ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আরপি সাহা হত্যা মামলার রায় আজ

প্রকাশিত: ১০:৪০, ২৭ জুন ২০১৯

  আরপি সাহা হত্যা মামলার রায় আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুক্তিযুদ্ধের সময় দানবীর রণদা প্রসাদ (আরপি) সাহা ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহাসহ সাতজনকে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত টাঙ্গাইলের মোঃ মাহবুবুর রহমানের মামলার রায় আজ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে। ট্রাইব্যুনাল এ রায়টি ঘোষণার জন্য বুধবার এ দিন নির্ধারণ করেছে। এর আগে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গত ২৪ এপ্রিল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখে। এটি হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ৩৮তম রায় । গত বছর ১২ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন পক্ষ। ১১ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ আমলে নেয়ার পর ২৮ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে তার বিচার শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। ২০১৬ সালের ১৮ এপ্রিল মামলাটির তদন্ত শুরুর পর ট্রাইব্যুনাল থেকে পরোয়ানা জারি হলে ওই বছরের নবেম্বরে মাহবুবকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি এখন গাজীপুরের কাশিমপুরের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। ২০১৭ সালের ২ নবেম্বর এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ আতাউর রহমান। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, মাহবুবুর রহমান একাত্তরের ৭ মে স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর গ্রামে যায়। সেখানে গিয়ে তারা রণদা প্রসাদ সাহা (আরপি সাহা) এবং তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহার খোঁজ করেন। তাদের না পেয়ে তারা ৩৩ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। পরবর্তীতে একই তারিখে রাত ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে আর পি সাহা ও ভবানী প্রসাদ সাহাসহ ৫ জনকে অপহরণ ও হত্যা করে। অন্যদিকে আসামিসহ রাজাকাররা ২৪ জন নিরীহ মানুষকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। তার মধ্যে ২২ জনকে হত্যা করা হয়। ১৯৭১ সালের ৭ মে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাক হানাদার বাহিনী মির্জাপুরের সাধারণ মানুষের ওপর আকস্মিক হামলা চালিয়ে ব্যাপক গণহত্যা চালায় এবং গ্রামবাসীর বাড়িঘর লুটপাট করে। এদিন রাতে আর পি সাহাকে ও নারায়ণগঞ্জের কুমুদিনী কমপ্লেক্স থেকে তার একমাত্র ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা রবিকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর আর তাদের কোন খবর পাওয়া যায়নি। ১৯৭১ সালের ৭ মে ছিল শুক্রবার। মির্জাপুরে সাপ্তাহিক হাটবার। এদিন জুমার নামাজের পর স্থানীয় দালাল মওলানা ওয়াদুদের নির্দেশে ও তার দুই ছেলে মান্নান ও মাহবুবের নেতৃত্বে কিছু ধর্মান্ধ ব্যক্তি মির্জাপুর বাজারে ব্যাপক লুটপাট চালায়। একই সঙ্গে পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে মির্জাপুরের সাহাপাড়ায় হামলা চালিয়ে নিরপরাধ গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে হত্যা করে পাশের বংশাই নদীতে ভাসিয়ে দেয়। আসামি মাহবুবুর রহমানকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এটিএম আজহার ॥ একাত্তরের মু্িক্তযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আলবদর কমান্ডার জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের করা আপীলের যুক্তিতর্ক শুরু আগামী ১ জুলাই। পেপার বুক পড়া শেষে যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য এদিন ধার্য করেছে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। প্রধান বিচারপতির সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যবিশিষ্ট আপীল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন। আদালতে এটিএম আজহারের পক্ষে পেপারবুক পড়েন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন। তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী শিশির মুহম্মদ মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত এ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ মমতাজ উদ্দিন ফকির, ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার ও মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ। গত ১৮ জুন পেপারবুক পড়ার মধ্য দিয়ে এটিএম আজহারের আপীলের শুনানি শুরু হয়। ৬ কার্যদিবসে পেপারবুক পড়া শেষ করেন তার আইনজীবী। প্রসিকিউশনের ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য এবং আসামি পক্ষের একজন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা পড়া হয়েছে। এর আগে গত ১০ এপ্রিল আপীল বিভাগ এটিএম আজহার আপিল শুনানির জন্য ১৮ জুন দিন ধার্য করেছিলেন। রংপুরের আলবদর বাহিনীর কমান্ডার আজহারকে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেয়। একই সঙ্গে ৩০ বছরের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি খালাস চেয়ে আপীল করেন আজহার।
×