ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চার পরিবর্তন এনে ট্যারিফ কমিশন আইন অনুমোদন

প্রকাশিত: ১০:৫৫, ১৮ জুন ২০১৯

 চার পরিবর্তন এনে ট্যারিফ কমিশন আইন অনুমোদন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ চার পরিবর্তন এনে ‘বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০১৯’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এছাড়া বাংলাদেশ জাতিসংঘের মর্যাদাপূর্ণ অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের (ইকোসক) সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় মন্ত্রিসভা প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। পাশাপাশি প্রখ্যাত নাট্যকার, নির্দেশক ও অভিনেতা অধ্যাপক মমতাজ উদদীন আহমদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ট্যারিফ কমিশনটা মূলত ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর আমলে শুরু হয়, রাষ্ট্রপতির আদেশ দিয়ে এটি শুরু করা হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৯২ সালে এটার আইন প্রণয়ন করা হয়। সেই আইনের মধ্যে কিছুটা ঘাটতি ছিল। সময়ের প্রেক্ষাপটে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে। নতুন আইনে মোটা দাগে চারটি বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নতুন আইন অনুযায়ী ‘ট্যারিফ কমিশন’ এর নাম পরিবর্তন করে ‘ট্রেড এ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন’ করা হয়েছে। আর ১৯৯২ সালের ৭ ধারা রিপ্লেস করা হয়েছে অর্থাৎ কমিশনের কাজ বাড়ানো হয়েছে। যেমন- শুল্কনীতি পর্যালোচনা; আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি; ট্রানজিট, ট্রান্সশিপমেন্ট, জিএসপি, শিল্প-বাণিজ্য বিনিয়োগ, শুল্কনীতি, বৈদেশিক বাণিজ্য- এ রকম অনেক বিষয় কার্যপরিধিতে আনা হয়েছে, কার্যপরিধি ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। নতুন আইনে তথ্যের গোপনীয়তা নিশ্চিত করা সংক্রান্ত একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, এ প্রতিষ্ঠানটি খুবই সংবেদনশীল, এটা যদি কোন তথ্য আগেই লিক করে দেয় তাহলে এটা ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে বেশ বৈষম্য বা সঙ্কট সৃষ্টি করতে পারে। এদের ওপর একটা ম্যান্ডেড দেয়া হয়েছে তারা গোপনীয়তা রক্ষা করতে বাধ্য থাকবে। এটা আইনের ৮ ধারার ২ উপধারায় ইনসার্ট করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গবেষণা বা সমীক্ষা কাজে সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে কমিশন সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পরামর্শক ও গবেষণা সহায়তাকারী নিয়োগ করতে পারবে। গবেষণার জন্য তারা এখন আউটসোর্সিং করতে পারে না। এখানে তারা প্রয়োজনীয়সংখ্যক কনসালটেন্ট নিয়োগ করতে পারবেন। এ সুবিধাটা দরকার কারণ প্রতিষ্ঠানটি গবেষণাধর্মী। মূলত এ চারটি পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ॥ বাংলাদেশ জাতিসংঘের মর্যাদাপূর্ণ অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের (ইকোসক) সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় মন্ত্রিসভা প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। শফিউল আলম বলেন, ইকোসক সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় মন্ত্রিসভা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জ্ঞাপন করেছে। এতে ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো ১৯১ ভোটের মধ্যে ১৮১ ভোট বাংলাদেশের পক্ষে পড়ে। এটা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বিষয়। এ জন্য মন্ত্রিসভা অভিনন্দন প্রস্তাব গ্রহণ করে। মন্ত্রিসভার রদবদলের তথ্য নেই মন্ত্রিসভার আকার বৃদ্ধি বা রদবদল হচ্ছে বলে গুঞ্জনের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানিয়েছেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত তার কাছে কোন তথ্য আসেনি। মন্ত্রিসভার দাফতরিক দায়িত্ব পালন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিসভায় রদবদলের কথা শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শফিউল আলম সহাস্যে বলেন, না, আমার পর্যায়ে আসেনি, এলে তো আপনারা টের পাবেন। শিগগিরই মন্ত্রিসভার আকার বাড়বে এবং মন্ত্রিসভার কারও কারও দফতর বদল হতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। কিছু সংবাদ মাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গত ৭ জানুয়ারি টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ৪৬ সদস্যের ওই মন্ত্রিসভায় ২৪ মন্ত্রী, ১৯ প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপমন্ত্রী রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে ছয় মন্ত্রণালয় রাখা হয়। মন্ত্রিসভা গঠনের প্রায় সাড়ে চার মাসের মাথায় গত ১৯ মে তা পুনর্বিন্যাস করা হয়। ওইদিন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসানকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়। এ ছাড়া ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারকে একই মন্ত্রণালয়ের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী করা হয়। এ মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্ব দেয়া হয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্থানীয় সরকার বিভাগের মন্ত্রী করা হয় তাজুল ইসলামকে। তাজুল ইসলামকে আগে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও স্বপন ভট্টাচার্যকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। একই মন্ত্রণালয়ের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান স্বপন ভট্টাচার্য। মমতাজ উদদীনের মৃত্যুতে মন্ত্রিসভার শোক ॥ প্রখ্যাত নাট্যকার, নির্দেশক ও অভিনেতা অধ্যাপক মমতাজ উদদীন আহমদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে মন্ত্রিসভা। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বরেণ্য নাট্য নির্দেশক ও অভিনয় শিল্পী, লেখক কলামিস্ট, চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব, ভাষা সংগ্রামী, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মমতাজ উদদীন আহমদের মৃত্যুতে মন্ত্রিসভা শোক প্রকাশ করে ও তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে।’ গত ২ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মমতাজ উদদীন।
×