ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টাঙ্গাইলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীকে মুয়াজ্জিনের ধর্ষণ চেষ্টা

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১৭ জুন ২০১৯

টাঙ্গাইলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীকে মুয়াজ্জিনের ধর্ষণ চেষ্টা

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ টাঙ্গাইলের সখীপুরে জ্বিন তাড়ানোর কথা বলে পঞ্চম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে (১০) ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মসজিদের মুয়াজ্জিনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে সখীপুর থানায় মেয়েটির মা বাদী হয়ে মুয়াজ্জিনের নামে মামলা করেন। অভিযুক্ত মুয়াজ্জিন রুহুল আমীন (৩০) উপজেলার কুতুবপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে কর্মরত। তার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলা সদরে। মামলার বিবরণ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বেলা দুইটার দিকে ওই মুয়াজ্জিন মেয়েটির বাড়িতে আসে। ওই স্কুলছাত্রীকে জ্বিনে ধরেছে তাকে ঝাড় ফুঁক দিয়ে জ্বিন তাড়াতে হবে বলে জানান। পরে মেয়েটিকে বাড়িতে একটি ঘরে আলাদা নিয়ে ঝাড় ফুঁক দেন। ঝাড় ফুঁকের এক পর্যায়ে মেয়েটির চোখে-মুখে সরিষার তেল মেখে দিয়ে স্পর্শ কাতর স্থানে হাত দেন ও ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় মেয়েটি চিৎকার করলে বাড়ির লোকজন ও স্থানীয় এলাকাবাসী এগিয়ে আসে এবং মেয়েটির কাছ থেকে ঘটনা শুনে অভিযুক্ত মুয়াজ্জিন রুহুল আমীনকে গণপিটুনি দিয়ে বেঁধে রাখে। এলাকাবাসী জানান, স্থানীয় মাতাব্বর ও সাবেক ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন ও মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীমের সহযোগিতায় মুয়াজ্জিন পালিয়ে যায়। তারা ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। আপোষ-মীমাংসার লক্ষ্যে এ নিয়ে এলাকায় কয়েক দফায় বৈঠকেও বসেন মাতাব্বররা। মেয়েটির মা জানান, তার মেয়ে স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। পরপর দুইদিন ওই মুয়াজ্জিন বাড়িতে এসে তার মেয়েকে ঝাড় ফুঁক দিয়েছেন। মুয়াজ্জিন এলাকায় ঝাড়-ফুঁক, পানিপড়াসহ বিভিন্ন ধরণের কবিরাজি চিকিৎসা করেন। এই অমানবিক ঘটনার বিচার দাবি করেন তিনি। দেরিতে মামলা করার বিষয়ে মেয়েটির মা বলেন, তার স্বামী প্রবাসে থাকায় ঘটনাটি নিয়ে তিনি দারুণভাবে চিন্তিত হয়ে পড়েন। এলাকার মাতাব্বররা নানা ধরণের প্যাঁচে ফেলে ছিলেন। এ ঘটনার পর মেয়েটিও ভয়ে মাঝে মধ্যে কান্নাকাটি করে। স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। ঘটনাটি ধামাচাপার জোর চেষ্টা চলে। তাই সোমবার দুপুরে মেয়েকে নিয়ে থানায় গিয়ে মামলা করেছি। এ ব্যাপারে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন বলেন, মামলা নেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত মুয়াজ্জিন রুহুল আমীনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
×