ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জলবিদ্যুত খাতে বিনিয়োগের ঘোষণা আসতে পারে

নেপাল-বাংলাদেশ যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শনিবার

প্রকাশিত: ১০:৩১, ১৮ জুন ২০১৯

 নেপাল-বাংলাদেশ যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শনিবার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নেপাল-বাংলাদেশ যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে আগামী শনিবার জলবিদ্যুত খাতে বিনিয়োগের ঘোষণা আসতে পারে। এবার দুই দেশের বিদ্যুত সচিব পর্যায়ের দ্বিতীয় বৈঠক বসছে কক্সবাজারে। প্রথম বৈঠকের ফলোআপ বৈঠকে নেপালের তরফ থেকে জানানোর কথা দেশটির কোন স্থান জলবিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের জন্য উপযুক্ত। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র বলছে আগামী শনিবার দুই দেশের বিদ্যুত সচিব পর্যায়ের বৈঠকের পর সুনির্দিষ্টভাবে দুই দেশ এক সঙ্গে বিনিয়োগ করে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা দিতে পারে। তবে এর আগে আগামীকাল বুধবার থেকে যৌথ কারিগরি কমিটি বৈঠকে বসছে। এরপর যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ আগামী শুক্রবার বৈঠক করবে। যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের আহ্বায়ক বিদ্যুত বিভাগের যুগ্মসচিব ফয়জুল আমিন জানান, এটি আমাদের দ্বিতীয় বৈঠক। এর আগে প্রথম বৈঠক হয় কাঠমান্ডুতে। তখন উভয় দেশ একসঙ্গে বিদ্যুত প্রকল্পে বিনিয়োগের বিষয়ে সম্মত হয়। এবারের বৈঠকে নেপালের তরফ থেকে বিষয়গুলো বাংলাদেশকে বলা হবে কোন কোন স্থানে আমরা বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করতে পারি। এখনও নেপালের তরফ থেকে বিষয়গুলো বাংলাদেশকে বলা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, নেপাল বুধবার কারিগরি কমিটির বৈঠকে বিষয়গুলো উত্থাপন করবে। নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশ ও নেপাল যৌথ বিনিয়োগের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক সই করবে। ইতোমধ্যে দুই দেশ তা সই করেছে। সেই সমঝোতার আলোকে বিনিয়োগের খাত চিহ্নিত করা হবে। এই কাজটি এবার চূড়ান্ত হবে। এরপর দুই দেশ এক সঙ্গে বিনিয়োগ করবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ সপ্তাহের সবগুলো বৈঠক সার্থক হলে নেপালই হবে সেই দেশ যেখানে বাংলাদেশ প্রথম বিদ্যুত উৎপাদনে বিনিয়োগ করবে। এর আগে বাংলাদেশে বিভিন্ন দেশ বিনিয়োগ করলেও বাংলাদেশ এখনও দেশের বাইরে বিদ্যুত উৎপাদনে বিনিয়োগ করেনি। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য এটি হবে নতুন অভিজ্ঞতা । সূত্র জানায়, নেপাল বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী। ভারত তার দেশের ভূখ- ব্যবহার করে তৃতীয় কোন দেশ থেকে বিদ্যুত আমদানির সুযোগ দেয়ায় বাংলাদেশের সামনে নেপাল ও ভুটানে জলবিদ্যুত উৎপাদনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। নেপাল বাংলাদেশ যৌথ কারিগরি কমিটির সদস্য পিডিবির প্রধান প্রকৌশলী (পরিকল্পনা এবং উন্নয়ন) বেলায়েত হোসেন বলেন, নেপাল বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের স্থান নির্ধারণের পর যদি কেন্দ্র নির্মাণ করা হয় তাহলে গ্রিড লাইন নির্মাণ করা হবে। তখন আমাদের কাজ শুরু হবে। তবে শুরুতে নেপালকেই ভূমিকা রাখতে হবে। নেপালে ৩০ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুত উৎপাদনের সম্ভাবনা থাকলেও দেশটি বর্তমানে সামান্য পরিমাণ বিদ্যুত উৎপাদন করছে। এখানেও ভারতের বিভিন্ন কোম্পানি কয়েকটি জলবিদ্যুত প্রকল্প নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। ওই বিদ্যুতের একটি অংশ ভারত ব্যবহার করছে। তবে নেপালে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ ও গ্রিড লাইন নির্মাণের একটি সুবিধাজনক দিক হিসেবে দেখা হচ্ছে। এখান থেকে শুধু বিদ্যুত আমদানিই নয় বিদ্যুত রফতানিও করা যাবে। বলা হচ্ছে শীতকালে যখন আমাদের বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায় তখন নেপালেও শীতের কারণে পানির স্তর নিচে নেমে যায়। এতে বিদ্যুত উৎপাদন হয় না। তখন বাংলাদেশ নেপালে বিদ্যুত রফতানি করতে পারে। পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন এ বিষয়ে বলেন, আমরা বিদ্যুত শুধু আমদানি করছি না আমরা বিদ্যুত বিনিময় বলছি। কেননা আমরা এখন আমদানির সঙ্গে রফতানিও করতে পারি। নেপালে সেই সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। প্রসঙ্গত নেপাল ও ভুটানের উদ্যোগের সঙ্গে মিয়ানমারকে যুক্ত করতে পারলে আরও বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে। দেশটিতে আরও ৪০ হাজার মেগাওয়াটের জলবিদ্যুত উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে। অবশ্য মিয়ানমার এরই মধ্যে বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করছে। যারা এসব বিষয়ে আগে থেকে পারদর্শী। তবে ভুটানের সঙ্গে আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে। শীঘ্রই দুই দেশ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারে।
×