ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘হেলেন কেলার’-এ অভিনয় জীবনকে সার্থক করেছে

প্রকাশিত: ০৯:১৪, ২৭ জুন ২০১৯

 ‘হেলেন কেলার’-এ অভিনয় জীবনকে সার্থক করেছে

প্রশ্ন : ‘হেলেন কেলার’ নাটকের ২৫তম প্রদর্শনীতে আপনার অনুভূতি কেমন? জুয়েনা : ২৫তম প্রদর্শনী বা রজতজয়ন্তী মঞ্চায়ন একটি প্রযোজনার জন্য একটি মাইলফলক। ফলে একক-অভিনেত্রী হিসেবে আমার উচ্ছ্বাসটা সত্যিই অনেক বেশি! আর বিশেষ এ প্রদর্শনীটি মহীয়সী নারী ‘বিশ্বের বিস্ময়’ হেলেন কেলারের ১৩৮তম জন্মবার্ষিকী অর্থাৎ ‘হেলেন কেলার ডে’-তে করতে পারছি বলে ভাললাগাটা প্রায় সীমাহীন। আজ সশ্রদ্ধায় স্মরণ করি আমার নাট্যসংগঠন স্বপ্নদলের প্রতিটি কর্মী, নির্দেশক জাহিদ রিপন, নাট্যকার অপূর্ব কুমার কুন্ডু শুভাকাক্সক্ষী, সাংবাদিক বন্ধু এবং সর্বোপরি দর্শকবন্ধুদের, যাদের অনুপ্রেরণায় আজ ২৫টি প্রদর্শনী করা সম্ভব হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, ‘হেলেন কেলার’-এ অভিনয় করতে পারা নিঃসন্দেহে আমার জীবনেকে সত্যিই সার্থক করেছে! প্রশ্ন : ‘হেলেন কেলার’-এর রজতজয়ন্তী প্রদর্শনী উপলক্ষে কি কোন বিশেষ আয়োজন থাকছে? জুয়েনা : আজ সন্ধ্যা সাতটায় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটারে ২৫তম প্রদর্শনীর পূর্বে ‘মহীয়সী হেলেন কেলার এবং ‘হেলেন কেলার’ মঞ্চায়নের প্রাসঙ্গিকতা’ বিষয়ে স্মারক বক্তব্য রাখবেন বিশ^সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে এ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অয়োজনে অতিথি হিসেবে থাকবেন নাট্যজন দেবপ্রসাদ দেবনাথ, নাট্যজন কামাল বায়েজীদ, নাট্যজন নূনা আফরোজ প্রমুখ। এছাড়া ‘হেলেন কেলার’ প্রযোজনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সম্মাননা জাননোসহ প্রদর্শনী শেষে থাকবে মুক্ত-আলোচনা। প্রশ্ন : ‘হেলেন কেলার’-কে কীভাবে ধারণ করলেন? জুয়েনা : হেলেন কেলার ছিলেন অন্ধ-বধির এবং মূক। এমন একটি চরিত্র ধারণ করা যে-কোন অভিনয়শিল্পীর জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের। এর জন্য প্রয়োজন শারীরিক-মানসিক-অত্মিক প্রস্তুতি। আমি সে প্রক্রিয়াই নিজেকে নির্মাণ করেতে চেয়েছি। আবার হেলেন কেলারের সঙ্গে সমকালীন বিশে^র যে সকল মনীষীদের যোগাযোগ ছিল, যেমন- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, চাার্লি চ্যাপলিন, আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল, মার্ক টোয়েন, বার্নাড শ, দার্শনিক জেমস জোয়েল প্রমুখ, এরাও এ নাটকের চরিত্র। সুতরাং হেলেন কেলার এবং অন্য চরিত্রগুলো নিজের মধ্যে ধারণ করতে আমাকে প্রচুর পড়ালেখা করতে হয়েছে, ডকুমেন্টারি, ফিল্ম দেখতে হয়েছে। তাদের চিন্তাধারা, কথা বলার ধরন, হাঁটার স্টাইল প্রভৃতি সম্পর্কে একটা কাঠামো কল্পনা করে দাঁড় করাতে হয়েছে। এক্ষেত্রে নির্দেশক আমাকে প্রতি মুহূর্তে সাহায়তা করেছেন। বলা যায়, উদ্বোধনী মঞ্চায়নের পূর্বে প্রায় দেড় বছর আমি ‘হেলেন কেলার’ নিয়ে ঘোরের মধ্যে ছিলাম। আর এখন তো মনে হয় হেলেন কেলার ও আমি একাকার হয়ে গেছি। অনেকে তো আমার আর হেলেন কেলারের চেহারার মধ্যেও অনেক সাদৃশ্য খুঁজে পান! প্রশ্ন : দেশের বাইরে প্রদর্শনী করে কেমন সাড়া পেয়েছেন? জুয়েনা : দেশের বাইরে আমরা ভারতের কলকাতায় প্রাচ্য নিউ আলিপুর আয়োজিত ‘পূবের নাট্যগাথা’ আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবে এবং জাপানের টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসের আমন্ত্রণে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে ‘হেলেন কেলার’-এর প্রদর্শনী করেছি। সেখানেও আমরা বাংলাদেশের মতোই দর্শকের ব্যাপক প্রশংসায় আবির্ভূত হয়েছি। কলকাতার প্রদর্শনী শেষে দর্শকরা ‘চমৎকার’, ‘অসাধারণ’ ইত্যাদি ধ্বনি করে এবং দীর্ঘ সময় টানা হাততালি দিয়ে তাদের মুগ্ধতার প্রকাশ করছিলেন। প্রশ্ন : ‘হেলেন কেলার’ নিয়ে সামনে কী পরিকল্পনা রয়েছে? জুয়েনা : দেশে সব জেলা-উপজেলা এবং বিদেশের সব গুরুত্বপূর্ণ শহরে ‘হেলেন কেলার’-এর প্রদর্শনী করার স্বপ্ন দেখি। সম্প্রতি এর পান্ডুলিপি ইংরেজীতে অনুবাদ সম্পন্ন হয়েছে। ভবিষ্যতে বিদেশে এটি সম্পূর্ণ ইংরেজীতে অভিনয় করতে চাই। স্বপ্ন দেখি একদিন হেলেন কেলারের জন্মস্থান আলবামাতে ‘হেলেন কেলার’ প্রদর্শনী করার।
×