ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে বিদ্যুত সঞ্চালনের দুই প্রকল্পের ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে

প্রকাশিত: ০৯:১৭, ২৩ জুন ২০১৯

 প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে বিদ্যুত সঞ্চালনের দুই প্রকল্পের ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ জুলাইয়ের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরকালে বিদ্যুতের দুই সঞ্চালন প্রকল্পে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হবে। বিদ্যুত সঞ্চালনের দুই প্রকল্প হচ্ছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকায় বিদ্যুত নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা সম্প্রসারণ এবং শক্তিশালীকরণ প্রকল্প এবং বিদ্যুত বিতরণে গ্রিডলাইন বা সঞ্চালন লাইন শক্তিশালীকরণ প্রকল্প। ডিপিডিসির প্রকল্পে ১৪০ কোটি ২৯ লাখ ও দ্বিতীয় প্রকল্পটিতে ৯৭ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেবে দেশটি। বিদ্যুত বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এ তথ্য জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১ জুলাই থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত চীন সফর করবেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকালে এই দুই ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হবে। এই দুটি প্রকল্পে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হলে দেশের বিদ্যুত সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা বর্তমানের চেয়ে আরও উন্নত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় দেশটির সঙ্গে ২৭ প্রকল্পে সাড়ে ২২ বিলিয়ন ডলার ঋণের সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় ঋণ প্রক্রিয়া দেরি হয়। এই অবস্থায় বিদ্যুত খাতের এই দুই প্রকল্পে ঋণ চুক্তির বিষয়ে এরই মধ্যে দেশটির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, ২৭ প্রকল্পের মধ্যে ২০১৬ সালে একটি এবং ২০১৭ সালের চারটি প্রকল্পের ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তি হওয়া প্রকল্পগুলো হচ্ছে- পদ্মা রেল সংযোগ, জাতীয় তথ্য-প্রযুক্তি ইনফো-নেটওয়ার্ক, কর্ণফুলী টানেল, সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং টার্মিনাল নির্মাণ এবং টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ প্রকল্প। জানা গেছে, ২০১৬ সালে চীনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকে ঋণের শর্তাবলির বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ যে, পাঁচ প্রকল্পে ঋণের সুদহার ২ শতাংশ। কিন্তু এ বছর নির্ধারিত বিদ্যুতের এই দুই প্রকল্পে সুদহার বেড়ে হচ্ছে ৩ শতাংশ। এর সঙ্গে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ ব্যবস্থাপনা ফি এবং শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ কমিটমেন্ট ফি দিতে হবে। চীন সাধারণত দুই প্রকার ঋণ দেয়। এর একটি হলো- গবর্নমেন্ট কনসেশনাল লোন (জিসিএল)। অন্যটি প্রিফারেন্সিয়াল বায়ার্স ক্রেডিট (পিবিসি)। উভয় ঋণের সুদহার ধরা ছিল ২ শতাংশ। কিন্তু এ বছর ঋণ চুক্তির জন্য নির্ধারিত দুই প্রকল্পে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ হারে সুদ দাবি করে দেশটি। তবে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে আলোচনা করে অবশেষে জিসিএল ঋণে সুদহার ২ শতাংশ এবং পিবিসি ঋণের সুদহার বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। ইআরডির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, চীনের সঙ্গে এমওইউ অনুযায়ী ঋণ চুক্তির জন্য অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা প্রকল্পগুলো হলো- চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ৭৮৩ একর জমিতে চায়না অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন, সরকারী পাটকলগুলো আধুনিকায়ন, মংলা বন্দরের সুবিধা সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে চার লেন করা, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ, সীতাকু--চট্টগ্রাম-কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ, আখাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত মিটারগেজ রেললাইনকে ব্রডগেজে রূপান্তর, জয়দেবপুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত ডবল লাইন ও ডবল গেজ রেললাইন নির্মাণ, রাজশাহী ওয়াসার জন্য পানি শোধনাগার নির্মাণ, পৌরসভার জন্য পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, ছয়টি টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপন, গজারিয়া ৩৫০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন।
×