ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এমন বিদায়ে হতাশ প্রোটিয়া অধিনায়ক প্লেসিস

প্রকাশিত: ১০:২৭, ২৫ জুন ২০১৯

 এমন বিদায়ে হতাশ প্রোটিয়া অধিনায়ক প্লেসিস

জিএম মোস্তফা ॥ বড় মঞ্চে সবসময়ই নিষ্প্রভ দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার ইংল্যান্ড বিশ্বকাপেও তার ব্যতিক্রম নয়। রবিবার পাকিস্তানের কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকেই যে ছিটকে গেছে প্রোটিয়ারা! লর্ডসে পাকিস্তানের কাছে ৪৯ রানে হেরে আফগানিস্তানের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয় ফাফ ডু প্লেসিসের দল। এবারের আসরের প্রথম সাত ম্যাচ থেকে একটিতে কেবল জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তাও আবার টুর্নামেন্টের সবচেয়ে দুর্বল দল আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এছাড়া আর কোন ম্যাচেই জয় নেই তাদের। এর ফলে পাকিস্তানের কাছে হারের পরই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় প্রোটিয়াদের। এই ম্যাচের পর অধিনায়ক ডু প্লেসিস বলেন, ‘আমরা ভাল ক্রিকেট খেলতে পারিনি। আমরা ভাল বল করতে পারিনি। পুরো টুর্নামেন্টেই তা হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা শুরু করেছি দুর্বলভাবে। ব্যাটিংয়েও আমরা ভুল করেছি। আমাদের শুরুটা ভাল করার দরকার ছিল।’ বর্ণবাদ-বিতর্ক ছাপিয়ে ১৯৯২ সালে আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর থেকে বিশ্ব ক্রিকেটে বেশ সমীহ জাগানিয়া দল হিসেবে নাম লিখে তারা। ক্রিকেটের বড় কোন শিরোপা জিততে না পারলেও, প্রায় সব আসরেই তারা খেলে ফেবারিটের তকমাটা গায়ে মেখে। দল হিসেবে এবারও বেশ শক্তিশালী ছিল টুর্নামেন্ট শুরুর আগে। ফাফ ডু প্লেসিসের নেতৃত্বে কুইন্টন ডি কক, হাশিম আমলা, কাগিসো রাবাদা, ইমরান তাহিরদের নিয়ে গড়া দলটি বিশ্বকাপ খেলতে এসেছিল তাই বড় স্বপ্ন নিয়েই। কিন্তু শুরু থেকেই হোঁচট খায় দলটি। ইংল্যান্ডের কাছে হার দিয়ে ২০১৯ বিশ্বকাপের সূচনা করে তারা। এরপর ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি প্রোটিয়ারা। যে কারণেই আফগানিস্তানের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে লীগ পর্বে থেকেই বিদায় নেয় তারা। এবারের আসরের স্বাগতিক দল ইংল্যান্ডের কাছে ১০৪ রানের বড় ব্যবধানে হার মানে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশের কাছে দ্বিতীয় ম্যাচে ২১ রানে পরাজিত হয় প্রোটিয়ারা। ভারতের কাছে হার ৬ উইকেটে। বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। একমাত্র জয়টি আসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। ৯ উইকেটে। কিন্তু এরপর নিউজিল্যান্ডের কাছেও ৪ উইকেটে হেরে যায় তারা। রবিবার বিদায় ঘণ্টা বাজে পাকিস্তানের কাছে ৪৯ রানের পরাজয়ে। ৭ ম্যাচ শেষে তাদের ঝুলিতে মাত্র ৩ পয়েন্ট। এর ফলে এযাবতকালের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের প্রথম পর্ব থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয় দক্ষিণ আফ্রিকার। বিশ্বকাপে নিজেদের ইতিহাসে এর আগে লীগ পর্ব থেকে মাত্র একবারই বাদ পড়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেটি ২০০৩ সালে। তাও আবার নিজেদের মাঠের সেই বিশ্বকাপে। ১৬ বছর পর আবারও লীগ পর্ব থেকেই বিদায় নিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। পুরো টুর্নামেন্টে নিজেদের ধারাবাহিক ব্যর্থতার কারণ হিসেবে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি ছিল বলে মনে করেন ডু প্লেসিস। তিনি বলেন, ‘অনুশীলনে আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। কিন্তু খেলায় আত্মবিশ্বাস অনেক বড় বিষয়।’ কেবল পাকিস্তানের বিপক্ষেই নয়, ২০১৯ বিশ্বকাপে প্রোটিয়াদের হয়ে কেউ কোন বড় জুটি গড়তে পারেনি। খেলতে পারেনি কোন বড় ইনিংস। তবে ব্যতিক্রম ছিলেন ইমরান তাহির। স্পিন দিয়ে চেষ্টা করেছেন যথেষ্ট। পাকিস্তানের বিপক্ষে জোড়া শিকার করে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী এখন তিনি। পেছনে ফেলেন ৩৮ উইকেট নেয়া এ্যালান বোর্ডারকে। তাহিরের উইকেট ৩৯। দুর্দান্ত এই পারফর্মেন্সের জন্য তাহিরকে প্রশংসা করেছেন ডু প্লেসিস। এ প্রসঙ্গে প্রোটিয়া অধিনায়ক বলেন, ‘ইমরান তাহির অনবদ্য। তাকে স্বীকার করতে হবে। সে আক্রমণে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে ধারাবাহিক ছিল। কিন্তু তার মতো দলের অন্যরা জ্বলে উঠতে পারেনি।’ তবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিদায় করা পাকিস্তান শেষ চারে পৌঁছাতে পারবে কী না তা নিয়েও রয়েছে যথেষ্ট সংশয়। কেননা, ৬ ম্যাচ থেকে ৫ পয়েন্ট নিয়ে এখনও টেবিলের সপ্তম স্থানে অবস্থান করছে সরফরাজ আহমেদের দল।
×