ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

জলবায়ু সংকটে বহু শহর পরিত্যক্ত হবে যুক্তরাজ্যের

প্রকাশিত: ২৩:৩৪, ২৬ জুন ২০১৯

জলবায়ু সংকটে বহু শহর পরিত্যক্ত হবে যুক্তরাজ্যের

অনলাইন ডেস্ক ॥ সম্প্রতি ব্রিটেনের পরিবেশ সংস্থা (Environment Agency) সতর্কতা উচ্চারণ করে জানিয়েছে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে যুক্তরাজ্যের সমুদ্র এবং নদী উপকূলীয় শহরগুলোতে যারা বসবাস করছেন তাদের সকলকে অন্যত্র সরিয়ে আনার প্রয়োজন হতে পারে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে চলার প্রেক্ষাপটে এই সতর্কতা জারি করা হলো। যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি সামাল দিতে যুক্তরাজ্যের প্রস্তুত থাকার কথা উল্লেখ করে সংস্থা বলছে, আগামী কয়েক বছর তথা কয়েক দশকের মধ্যে এই সংকটপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করতে হবে যে বড়কোনো বন্যা মোকাবিলার সক্ষমতা ব্রিটেনের নিশ্চয়ই রয়েছে। তবে এজন্য বহুতল বিশিষ্ট ভবনকে প্রতিরক্ষা হিসাবে বিবেচনা করা যাবে না। বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে বিশ্বাসযোগ্য এই পরিবেশ সংস্থার চেয়ারম্যান মিস এমা হাওয়ার্ড বলেছেন, উপকূলীয় অঞ্চলের পরিবর্তন এবং প্লাবন ঠেকাতে দীর্ঘমেয়াদী কৌশল গ্রহণ করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কিংবা তারচেয়েও বেশি তাপমাত্রা চিন্তা করেই এই কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। তিনি বলেন, প্যারিস সম্মেলনের সময়ে সকল দেশ একত্রে যে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে তাতে এরকমই বলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, উপকূলীয়ও অঞ্চল কখনোই একই জায়গায় থাকে না এবং সর্বদাই প্লাবিত হয়ে থাকে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন দিন দিন বেড়ে চলায় এর হুমকি আরো জোরদার হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের সামনে অসীম উচ্চতার প্লাবনের যে প্রতিবন্ধকতা আসছে তা মাথায় না রেখে আমরা ভবন নির্মাণ করেই পানির বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হতে পারি না। ইংল্যান্ডে খাপখাওয়ানো উপকূলীয় এলাকা এবং বন্যার জন্য সঙ্গতিপূর্ণ মানসম্মত উন্নয়ন প্রয়োজন। তাহলেই উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের সুরক্ষা দেয়া সম্ভব।ঐসব এলাকার লোকজনের ঝুঁকিগুলোকে ভালো করে বুঝতে হবে এবং তাদের কি ধরণের সহায়তা প্রয়োজন তা নিশ্চিত করতে হবে বলে তিনি জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, জলবায়ু সম্পর্কে আমরা পূর্বে যে ধরনের ঝুঁকির কথা ভেবেছিলাম এখন ক্রমেই তারচেয়েও ভয়াবহতার দিকে যাচ্ছে। অতএব এখনই সময়ে যে আমাদের আর দেরি না করেই কৌশল পরিবর্তন করতে হবে এবং এ দুর্যোগ মোকাবেলায় ভিন্ন এক নতুন দর্শনের কথা ভাবতে হবে। সাম্প্রতিক জলবায়ু বিষয়ক কমিটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৮০ সাল নাগাদ ইংল্যান্ডের প্রায় ১৫ লাখের বেশি ঘর-বাড়ি পানির নিচে তলিয়ে যেতে পারে।এই ঝুঁকি খুবই তাৎপর্যপূর্ণভাবে দেখা যাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ইংল্যান্ডের পূর্ব উপকূলীয়ও এলাকায় সমুদ্রপৃষ্ঠ উচ্চতায় এবং নদীর পানি ফুলে উঠায় ২০১৩ সালে মারাত্মক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। এতে ৫৫ হাজারের বেশি ঘর-বাড়ি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছিল।১৯৫৩ সালেও উত্তরাঞ্চলীয় এলাকায় এমনই পরিস্থিতি হয়। এমনকি ২০১৪ সালে বানের পানিতে রেল যোগাযোগে বিগ্ন ঘটে এবং বন্যা ও ঝড়ে ব্রিটেনের অনেক এলাকা মারাত্মক ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছিল। জলবায়ু বিষয়ক কমিটির সুপারিশে বলা হয়, একের পর এক বন্যা আসার পর ওই এলাকা ছেড়ে দিয়ে অন্য এলাকায় গিয়ে শুধু উঁচু উঁচু বিল্ডিং তৈরি করলেই এর সমাধান কখনো সম্ভব নয়। বরং জলবায়ু স্থিতিস্থাপক বা খাপখাওয়ানো কমিউনিটি গড়তে হবে।
×