ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভেনেজুয়েলায় ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লেনদেন!

প্রকাশিত: ২২:৪২, ২৫ জুন ২০১৯

ভেনেজুয়েলায় ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লেনদেন!

অনলাইন ডেস্ক ॥ বিটকয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রথম প্রচলন হয় ২০০৯ সালে। বর্তমানে বিটকয়েন ছাড়াও অনেকগুলো ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রচলিত আছে। গত ১০ বছরে ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছে ক্রিপ্টোকারেন্সি। কিন্তু কিছু মানুষের জন্য এই ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। লাতিন আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলা বর্তমানে মারাত্মক রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। দেশটিতে এখন দু’জন প্রেসিডেন্ট। একজন নিকোলাস মাদুরো, অন্যজন স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট হুয়ান গুয়াইদো। রাজনৈতিক সংকটের কারণে দেশটিতে দেখা দিয়েছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি। ভেনেজুয়েলার মুদ্রার নাম বলিভার। দেশটিতে এখন এক কাপ কফি কিনতে খরচ করতে হয় ২ হাজার ৮০০ বলিভার (২৮ সেন্ট)। মাত্র ১২ মাস আগে এক কাপ কফির দাম ছিল ০.৭৫ বলিভার। ব্লুমবার্গের তথ্য অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় পণ্য, টয়লেট পেপার ও ওষুধের সংকট, একই সঙ্গে অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ভেনেজুয়েলার ৩০ লাখের বেশি নাগরিক দেশ ছেড়ে চলে গেছে। মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় দেশটির অনেকেই বলিভারের বিকল্প হিসেবে বিটকয়েনের মতো ডিজিট্যাল মুদ্রার দিকে ঝুঁকছেন। এমনকি দেশটির সরকারও আর্থিক সংকট সমাধানে ‘পেট্রো’ নামে একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি চালু করেছে। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ ধোঁকা ছাড়া কিছুই নয়। কারণ, কেউ এই ধরনের মুদ্রা ব্যবহার করছে বলে প্রমাণ নেই। ২৮ বছর বয়সি ভেনিজুয়েলার নাগরিক এলি মেরেগোট বর্তমানে কলম্বিয়ায় বসবাস করছেন। দেশে অর্থ পাঠানোর জন্য তিনি বিটকয়েন বা অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করছেন। এতে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মতো মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠানগুলোকে তার বাড়তি ফি দিতে হচ্ছে না। সিসিটিভি টেকনিশিয়ান মেরেগোট বলেন, ভেনিজুয়েলায় ২০১৭ সালে চাকরি হারানোর পর আমি প্রথম ক্রিপ্টো আবিষ্কার করি। ভেনিজুয়েলায় চাকরি করাটাও ছিল অর্থহীন, কেননা মাসে সর্বনিম্ন মজুরি ছিল মাত্র ৪ ডলার। তার মতে, ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারের ফলে কোনও ব্যাংক বা তৃতীয় পক্ষ তার অর্থের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে না। অর্থের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তার হাতে। তিনি বলেন, বিটকয়েন বা অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে তিনি দ্রুত এবং কোনো বাধা ছাড়াই দেশে অর্থ পাঠাতে পারেন। বিটকয়েন হলো প্রচলিত একটি ডিজিটাল মুদ্রা। কোনো দেশের সরকার বা ব্যাংক এতে কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারে না। অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো এর সব লেনদেন ব্লকচেন নামে একটি ডাটাবেজে স্থায়ীভাবে নথিভুক্ত থাকে। বর্তমানে বিশ্বে বিটকয়েনের মতো ১ হাজার ৬০০-র বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি রয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, এসব মুদ্রা অস্থিতিশীল এবং ইন্টারনেটে অবৈধ পণ্য কিনতে এসব মুদ্রা ব্যবহৃত হয়। এছাড়া অর্থ পাচারকারীরাও এসব মুদ্রা ব্যবহার করেন। ভেনেজুয়েলার অধিবাসীরা বিটকয়েন, লাইটকয়েন, ড্যাশ বা অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে ডিজিট্যাল ওয়ালেটে তাদের অর্থ সংরক্ষণ করেন। নিজেদের মুদ্রা সংরক্ষণ করার চেয়ে এটিই তাদের জন্য ভালো। তবে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ক্রিপ্টোর লেনদেন কিছুটা কমেছে।
×