ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গড়ে উঠেছে একাধিক সশস্ত্র সংগঠন

বাঁশখালীর জনপদে সন্ধ্যা নামলেই আতঙ্ক

প্রকাশিত: ১০:০২, ১৮ জুন ২০১৯

 বাঁশখালীর জনপদে সন্ধ্যা নামলেই আতঙ্ক

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁশখালী, ১৬ জুন ॥ ‘সন্ধ্যা নামলেই অস্ত্রের ঝনঝনানিতে আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়ে বাঁশখালীর ৪টি ইউনিয়ন।’ সংঘবদ্ধ একাধিক ডাকাত দল অস্ত্রসহ আস্তানা গেড়েছে পাহাড়ের পাদদেশে। অপরদিকে সাগর উপকূলীয় এলাকা সরল, বাহারছড়া ও ছনুয়া এলাকায় প্রতিনিয়ত এক পক্ষ অপর পক্ষকে ঘায়েল করতে গুলিবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। তাছাড়া দিন দিন এসব এলাকায় অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষেরা আতঙ্কের মধ্যে দিন যাপন করছে। ওই এলাকায় বসবাসকারী সকল শ্রেণীর মানুষের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে অস্ত্রের ঝনঝনানি থামাবে কে? এই যখন বাঁশখালীর ৪টি ইউনিয়নের অবস্থা তখন নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন। যে কোন মূল্যে এসব এলাকা হতে ডাকাত মুক্তের ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ। রবিবার বাঁশখালীতে অবৈধ অস্ত্র রয়েছে এমন তথ্য স্বীকার করে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, এলাকায় অস্ত্রবাজদের সম্পর্কে পুলিশের কাছে তথ্য ও নজরদারি রয়েছে। সন্ত্রাসী ও ডাকাতরা যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন তাদের গ্রেফতার করা হবে। কোন অবস্থাতেই অস্ত্রধারীরা আইনের হাত থেকে রক্ষা পাবে না। তাছাড়া সরল ও বাহারছড়া এলাকার অস্ত্রধারীদের গ্রেফতার অভিযান চলছে বলেও তিনি জানান। জানা যায়, প্রতি রাতে চাম্বল খলিফা পাড়া এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে যাচ্ছে সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের একাধিক গ্রুপ। ওই এলাকায় বসবাসকারী মানুষকে অস্ত্রের মুখে জিম্মী করে লুঠে নিচ্ছে সর্বস্ব। তাছাড়া পাহাড়ের গাছ কর্তন, মাটি কাটা ও বালি উত্তোলনের মহোৎসব চালাচ্ছে এই ডাকাত দলেরা। তাদের মদদে রয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী মহল। গত সংসদ ও উপজেলা নির্বাচনের পর থেকে চাম্বল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে উঠতি বয়সী যুবকদের মধ্যে গ্রুপ ভিত্তিক সংগঠন গড়ে তোলা হয়। ওই সংগঠনের লোকজন এলাকায় ট্রাক যোগে গরু চুরি, পাহাড়ি গাছ কর্তন ও সরকারি জায়গা দখলসহ নানান অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়ে। এলাকার কতিপয় চিহ্নিহ্নত সন্ত্রাসীর মদদে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে প্রতিযোগিতামূলকভাবে অপরাধ কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, মহেশখালী থেকে দেশীয় তৈরি অস্ত্র ক্রয় করে সন্ত্রাসী লালন পালনের মধ্য দিয়ে এলাকার জনপদে কর্মকা- পরিচালিত হয়ে আসছে। কিছুদিন পূর্বে দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অপরদিকে সরল ও বাহারছড়া ইউনিয়নে একাধিক ডাকাত ও সন্ত্রাসী গ্রুপ তাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে জনমনে। সরল ইউপির ২নং ওয়ার্ডে রয়েছে একাধিক সংঘবদ্ধ জলদস্যু ও ডাকাত গ্রুপ। তাদের হাতে চলতি বছরের মে মাসে আবুল কালাম নামের এক মামলার বাদীও খুন হন। সব মিলিয়ে বাঁশখালীর এই ৪টি ইউনিয়ন সন্ত্রাসী ও ডাকাত দলের জনপদে পরিণত হয়েছে।
×