স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিদ্যুত গ্রাহকদের জন্য কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন সার্টিফিকেটের বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার চাইছে বিদ্যুত বিভাগ। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করছে সরকার, যাদের করযোগ্য কোন আয়ই নেই। সেক্ষেত্রে একজন মানুষের শুধু বিদ্যুত সংযোগের জন্য টিআইএন সার্টিফিকেট তৈরি করা বাড়তি চাপ হিসেবে দেখছে বিদ্যুত বিভাগ।
বিদ্যুত বিভাগের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জানান, আমরা বিষয়টি আনুষ্ঠানিক প্রত্যাহারের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানাব। আজ সোমবার এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে একটি চিঠি দেয়া হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে রবিবার জাতীয় সংসদের নির্ধারিত বাজেট বক্তৃতায় বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আমাদের এক কোটি ২০ লাখ গ্রাহক রয়েছে। যারা লাইফ লাইন বা প্রান্তিক গ্রাহক। এদের পক্ষে টিআইএন নাম্বার জোগাড় করে বিদ্যুত সংযোগ নেয়া কঠিন।
প্রান্তিক গ্রাহকের ব্যবহৃত মাসিক বিদ্যুতের পরিমাণ ৫০ ইউনিটের মধ্যে। সব মিলিয়ে এসব গ্রাহকের মাসিক বিদ্যুত বিল আসে ১৫০ টাকা। কিন্তু এর জন্য টিআইএন সার্টিফিকেটের বাধ্যবাধকতাকে যৌক্তিক নয় বলে মনে করা হচ্ছে। এসব বিদ্যুত গ্রাহকের বিলে সরকার ভর্তুকি দেয়। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ছয়টার কাছাকাছি হলেও এদের কাছে বিক্রি করা হয় সাড়ে তিন টাকায়। গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবন মান উন্নয়নে এই বিদ্যুত বড় ভূমিকা রাখে।
সরকার সাধারণ মানুষকে করের আওতায় আনতে এবার বাজেটে বিদু্যুত সংযোগের জন্য টিআইএন সার্টিফিকেটের বাধ্যবাধকতার প্রস্তাব করে। সরকারের এই উদ্যোগকে ভাল বললেও দেশের বিশাল একটি অংশ এর জন্য বিপাকে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিদ্যুত বিভাগ ক্রমান্বয়ে বিদ্যুত সংযোগকে সহজ করছে। আবেদনের সঙ্গে সঙ্গে এখন পাঁট মিনিটের মাথায় বিদ্যুত সংযোগ দিচ্ছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড আরইবি। শহরের আবাসিক গ্রাহকদের সংযোগ সাত দিনের মধ্যে প্রদানের বাধ্যবাধকতা দিয়ে দেয়া হয়েছে।
আবাসিকে বিদ্যুত সংযোগের জন্য আবেদনপত্রের সঙ্গে আবেদনকারীর দুই কপি ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্টের ফটোকপি, জমির দলিল বা লিজের ফটোকপি, ১০ তলার বেশি হলে অগ্নিনির্বাপণ সনদ, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভার মধ্যে হলে ভবন নির্মাণের বৈধ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের ফটোকপি ও দুই কিলোওয়াটের বেশি গ্রাহকের বিদ্যুত লোড হলে সৌর প্যানেল স্থাপনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে কারও ভবন নির্মাণের বৈধ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না থাকলে অনাপত্তিপত্র দিয়েও বিদ্যুত সংযোগ নেয়া যায়। তবে বাণিজ্যিক ও শিল্প সংযোগের ক্ষেত্রে আবেদনের পন্থা ভিন্ন।