ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এরশাদের অবস্থার উন্নতি হলেও শঙ্কামুক্ত নন ॥ জিএম কাদের

প্রকাশিত: ১০:৩৭, ২৮ জুন ২০১৯

 এরশাদের অবস্থার উন্নতি হলেও শঙ্কামুক্ত  নন ॥ জিএম কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও এখনও তিনি শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বলেছেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বর্তমান শারীরিক অবস্থা বুধবারের চেয়ে ২৫ শতাংশ উন্নতি হয়েছে। বুধবার রাত পর্যন্ত ১০ শতাংশ উন্নতি হয়েছিল শারীরিক অবস্থার। তিনি বলেন, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন এরশাদ এখনও শঙ্কামুক্ত নন। তার সংক্রমণ যেন না বেড়ে যায় সেজন্য চিকিৎসকরা নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরশাদের পুরোপুরি সুস্থ হতে একটু সময় লাগবে বলেও জানান কাদের। তিনি বলেন, প্রয়োজন হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিল এজিবি কলোনি কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে জাতীয় পার্টি খুলনা ও বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চার দিনব্যাপী দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সভার শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার। শেষ দিনে নির্ধারিত বিভাগের মহানগর, জেলা, উপজেলা ও পৌর কমিটির নেতারা অংশ নেন। তারা নিজ নিজ এলাকার সঙ্কট তুলে ধরার পাশাপাশি জাপায় দলীয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান। সূচনা বক্তব্যে সাবেক মন্ত্রী জিএম কাদের বলেন, এরশাদের অবর্তমানে জাতীয় পার্টি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশনা এবং গঠনতন্ত্র মোতাবেক চলবে। তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, জাতীয় পার্টি একটি সম্ভাবনাময় দল। আগামীতে উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে জাতীয় পার্টির। তাই জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের হতাশ হলে চলবেনা। দলকে আরও শক্তিশালী করতে নেতা-কর্মীদের আহ্বানও জানান তিনি। জাতীয় পার্টিসহ তিনটি বড় রাজনৈতিক দল নিজস্ব প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে একথা উল্লেখ করে কাদের বলেন, এরমধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সম্ভাবনাময় দল জাতীয় পার্টি। আমরা যেদিকে যাই ক্ষমতাও সেদিকেই যায়। তাই জাতীয় পার্টিকে দুর্বল করতেই পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নামে একাধিক মামলা দেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, আমরা যদি দলকে শক্তিশালী করতে পারি, গণমানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী কর্মসূচী দিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে জাতীয় পার্টি আগামীতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারবে। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেন, জাতীয় পার্টিতে আর মনোনয়ন বাণিজ্য চলবে না, কমিটি পেতে লবিং করতে হবেনা। প্রতিটি কমিটি কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচিত করা হবে। ভাড়া করা লোক দিয়ে কোন কাউন্সিল হবে না, বন্ধ করা হবে পদোন্নতি বাণিজ্য। জাতীয় পার্টিকে একটি সুশৃঙ্খল দলে পরিণত করা হবে, কোন বিশৃঙ্খলা বরদাশত করা হবেনা। খুলনা ও বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সভায় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, মহাজোটে জাতীয় পার্টির ৫৭ আসনে নির্বাচন করার কথা ছিল। কিন্তু আমাদের নেতৃত্ব পরিবর্তন ও কোন্দলের সুযোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। তাই সংসদে জাতীয় পার্টির মাত্র ২২টি আসন। বলেন ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ ২১ বছর পরে ক্ষমতার স্বাদ পেয়ে, জাতীয় পার্টির ক্ষতি করেছে। বিভিন্ন এলাকায় জাপার নেতা-কর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মামলা হামলা করেছে। এখন থেকে আর ছাড় দেয়া হবেনা, যেখানেই আওয়ামী লীগ কর্মীরা হামলা করবে সেখানেই প্রতিরোধ করা হবে। গণতান্ত্রিক এবং আইনগতভাবে প্রতিটি হামলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে এমন হুঁশিয়ার দিয়ে রাঙ্গা বলেন, দল আরও শক্তিশালী করে সরকারী দলের হামলার সমুচিত জবাব দেয়ার বিকল্প নেই। আলোচনায় অংশ নেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, গোলাম কিবরিয়া টিপু, সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, মিজানুর রহমান, কাজী মামুনুর রশিদ, জহিরুল আলম রুবেল, অধ্যাপক মহসিন-উল ইসলাম হাবুল, এসএম রহমান পারভেজ, ইকবাল হোসেন তাপস, শফিকুল ইসলাম মধু, সোমনাথ দে, জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক প্রমুখ।
×