ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম চেম্বারে ভারতীয় হাইকমিশনার

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে এখন সোনালি অধ্যায়

প্রকাশিত: ০৯:৫৭, ১৮ জুন ২০১৯

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে এখন সোনালি অধ্যায়

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ টাটা, হিরোসহ ভারতের অনেক বিখ্যাত কোম্পানি বাংলাদেশে ৫৭০ মিলিয়ন ডলার সরাসরি বিনিয়োগ করেছে। ২০১৮-১৯ সালে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের মধ্যে বাংলাদেশের রফতানি ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। এক্ষেত্রে তৈরি পোশাক রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পারস্পরিক সম্পর্ক এবং উভয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করছে। দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের এলডিসি স্ট্যাটাস পরিবর্তিত হলেও অগ্রাধিকারভিত্তিক বাণিজ্য অব্যাহত থাকবে। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাশ সোমবার চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালনা পর্ষদ, ট্রেড বডির নেতৃবৃন্দ এবং ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে কথাগুলো বলেন। তিনি বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রীর সৌহার্দ্যরে ভিত্তিতে ভারত ও বাংলাদেশ এখন সম্পর্কের সোনালী অধ্যায় অতিবাহিত করছে। বাংলাদেশ থেকে ভারতে রফতানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অশুল্ক বাধাসমূহ দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ভিত্তিতে দূর করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, অর্থনৈতিক চরিত্র বিচারে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ ও ভারত এগিয়ে যাচ্ছে। ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের সমাহার কম হলেও ক্রমান্বয়ে তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি ভারত হতে আমদানির বিপরীতে বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস করার লক্ষ্যে রফতানি বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং এক্ষেত্রে বিদ্যমান অশুল্ক বাধাসমূহ দূর করার ক্ষেত্রে হাইকমিশনারের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত কর অবকাশসহ বিভিন্ন প্রণোদনার সুযোগ গ্রহণ করে মীরসরাইয়ে বাস্তবায়নাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে যৌথ বা এককভাবে বিনিয়োগের মাধ্যমে ভারতও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পণ্য রফতানি করে উভয়পক্ষ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ বলেন-স্থলপথে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি করা উভয়পক্ষের জন্য লাভজনক হবে। তিনি আগামী চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় পার্টনার কান্ট্রি হিসেবে অংশগ্রহণের জন্য ভারতের প্রতি আমন্ত্রণ জানান এবং তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা বণ্টনের দাবি জানান। আলোচকগণ মীরসরাই শিল্প নগরে জেটি নির্মাণ, আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে উভয় দেশে পরস্পরের ট্রাক চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ, সীমান্ত বাণিজ্য বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়ন সহযোগিতা, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ভারতীয় রাজ্যসমূহের সঙ্গে যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন, ভারতগামী বাংলাদেশী চিকিৎসা প্রার্থীদের জন্য সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন, তৈরিপোশাক রফতানিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, শুল্কায়নসহ বাণিজ্য সহজীকরণ, সম্ভাবনাময় খাতসমূহে মূল্য সংযোজন, চট্টগ্রাম বন্দরকে ট্রানজিট বন্দর হিসেবে ব্যবহার করা এবং যৌক্তিক পর্যায়ে মাশুল নির্ধারণ, বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী দেশসমূহের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়ন, চট্টগ্রাম বিমান বন্দরকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক হাব গড়ে তোলা, উভয় দেশের ব্যাংকিং চ্যানেল উন্নয়ন, ধর্মীয় পর্যটন উৎসাহিতকরণ এবং দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে ভারতীয় সহযোগিতার আহ্বান জানান। মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, এসএম আবু তৈয়ব, প্রাক্তন পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, জাপানের অনারারি কনসাল মোঃ নুরুল ইসলাম, কাস্টমস কমিশনার এম. ফখরুল আলম, দৈনিক পূর্বকোণ’র ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ সম্পাদক রুশো মাহমুদ, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ইঞ্জি. এম. আলী আশরাফ, বিএসআরএম’র চেয়ারম্যান আলী হুসেইন আকবর আলী।
×