ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সুন্দরবনের খালে জুলাই আগস্ট মাছ ধরা নিষিদ্ধ

প্রকাশিত: ০৮:৫১, ২৩ জুন ২০১৯

 সুন্দরবনের খালে জুলাই আগস্ট মাছ ধরা  নিষিদ্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় আগামী ১ জুলাই থেকে দুই মাস সকল খালে মাছ শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বন বিভাগ। মাছের ভা-ার খ্যাত ম্যানগ্রোভ এই বনের ৪ শতাধিক খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করাসহ মৎস্য এবং মৎস্য প্রজাতির অবাধ প্রজনন ও সংরক্ষণে সব খালে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সুন্দরবন বিভাগ সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সুন্দরবনের প্রায় ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের জলভাগের পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৪.১ বর্গকিলোমিটার। যা সমগ্র সুন্দরবনের ৩১.১৫ ভাগ। এই জলভাগে জালের মতো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ১৩টি বড় নদ-নদীসহ ৪৫০টি খাল। জোয়ারের পানিতে সব সময় প্লাবিত হওয়া ম্যানগ্রোভ এই জলভাগে রয়েছে ভেটকি, রূপচ৭াদা, দাঁতিনা, চিত্রা, পাঙ্গাস, লইটা, ছরি, মেদ, পাসে, পোয়া, তপসী, লাক্ষা, কৈ, মাগুর, কাইন মাগুর, রূপালি ইলিশসহ ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ। এছাড়া রয়েছে গলদা, বাগদা, চাঁকা, চালি, চামিসহ ২৪ প্রজাতির চিংড়ি। বিশ্বখ্যাত শিলা কাঁকড়াসহ ১৪ প্রজাতির কাঁকড়াও রয়েছে এখানে। এছাড়া ৪৩ প্রজাতির মালাস্কা ও ১ প্রজাতির লবস্টারসহ রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ইরাবতীসহ ৬ প্রজাতির ডলফিন। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সুন্দরবন বিভাগের কাঠ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ রাজস্ব পাস-পারমিট নিয়ে ও অবৈধ পথে সুন্দরবনের মৎস্য এবং মৎস্য প্রজাতির সম্পদ আহরণ করতে জেলেরা বনে প্রবেশ করে থাকে। সাদা মাছের প্রজনন মৌসুমে মাছের আধিক্য থাকায় একশ্রেণীর জেলে অধিক লাভের জন্য সুন্দরবনের খালগুলোতে বিষ দিয়ে মাছ আহরণ করে। এই বিষ দেয়ার কারণে খালের ছোট-বড় সব মাছসহ মৎস্য প্রজাতির সকল প্রাণী মারা যায়। খালে বিষ দেয়ার কারণে মৎস্য এবং মৎস্য প্রজাতির অবাধ প্রজনন ও সংরক্ষণ, বিনষ্টের পাশাপাশি সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে আগামী জুলাই-আগস্ট এই দুই মাস সকল খালে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বন বিভাগ। তবে, এই দুই মাস সুন্দরবনের নির্দিষ্ট করে দেয়া বড় বড় নদ-নদী থেকে মাছ আহরণের জন্য জেলেদের সীমিত আকারে পাস-পারমিট দেয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে খালগুলোতে যাতে করে কেউ ঢুকতে বা মাছ শিকার করতে না পারে সেজন্য কঠোর নজরদারি জোরদার করা হবে।
×