ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইতিহাসের হাতছানি স্টাকর্কের সামনে

প্রকাশিত: ০৯:১৩, ২৮ জুন ২০১৯

 ইতিহাসের হাতছানি স্টাকর্কের সামনে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত বিশ্বকাপটি ছিল তার ক্যারিয়ারের প্রথম। ২৯ বছর বয়সী মিচেল স্টার্কের অবশ্য ওয়ানডে ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ২০১০ সালেই। কিন্তু ইনজুরির কারণে ২০১১ বিশ্বকাপ খেলতে পারেননি বাঁহাতি এ গতি তারকা। তবে ২০১৫ বিশ্বকাপে মাত্র ৮ ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েই ২২ উইকেট নিয়ে নিজের ভয়ঙ্কর রূপটা বর্ণনা করেছিলেন, হয়েছিলেন যৌথভাবে নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্টের সঙ্গে সেরা। চার বছর পেরিয়ে আরেক বিশ্বকাপ মঞ্চেও যেন অগ্নিগোলক ছুটিয়ে এগিয়ে চলেছেন উল্কাবেগে! ইতোমধ্যেই ৭ ম্যাচে ১৯ উইকেট শিকার করে অস্ট্রেলিয়ার এ ফাস্ট বোলার সবার ওপরে। এর আগে ১১টি বিশ্বকাপ আসরের ইতিহাসে টানা দুইবার সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হতে পারেননি কেউ। কিন্তু সেই ইতিহাস এবার হাতছানি দিচ্ছে স্টার্ককে। ইতোমধ্যেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। যার কারণে অসিদের এখনও ৩টি ম্যাচ খেলার সুযোগ রয়েছে। ফাইনালে উঠতে পারলে সেই সংখ্যা হবে ৪। বিশ্বকাপের এক আসরে আজ পর্যন্ত সর্বাধিক ২৬ উইকেট শিকারের কীর্তি রয়েছে। স্টার্কের স্বদেশী সাবেক পেসার গ্লেন ম্যাকগ্রা ২০০৭ বিশ্বকাপে ম্যাচ খেলে নিয়েছিলেন ২৬ উইকেট। এখন সেই রেকর্ড টালমাটাল প্রায়। যদিও ৭ উইকেট পেছনে আছেন এখনও স্টার্ক। কিন্তু যেভাবে এগিয়ে চলেছেন তাতে করে ম্যাকগ্রার রেকর্ডটা পেছনে পড়ে যেতে পারে। সর্বশেষ ম্যাচেও শক্তিশালী ও স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি ৪৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেছিলেন। ফলে পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমির ও ইংল্যান্ডের জোফরা আর্চারের সঙ্গে যে শীর্ষস্থান দখলের লড়াই চলছিল এতদিন সেটি শেষ হয়ে গেছে। এককভাবে এখন ১৯ উইকেট নিয়ে শীর্ষে স্টার্ক। পরের ৩ ম্যাচে আর মাত্র ৪টি উইকেট নিতে পারলেই ছাড়িয়ে যাবেন নিজের সেরা বিশ্বকাপ নৈপুণ্যকে। গত বিশ্বকাপে ৮ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়েছিলেন। তবে এককভাবে সেরা হতে পারেননি। বোলিং গড়ে তারচেয়ে পিছিয়ে থাকলেও কিউই পেসার বোল্টও সমান ২২ উইকেট ঝুলিতে পুরেছিলেন। তাই একাকী সেরা হতে পারেননি। এবার যেন সেই আকাক্সক্ষা পূরণে দুর্বার হয়ে উঠেছেন। প্রতি ম্যাচেই নিজের আগুন ঝরিয়ে চলেছেন স্টার্ক। এবার কি ইতিহাস বদলাতে পারবেন অসি ফাস্ট বোলার স্টার্ক? সেজন্য আমির-আর্চার, বোল্ট ও লোকি ফার্গুসনদের পেছনে রাখতে হবে এবং আবার বিশ্বকাপের সেরা উইকেটধারী হতে হবে। সেটি খুব কঠিন নয় স্টার্কের জন্য। আর যদি ৩ ম্যাচ থেকে ৮ উইকেট নিতে পারেন তবে বিশ্বকাপ ইতিহাসে আরেকটি বড় রেকর্ড গড়বেন। ম্যাকগ্রার এক আসরে তুলে নেয়া ২৬ উইকেটকে পেছনে ফেলবেন। দুর্দান্ত নৈপুণ্যটা ধরে রাখতে পারলে সেটিও সম্ভব হয়ে যেতে পারে। ধারাবাহিক এমন গতিময় ত্রাস বজায় রাখার পেছনে কি রহস্য এ বাঁহাতির? সে বিষয়টি নিয়ে বলেছেন স্টার্ক নিজেই। তিনি বলেন, ‘ইংল্যান্ড ম্যাচের আগে তখনও আমি আধো ঘুমে ছিলাম। স্যুট পরা এক লোক আমার হাতে টেপ জড়ানো নিয়ে কথা বলছিল এবং আমার বোলিং নিয়ে খোঁচা দিচ্ছিল। আমি তখন ক্ষুধার্ত ছিলাম। সে আমার টেপ প্যাঁচানো নিয়ে হাসাহাসি করছিল। আমি কি খাচ্ছি তা নিয়ে খোঁচাচ্ছিল। আমি সম্ভবত পোচ করা ডিম খাচ্ছিলাম। টুর্নামেন্টজুড়েই তো এই ব্যাপারটি নিয়ে খুব মজা হচ্ছে। এই দশকের খোঁচাখুঁচি এখন বিশ্বকাপের অংশ হয়ে গেছে।’ আর এতেই রেগে টং হয়ে ছিলেন স্টার্ক। তাই ইংলিশদের বিপক্ষে ওভাবে জ্বলে উঠেছিলেন। অর্থাৎ নিশ্চিতভাবেই বলা যাবে রেকর্ডগুলো করে ফেলবেন এ অসি বাঁহাতি তারকা, যদি কেউ তাকে খোঁচায়।
×