ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

চার দশক উদযাপনে মাইলসের রোডম্যাপ ঘোষণা

প্রকাশিত: ১০:২৯, ১৮ জুন ২০১৯

  চার দশক উদযাপনে মাইলসের  রোডম্যাপ ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সুরের সঙ্গে তাদের জোটবদ্ধ পথচলার সূচনা হয় ১৯৭৯ সালে। শুরুর অল্পদিনের রক ও পপ ঘরানার গানে ব্যান্ডসঙ্গীতে আলোড়ন তোলে দলটি। শ্রোতার কাছে দারুণভাবে সমাদৃত হয় তাদের গানগুলো। গানপ্রেমীদের সেই ভালবাসাকে সঙ্গী করে পথচলার ৪০ বছরে পা রেখেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যান্ডদল মাইলস। আর চার দশকে পদার্পণের সাফল্যে উদযাপনে দেশ-বিদেশে ছয় মাসব্যাপী কনসার্ট করবে ব্যান্ডদলটি। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় ব্যান্ডের সদস্যরা। দেশের বাইরে এখন পর্যন্ত আমেরিকা, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় মাইলসের কনসার্টের আয়োজন নিশ্চিত হয়েছে। সোমবার রাজধানীর ডেইলি স্টার সেন্টারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শাফিন আহমেদ, হামিন আহমেদ, মানাম আহমেদ, সৈয়দ জিয়াউর রহমান তুর্য ও ইকবাল আসিফ জুয়েল। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন আয়োজক প্রতিষ্ঠান উইন্ডমিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাব্বির রহমান তানিম। শাফিন আহমেদ জানান, এ পর্যন্ত মাইলসের ১১টি এ্যালবাম মুক্তি পেয়েছে। পাশাপাশি চারটি বেস্ট অব এ্যালবাম প্রকাশ করেছে তারা। যার মধ্যে ভারত থেকে দুটি এবং আমেরিকা থেকে দুটি। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশী ব্যান্ড হিসেবে ১৯৯৬ সালে আমেরিকায় প্রথম শো করে মাইলস। যেখানে মাইলস একক আয়োজনে অংশগ্রহণ করে। ১৯৭৯ সালে মাইলস যাত্রা শুরু করলেও মাইলসের জন্য ১৯৮২ সাল ছিল বিশেষ একটি বছর। কারণ সে বছরই সাধারণ শ্রোতাদের সামনে হাজির হয় মাইলস। এর আগে শুধু তৎকালীন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাজাত মাইলস, যেখানে সাধারণ শ্রোতার আনাগোনা কম ছিল। শাফিন বলেন, ৪০ বছর ধরেই মাইলস সক্রিয়ভাবে গান করে যাচ্ছে। আমরা দুই ভাই খুব অল্প বয়সে এ দলে যোগ দিয়েছি। এত বছর এমন নয় যে, নাম নিয়ে বসে আছি। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিনিয়ত নতুন গান করছি, কনসার্টে বাজাচ্ছি। স্টেজে আমাদের উপস্থিতি এখনও ভক্ত-শ্রোতারা উপভোগ করে। এটা আমাদের জন্য বড় প্রাপ্তি। এই সময়ে আমরা সবার কাছ থেকে যে ভালবাসা পেয়েছি, তা বলে শেষ করা যাবে না। হামিন আহমেদ বলেন, এটা আমাদের জন্য আনন্দের একটি বছর। সারা বছরই আমরা কাটিয়ে দেব আমাদের শ্রোতা, দর্শক এবং ভক্তদের নিয়ে। তিনি জানান, মাইলসের শুরুটা হবে আমেরিকা সফর দিয়ে। আমেরিকার বিভিন্ন শহরে ১২টি শহরে একক শোতে অংশ নেবে মাইলস। এরপর সেপ্টেম্বরে কানাডায় যাবে। সেখানেও শো হবে। দেশে ফিরেই আবার অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ায় পাঁচ থেকে ছয়টি শোতে অংশ নেবে মাইলস। তারপর দেশে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৪০ বছর উদ্যাপন উপলক্ষে দেশের বিভাগীয় শহর চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট ও খুলনায় কনসার্টের আয়োজন করা হবে। এ ছাড়া ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় আয়োজন করা হবে গ্র্যান্ড গালা কনসার্ট। স্থানীয় এ আয়োজনে সহযোগিতায় থাকছে উইন্ডমিল এ্যাডভারটাইজিং লিমিটেড। এই আয়োজনে মাইলসের জনপ্রিয় গানের পাশাপাশি দলের সদস্যদের পছন্দের অনেক গান পরিবেশন করা হবে। এছাড়া দেশের অন্য শীর্ষস্থানীয় ব্যান্ড নগরবাউল, ফিডব্যাক, ওয়ারফেজ, দলছুট প্রভৃতি ব্যান্ড মাইলসের জনপ্রিয় গানগুলো ঢাকার কনসার্টে পরিবেশন করবে। এছাড়া শুধু গান নয়, ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আরও কিছু আয়োজন থাকবে। মাইলসের ব্যবহৃত মিউজিক্যাল যন্ত্রের প্রদর্শনী, মাইলসের বিভিন্ন সময়ের ছবি প্রদর্শন, মাইলসের বিভিন্ন অর্জন প্রদর্শন, গানের কথা এবং তার পেছনের কাহিনীসহ প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে। ইতোমধ্যে মাইলসের সদস্যদের মধ্যে হ্যাপি আখন্দ, মিল্টন আকবরসহ কয়েকজন মারা গেছেন। বিশেষ আয়োজনে তাদের স্মরণ করা হবে। উইন্ডমিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাব্বির রহমান বলেন, দেশের বাইরে ব্যান্ডগুলো অনেক জনপ্রিয়, তার অন্যতম কারণ তাদের উপস্থাপন। বিভিন্ন দেশে স্পনসরের মাধ্যমে বড় আয়োজন করে থাকে বিদেশী ব্যান্ডদলগুলো। যা এ দেশেও শুরু হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতা এবারের মাইলসের কনসার্ট। তবে আমরা একটু আলাদাভাবে এই আয়োজনটি করছি। শুধু একটি ইভেন্টের মাধ্যমে ৪০ বছর পূর্তি শেষ হবে না। ছয় মাসের আয়োজনে যুক্ত হবে অগণন শ্রোতা-দর্শক। এই জার্নিটাকে বলছি ‘ম্যাজিক অফ মাইলস’। মাইলসের প্রথম বাংলা গানের এ্যালবাম ‘প্রতিশ্রুতি’ প্রকাশিত হয় ১৯৯১ সালে। তার আগে প্রকাশিত হয় দুটি ইংরেজী গানের এ্যালবাম ‘মাইলস’ ও ‘এ স্টেপ ফাদার’। দলটির জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘প্রথম প্রেমের মতো’, ‘গুঞ্জন শুনি’, ‘সে কোন দরদিয়া’, ‘ফিরিয়ে দাও’, ‘ধিকি ধিকি’, ‘পাহাড়ি মেয়ে’, ‘নীলা’, ‘কি যাদু’, ‘কতকাল খুঁজব তোমায়’, ‘হৃদয়হীনা’, ‘স্বপ্নভঙ্গ’, ‘জ্বালা জ্বালা’, ‘শেষ ঠিকানা’, ‘পিয়াসি মন’, ‘বলব না তোমাকে’, ‘জাতীয় সংগীতের দ্বিতীয় লাইন’ ও ‘প্রিয়তমা মেঘ’।
×