ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবে চীনা নাটক মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ১০:০১, ২৪ জুন ২০১৯

 আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবে চীনা নাটক মঞ্চায়ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা এখন দারুণ জমজমাট। নাট্যপ্রেমীদের আগমনে মুখর পুরো আঙিনা। দেশের পাশাপাশি বিদেশের মানসম্পন্ন নাটক দেখার সুযোগটি হাতছাড়া করছেন না দর্শকরা। প্রতিদিনই মঞ্চস্থ হচ্ছে নানা দেশের নানা ভাষার নাটক। বিবিধ বিষয়ের সেসব প্রযোজনার মাধ্যমে দর্শকরা উপলব্ধি করছেন ভিনদেশী সংস্কৃতি ও তাদের নাট্যধারা সম্পর্কে। সেই সুবাদে রবিবার বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবের চতুর্থ দিনে দর্শকরা দেখেছেন চীন দেশের নাটক। সন্ধ্যায় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয়েছে দেশটির জোহো থিয়েটারের নাটক ‘এফ সিকে’। প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন জিয়ান ফেই ল্যাং। শব্দ ব্যবস্থাপনায় ছিলেন সিয়ুজিয়াও। আলোক পরিকল্পনায় ছিলেন জিয়ান ফেই ল্যাং। নাটকের কাহিনীর এক চরিত্র লুজুন সাহেব। তিনি পাগলা ধরনের লোকটির ডায়েরি ব্যবহার করেছিলেন চৈনিক সংস্কৃতির অধপতন আর চীনা জনগণের মন্দ স্বভাব নিয়ে চোটপাট করার জন্য। স্কুলজীবন থেকেই পাগলা লোকটি মানে লুজিন সম্পর্কে পড়েছেন লুজুন। কিন্তু তাকে ঠিক বুঝতে পারেননি। সে কারণে লুজুনের মনে হয়, জীবনে অনেক অযৌক্তিক জিনিস ও হরেক কিসিমের অসারতার মুখোমুখি হতে হয় মানুষকে, যা তাদের শরীরে জমা হয়ে থাকে। তবে এ কারণে মানুষ চেঁচামেচিও করতে পারে না। সময়ের ব্যবধানে ক্রমশ তারা অসাড় হয়ে যায়। লুজুনের ভাবনায় আসে, একুশ বছর আগে নিউ কালচার মুভমেন্টের পথিকৃৎ গণজাতির দুঃখ-দুর্দশার স্বরূপ উন্মোচন করেছেন এবং তাদের আওয়াজ শুনিয়েছেন। তার একশ বছর পরে আজকের দিনে, মানুষ আশা করতে পারে যে নতুন ‘রণ আহ্বান’-এ চেতনার সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে হবে স্থিতাবস্থার মুখোমুখি হয়ে। পরিস্থিতির যৌক্তিকতাকে প্রসারিত করে তার সমস্যার সমাধান করতে হবে। মানুষের কণ্ঠস্বর খুবই ক্ষীণ হতে পারে। অনেক সময়ই তা চরাচরের সমস্ত জীবের আওয়াজের মধ্যে ডুবেও যেতে পারে। তবু মানুষকে সোচ্চার থাকতে হবে, যা খুবই জরুরী। কেননা মানুষ জীবিত, তাদের অনুভূতি ও চিন্তাশক্তি আছে। তারাই হচ্ছে প্রকৃত জনগণ। ২০০৯ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত জুহু থিয়েটার একটি থিয়েটার গ্রুপ। এই নাট্যদলটি অপেশাদার নাট্যচলার অনুসন্ধান ও সম্প্রসারণে বদ্ধপরিকর। বর্তমানে বেজিং, গুয়াংজু ও সাংহাইয়ে প্রযোজনা দল রয়েছে। গ্রুপের প্রাপ্ত পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে গুয়াংজু যুব অপেশাদার নাট্য উৎসবের সেরা সৃজনশীল নাট্য পুরস্কার, ফাঙিয়ু আট কলা উৎসবের পারিবেশিক নাট্য সম্মাননার প্রথম পুরস্কার। দেশের ইতিহাসে এই প্রথম সংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কোন নাট্যোৎসব। এ উৎসবে দর্শকরা নিবন্ধনের মাধ্যমে বিনা দর্শনীতে নাটক দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত উৎসবটি বাস্তবায়ন করছে শিল্পকলা একাডেমি ও ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউটের (আইটিআই) বাংলাদেশ কেন্দ্র। সহযোগিতায় রয়েছে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন। স্বাগতিক বাংলাদেশের সঙ্গে উৎসবে অংশ নিচ্ছে ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন, ভিয়েতনাম, ভারত ও নেপালের নাট্যদল। আজ সোমবার উৎসবের পঞ্চম দিন। এদিন সন্ধ্যায় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে নেপালের মান্ডালা থিয়েটারের প্রযোজনা ‘ঝিয়ালিঞ্চা’। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দর্শকরা দেখবেন ভিয়েতনামের লে নক থিয়েটারের নাটক ‘কিম তু’। বুধবার সমাপনী দিনে থাকবে দারুণ এক আয়োজন। আলোক রশ্মির ব্যবহারে রাশিয়ার নিকোলাই জাইকভ থিয়েটার উপস্থাপন করবে ‘লাইট পাপেট শো’।
×