ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

চোখ থাকবে আজ ওয়ার্নার-রুটের ওপর

প্রকাশিত: ১০:২৯, ২৫ জুন ২০১৯

 চোখ থাকবে আজ ওয়ার্নার-রুটের ওপর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপে আজ ‘হাইভোল্টেজ’ ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে দুই পরাশক্তি ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। ইয়ন মরগানের ইংল্যান্ড আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল। ঘরের মাটিতে এবার অন্যতম ফেবারিট তারা। অন্যদিকে ‘ডিফেন্ডিং’ চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াও দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলছে। এ্যারন ফিঞ্চ, জোফরা আর্চার, মিচেল স্টার্ক, স্টিভেন স্মিথ- দু’দলে তারকার ছড়াছড়ি। তবে দু’জনের ওপর বিশেষ দৃষ্টি থাকবে। তারা হলেন ডেভিড ওয়ার্নার ও জো রুট। ৬ ম্যাচে দুটি করে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরির সাহায্যে ৪৯.৪০ গড়ে আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৪৭ রান ওয়ার্নারের। সমান ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরি ও তিন হাফ সেঞ্চুরিতে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪২৪ রান রুটের। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আইপিএলেই নিজের রুদ্রমূর্তির ইঙ্গিত দেয়া ওয়ার্নার বিশ্বকাপেও সেই ছন্দ ধরে রেখেছেন। অন্যদিকে রুট মারকাটারি নয়, তবে ঘরের মাটিতে দারুণ ক্ল্যাসিক্যাল ব্যাটিং করছেন ইংল্যান্ড টেস্ট অধিনায়ক। দলের প্রয়োজেন অবতীর্ণ হচ্ছেন ত্রাতার ভূমিকায়। ওয়ার্নারের কথা আলাদা করে বলতে হবে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪৮ বলে ২৬ রান করে আউট হওয়ার পর যে সমালোচনা হয়েছিল ডেভিড ওয়ার্নার। আর সেই সমালোচনার জবাবটা দিলেন ব্যাট হাতেই। পরের ম্যাচেই দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। টনটনে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন ওয়ার্নার। ১১১ বলে করেছেন ১০৭ রান। ১১ চার ও এক ছক্কায় ইনিংসটি সাজান অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ওয়ার্নার ও এ্যারন ফিঞ্চের ১৪৬ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দারুণ সূচনা পায় অস্ট্রেলিয়া। ১৯৭৫ সালের পর ইংল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার সেরা উদ্বোধনী জুটি এটি। ফিঞ্চ ৮৪ বলে ৮২ করে ফিরলেও ওয়ার্নার সেঞ্চুরির সুযোগ হাতছাড়া করেননি। ভারতের বিপক্ষে হেরে যাওয়া আগের ম্যাচে ওয়ার্নার ফিফটি করতে খেলেছিলেন ৭৭ বল। এদিন পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন ৫১ বলে। পরের পঞ্চাশ করতেও লেগেছে ঠিক ৫১ বল। ১০২ বলে ছুঁয়েছেন তিন অঙ্ক। ওয়ানডেতে এটি ওয়ার্নারের যা ১৫তম সেঞ্চুরি, বিশ্বকাপে দ্বিতীয় আর পাকিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয়। সেঞ্চুরির পর একবার জীবন পেলেও ইনিংসটা আর বেশিদূর নিতে পারেননি তিনি। শাহিন শাহ আফ্রিদির অফ স্টাম্পের বাইরের বলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন ডিপ পয়েন্টে। বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারিতে এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ওয়ার্নার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন বিশ্বকাপ দিয়েই। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলেন অপরাজিত ৮৯ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান পরের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অবশ্য তিন রানের বেশি করতে পারেননি। এরপর ভারতের বিপক্ষে বড় লক্ষ্য তাড়ায় ৫৬ রান করেন ৮৪ বলে। এবার করেন দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের বিপক্ষে সেদিন জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নারের ১৬৬ রান বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাই পালন করে। ওয়ার্নার নিজেও গড়েন বেশ কিছু কীর্তি। তবে শুধু জয় নয়, এই রান ডেভিড ওয়ার্নারকে এনে দিয়েছে ব্যক্তিগত মাইলফলকও। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এখন তিনি দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি ২ ম্যাচে সংগ্রহ করেছেন ১৫০ এর বেশি রান। এছাড়া এ ম্যাচের সেঞ্চুরি তাকে এনে দিয়েছে দ্রুততম সময়ে ওপেনার হিসেবে ১৬তম সেঞ্চুরির স্বাদ। যা এর আগে এ্যাডাম গিলক্রিস্টের দখলে ছিল এবং তা অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে এত প্রাপ্তির হিসেব বাদ দিয়ে শুধু জয়কেই গুরুত্বপূর্ণ বলেছেন সাবেক অসি সহ-অধিনায়ক। তার কাছে অন্য সব প্রাপ্তির থেকে বিশ্বকাপ আসরের পয়েন্ট টেবিলের শক্ত অবস্থানটিই যেন বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ওয়ার্নার বলেন, ‘১৬তম সেঞ্চুরি অবশ্যই আমার জন্য একটি বড় প্রাপ্তি। তবে এর থেকে দলের দুই পয়েন্ট পাওয়া এবং লর্ডসে পরবর্তী ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি নেয়া আমার কাছে আরও গুরুত্বপূর্ণ।’ অন্যদিকে ৬ ম্যাচে ৪ জয় পেলেও পয়েন্ট টেবিলের চতুর্থ স্থানে থাকা ইংল্যান্ড হারে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার কাছে। সেদিন শ্রীলঙ্কার ২৩২ রানের জবাবে ২১২ রানে অলআউট হয়েছিল ইংল্যান্ড! ৫৭ রান করতে ৮৯ বল খেলা রুটকে নিয়ে হয় ব্যাপক সমালোচনা। আসরে ইংলিশদের সেরা ব্যাটসম্যান আজ বড় ম্যাচে নিশ্চয়ই আরও একবার নিজের জাত চেনাতে মরিয়া।
×