ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

ছায়ানটে সুফিয়া কামাল স্মারক বর্ষা উৎসব

প্রকাশিত: ০৯:৫২, ২২ জুন ২০১৯

ছায়ানটে সুফিয়া কামাল স্মারক  বর্ষা উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহ পেরিয়ে প্রশান্তির বারতা নিয়ে এসেছে বর্ষা। রূপময় এ ঋতুর আগমনে প্রকৃতি থেকে শুরু করে মানব মনে পড়েছে বিশেষ প্রভাব। বর্ষার বারিধারায় চঞ্চল হয়েছে তৃষিত হৃদয়। তাই প্রাণ জাগানিয়া বর্ষার প্রতি ভালবাসা জানিয়ে গাওয়া হলো, পরিবেশিত হলো নাচ। নৃত্য-গীতে ছায়ানটের শিল্পীরা স্বাগত জানাল বর্ষাকে। পরিবেশনার মাঝে প্রিয় ঋতুর নানা রূপ মেলে ধরলেন শ্রোতা-দর্শকের সামনে। বর্ষা বন্দনায় বেছে নেয়া হলো শিল্পিত উপস্থাপনা। ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কবি সুফিয়া কামালের ১০৮তম জন্মদিন স্মরণে শুক্রবার ছুটির দিনের সন্ধ্যায় ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন মিলনায়তনে ছিল এ আয়োজন। কথা, গান, কবিতা ও নাচের মুদ্রায় তুলে ধরা হয় বর্ষার রূপ। ‘তৃষ্ণার শান্তি সুন্দরকান্তি’ সমবেত কণ্ঠে এই রবীন্দ্রসঙ্গীতের সঙ্গে নাচ পরিবেশন দিয়ে শুরু হয় ছায়ানটের বর্ষা উৎসব। ছায়ানটের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য এবং সুফিয়া কামালের মেয়ে তুলে ধরেন সুফিয়া কামালের জীবন ও কর্মের সারসংক্ষেপ। তিনি বলেন, সুফিয়া কামাল আত্মশক্তিতে পথচলায় বিশ^াস করতেন। যত বাধাই আসুক তাকে পরাজিত করে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলতেন। এর জন্য নারীদের যোগ্য হয়ে উঠতে হবে। একইসঙ্গে সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। একটি লড়াই হচ্ছে নারীর নিজের জন্য। আরেকটি লড়াই হচ্ছে সমাজ, রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য। সুফিয়া কামাল নিজের জীবন দিয়ে নিজের নারীসত্তার বিকাশ ঘটিয়েছেন। একইসঙ্গে বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। সুফিয়া কামালের জীবন একজন নারীর জন্য দেশের সকল আত্মসম্মানে বলিয়ান মানুষের জন্য পাথেয়। অনুষ্ঠানে শিল্পীরা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও অতুলপ্রসাদ সেন, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গান গেয়ে শোনান। সম্মেলক কণ্ঠে নাচের সঙ্গে শিল্পীরা আরও গেয়ে শোনান ‘বজ্রমানিক দিয়ে গাঁথা’, ‘বরষা ঐ এলো বরষা’, ‘শ্রাবণ ঝুলাতে বাদল রাতে’ ও ‘চঞ্চল শ্যামল এলো গগনে’। সুফিয়া কামালের কবিতা আবৃত্তি করেন মাহমুদা আখতার। রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে শোনান ইফফাত বিনতে নাজির ‘শাওন গগনে ঘোর ঘনঘটা’, চঞ্চল বড়াল ‘তিমির-অবগুণ্ঠনে বদন তব ঢাকি’, এটিএম জাহাঙ্গীর ‘আজি ঝড়ের রাতে’। নজরুলসঙ্গীত গেয়ে শোনান রেজাউল করিম ‘এ ঘন ঘোর রাতে’, নাসিমা শাহীন ফ্যান্সি ‘রুম ঝুম রুম ঝুম’, সন্জিদা জোহরা বীথিকা ‘এলো কৃষ্ণ কানাইয়া’, সুমন মজুমদার ‘আসিলে এ ভাঙা ঘরে’, লতিফুন জুলিও ‘কেন করুণ সুরে’, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী ‘ঝর ঝর ঝরে শাওন ধারা’। অতুলপ্রসাদের গান গেয়ে শোনান ‘নিদ নাহি আঁখি পাতে’। আর সুমা রায় গাইলেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘বরষা আইলো ওই’। সবশেষে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠান।
×