ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘কোন ফিগার বাড়িয়ে বলবেন না, যা আছে তাই বলবেন’

প্রকাশিত: ১০:০০, ২৪ জুন ২০১৯

 ‘কোন ফিগার বাড়িয়ে বলবেন না, যা  আছে তাই বলবেন’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এখন সময় এসেছে পরিসংখ্যান ব্যুরোকে বিশুদ্ধ করে সেরা তথ্য দেয়ার। কেউ যেন বলতে না পারে কোন তথ্য বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীও চান না কোন তথ্য বাড়িয়ে বলা হোক। প্রকৃত তথ্যই যেন উঠে আসে পরিসংখ্যান ব্যুরোর কর্মকর্তাদের সেই নির্দেশ দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। সবাইকে সত্যবাদী হয়ে কাজ করতে হবে বলেও জানান মন্ত্রী। রবিবার রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো আয়োজিত ‘এনএসডিএস ইমপ্লিমেন্টেশন সাপোর্ট প্রজেক্ট’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। দেশের পরিসংখ্যান ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে এনএসডিএস (ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি ফর দি ডেভেলপমেন্ট অব স্ট্যাটিস্টিকস) সাপোর্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এতে সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। চলতি বছর শুরু হওয়া এই প্রকল্প শেষ হবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক বাস্তবায়ন শুরু উপলক্ষে দু’দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করা হয়। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, কোন ফিগার বাড়িয়ে বলবেন না, যা আছে তাই বলবেন। কেউ যেন বলতে না পারে ডাটা ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে সঠিক তথ্য সরবরাহে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই সত্যবাদী হয়ে আসল কাজটা করতে হবে। আপনাদের সর্বোচ্চটা দান করুন। এই সময় বাংলাদেশের। কেউ কিছু বললে আমরা শুনব না। আমাদের নেতৃত্ব পরিষ্কার এবং বাঙালীর জন্য দান করছি। যারা লুটেপুটে খেয়ে গেছে তারাই এখন নসিয়ত করবে বলেও মনে করেন মন্ত্রী। যারা দেশের উন্নয়ন নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, যারা সন্দেহ করবে তারা তাদের ধারণা নিয়ে থাকুক। তার সঙ্গে আমাদের কোন বিবাদ নেই। দেশের বেশির ভাগ মানুষ বিশ্বাস করে যে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, উন্নয়ন হচ্ছে। এটি আমাদের জন্য যথেষ্ট। আমরা বেশিরভাগ মানুষ বিশ্বাস করি বাংলাদেশ পারবে, পারছে। পরিবর্তন হয়েছে, হচ্ছে। দারিদ্র্যের যে শিলাখ- তাতে ভাঙ্গন শুরু হয়ে গেছে বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী। এনএসডিএস সাপোর্ট প্রকল্প সম্পর্কে এম এ মান্নান বলেন, এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের পরিসংখ্যান ব্যবস্থাকে বিশ্বমানে উন্নীত করা। নীতিনির্ধারক, পরিকল্পনাবিদসহ অন্য তথ্য ব্যবহারকারীরা যেন যথাসময়ে মানসম্পন্ন সঠিক ও নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান পায় তা নিশ্চিত করা। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক দিলদার হোসেন। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, সীমাবদ্ধ সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে সর্বাধিক পরিসংখ্যান প্রস্তুতের জন্য জরিপের পরিবর্তে প্রশাসনিক উৎস থেকে নিয়মিত তথ্য সংগ্রহের জন্য তথ্য উৎপাদনকারী বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দফতর, অধিদফতরের সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন করবে এবং এজন্য তাদের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করা হবে। যেহেতু দাফতরিক পরিসংখ্যান প্রণয়ন একটি টেকনিক্যাল বিষয় তাই এ কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে দক্ষ জনবল অপরিহার্য। তাই বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দেশে-বিদেশে নিয়মিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনবল হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সভাপতির বক্তব্যে সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী জানান, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা গেলে এসডিজির সূচকগুলোর যথাযথ পরীবীক্ষণ, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়নে সরকারকে সহজেই তথ্য উপাত্ত দিতে সক্ষম হবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডান ডান চ্যান ও জাতিসংঘের আওতাধীন এশিয়া প্যাসিফিক পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউট (ইউএনএসআইএপি) জাপান-এর পরিচালক আশিষ কুমার, ভুটানের পরিসংখ্যান ব্যুরোর পরিচালক চাইম তাহেরিংসহ উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক কৃষ্ণা গায়েন।
×