স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ সিদ্ধিরগঞ্জের মিজিমিজি এলাকায় আরিফুল ইসলাম নামে হাইস্কুলের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে আপত্তিকর ছবি তুলে অসংখ্য ছাত্রীকে (কমপক্ষে ২০ শিক্ষার্থীকে) ব্লাকমেইলিং করে পালাক্রমে ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগে এলাকাবাসী ওই শিক্ষককে আটক করে গণধোলাই দিয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মিজমিজি কান্দাপাড়া অক্সফোর্ড হাইস্কুলে অভিযান চালিয়ে সহকারী শিক্ষক আরিফুল ইসলাম এবং তাকে মদদ দেয়ার অভিযোগে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামকেও আটক করেছে র্যাব-১১ সদস্যরা। দুইদিন আগে অক্সফোর্ড হাইস্কুলের নবম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেয় শিক্ষক আরিফুল ইসলাম। বিষয়টি ওই শিক্ষার্থী তার বাবা-মা ও এলাকার গণমান্য ব্যক্তিদের জানায়। পরে স্থানীয় লোকজন ওই শিক্ষককে ধরে তার মোবাইল ফোন সার্চ করে একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও দেখতে পায়। পরে ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবাবক র্যাব-১১ কে বিষয়টি জানায়। পরে র্যাব এসে শিক্ষক আরিফুল ইসলাম ও প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে আটক করে নিয়ে যায়। এদিকে সকাল থেকে ওই স্কুলে ঘিরে রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেছেন এলাকাবাসী ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, আরিফুল ইসলাম শিক্ষক নামের কলঙ্ক। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন ধরনের কর্মকান্ড করতে সাহস না পায়। র্যাব জানায়, শিক্ষক আরিফুল ইসলাম ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত অক্সফোর্ড স্কুলের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী এবং স্কুলের বাইরের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ফাঁদে ফেলে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে আমরা প্রমাণ পেয়েছি। পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী থেকে শুরু দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী পর্যন্ত তার যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছেন। আটককৃত শিক্ষক আরিফুল ইসলামের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপসহ বিভিন্ন ডিভাইস জব্দ করে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রীকে ধর্ষণ ও আপত্তিকর ছবি পাওয়া গেছে। তাকে মদদ দেয়ার অভিযোগে প্রধান শিক্ষককেও আটক করা হয়েছে। তিনি বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি ও সাইবার অপরাধে মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া কোন ভুক্তভোগী চাইলে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করতে পারবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, র্যাব যে অভিযোগে মামলা দিবে তা রেকর্ড করা হবে।
মিজিমিজ এলাকার বাসিন্দা ও অক্সফোর্ড স্কুলের এক শিক্ষার্থীর মা জানান, আমাদের ছেলে মেয়ের স্কুলে পাঠাই নিরাপদ মনে করে। কিন্তু স্কুলের শিক্ষকের কাছে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ না থাকে তারচেয়ে দুশ্চিন্তার আর কিছু নেই। তিনি বলেন, আমি ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
