসে কর্তৃক আয়কর সমন্বয়ের সুযোগ না থাকায় পেট্রোবাংলাকে তারল্য সঙ্কটের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ফলে এলএনজি আমদানি ব্যয় মেটানোর ক্ষেত্রে উৎসে কর পরিশোধ করলে সমপরিমাণ অর্থ ঘাটতি দেখা দেবে। যাতে তারল্য সঙ্কটে পড়বে পেট্রোবাংলা। এর আগে পেট্রোবাংলা থেকে জ্বালানি বিভাগে এ সংক্রান্ত একটি পত্র প্রেরণ করা হয়। সেখানে প্রতিষ্ঠানটি বলছে এলএনজি আমদানিতে বিপুল পরিমাণ ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। এর উপর ১৭ ভাগ কর দিতে গেলে বাড়তি চাপে পড়বে প্রতিষ্ঠানটি। প্রসঙ্গত, এবারের বাজেটে এলএনজি আমদানি মূল্যের ওপর ১৫ ভাগ ভ্যাট আরোপসহ দুই ভাগ আয়কর বসানোর প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তার এই প্রস্তাবে এলএনজি আমদানিতে খরচ বাড়ার পাশাপাশি অর্থ সঙ্কট তৈরির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জ্বালানি বিভাগ। এছাড়া চিঠিতে গ্যাস উৎপাদনে ব্যবহৃত আমদানি করা মালামালের ওপর প্রস্তাবিত অতিরিক্ত অগ্রিম কর ৫ ভাগ রহিত করে শূন্য করার প্রস্তাব করা হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়, এতে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হতে পারে। অন্যদিকে প্রাকৃতিক গ্যাস, গ্যাসীয় অবস্থায় পণ্যে সম্পূরক শুল্ক ১০০ ভাগ করার প্রস্তার রহিত করারও অনুরোধ জানানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয় এলএনজি যখন পাইপ লাইনে যাবে তা প্রাকৃতিক গ্যাস হিসেবেই যাবে-সঙ্গত কারণে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে। তাই প্রাকৃতিক গ্যাসে সম্পূর্ক শুল্ক ১০০ ভাগ করার প্রস্তাব রহিত করা প্রয়োজন।
×