ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সামিহা রহমান

গরমে স্বস্তিতে থাকাই ফ্যাশন

প্রকাশিত: ০৯:১০, ১৭ জুন ২০১৯

 গরমে স্বস্তিতে থাকাই ফ্যাশন

চলছে গরমের ঝাঁজালো শাসনে ভরা দিনকাল। আলুথালু বেশে দিন পার করা মানুষেরা খানিক বেঁচে গেলেও ফ্যাশন সচেতনরা পড়েছেন বিপাকে। আরামে থাকতে চাইলে ফ্যাশন জলে যায়, আর ফ্যাশন ঠিক রাখতে গেলে আরামে ছাই পড়ে! তবে কি একদিক পুরো ছেড়ে দিয়ে আরেক দিক রক্ষা করাই উপায়? সেটা করতে যে মন মানে না! দুটোকেই ঠিক রেখে চলা যায় চাইলে। ফ্যাশনের ধারা বজায় রাখা চাই সময়ের চাহিদা মেনে। তপ্ত আবহাওয়ায় শরীর চাইবে শীতল পরশ আর আপনি ভারি ঝকমারি পোশাক গায়ে চাপিয়ে ঘুরে বেড়াবেন, নিশ্চিত থাকুন, সেটা ফ্যাশন নয়। সময়টা কেমন, তার সঙ্গে মিলিয়ে শরীরের প্রয়োজন ঠিক কী ধরনের পোশাক, কোন উপাদান সহনীয় বা কোনটা এখন বর্জনীয়, ফ্যাশন তৈরি হয় এসব ব্যাপার দেখেই। পোশাক আর সাজসজ্জা সবটাই হতে হবে সময়ের ভাবভঙ্গি বুঝে। তবেই ফ্যাশনও রক্ষা হবে আর স্বস্তিও অটুট থাকবে। পোশাক খানিক ঢিলেঢালা পরুন তীব্র গরমে। বাতাস চলাচলের সুযোগ রাখুন। হাঁসফাঁস করা থেকে প্রাণ বাঁচবে। সামান্য ঢিলে কুর্তি, কামিজ সঙ্গে পালাজ্জো বা সালোয়ার বেছে নেয়া যায় এইসব দিনে। নিত্যদিনের পোশাকে স্বস্তির প্রাধান্যই থাকবে সবার আগে। খুব আঁটসাঁট কাপড় আপনাকে ফ্যাশনের তৃপ্তি দিলেও স্বস্তি দেবে না। অথচ ঢিলে কাপড়টাও মানানসই হতে পারে, হতে পারে দারুণ ফ্যাশনেবল। ম্যাক্সি ধাঁচের ফুলেল ছাপের কুর্তি বা কুঁচি দেয়া একটা শার্ট, চমৎকার মানাবে গ্রীষ্মের পোশাকে। তাঁত অথবা টাঙ্গাইল, গরমের শাড়ি হিসেবে দারুণ উপযোগী এগুলো। খুব গলাবন্ধ পোশাক এড়িয়ে যাবেন। তাতে ঘামাচির বিষ নজরে পড়বে কম। আর পোশাকের উপাদান হিসেবে বেছে নিতে পারেন প্রাকৃতিক তন্তু। সুতি কাপড় হলো গরমের বন্ধু কাপড়। সুতির পোশাকগুলো নামিয়ে নিন পুরো গরমের সময়টা পার করতে। পোশাকে এড়িয়ে যাবেন সিল্কের মতো উপাদান। হালকা রং মানেই বয়স্কদের জিনিস, এই মতবাদ গত হয়েছে বোধহয়। চোখে ধাঁধা লাগানো ঝকমকে রঙের চাইতে হালকা কিন্তু উজ্জ্বল রংগুলো মানানসই এই গরমে। হালকা নীল, গোলাপি, বাদামি বা নরম সবুজ কিংবা হলদে রঙের পোশাক এই সময়ে চোখে আরাম দেবে। কালো রং পারতপক্ষে বাদই রাখুন, বিশেষ করে যখন রোদ মাথায় নিয়ে বাইরে থাকছেন। সাদা রঙের সঙ্গে অন্যান্য রঙের মিশেলে থাকুন প্রাণবন্ত। গলা, হাতা আর পিঠের কাছে খুব খোলা থাকবে নাকি একটু ঢাকা পোশাকেই স্বস্তি পাবেন? সেটা কিন্তু নির্ভর করছে কই থাকছেন বেশিটা সময় তার ওপর। ঘরের ভেতর থাকলে চলতে পারে একটু খোলা পিঠের পোশাক, হাফ-হাতা কামিজটা আরাম দেবে তখন। কিন্তু যদি অনেকখানি সময় বাইরে সূর্যের তাপেই থাকা হয় তবে খুব খোলা পিঠ বা গলা আরও অস্বস্তি দিতে পারে। তখন জামার হাতাটাও খানিক লম্বা না হওয়ার আফসোস হতে পারে। রোদে চামড়ার অতটা অংশ পুড়িয়ে লাভ তো নেই। কাজেই এমন বাইরে থাকা হলে সেদিনের পোশাক নির্বাচন করুন এসব কথা মাথায় রেখে। মাথায় কায়দা করে স্কার্ফ জড়িয়ে নিয়ে রোদের আঁচ থেকে চুলগুলোকেও রক্ষা করতে পারেন। নিজের সুরক্ষাও হলো সঙ্গে ফ্যাশনও। স্কার্ফের কথা হচ্ছে, হিজাব নয় কিন্তু। কাজেই নিয়ম মানার নেই কিছু। স্কার্ফটা চুলে জড়িয়ে নিতে পারেন যেমন খুশি। ধাতব গহনা কম ব্যবহার করুন গরমের দিনে। চামড়ায় অস্বস্তি হতে পারে বেশি। কানে ছোট দুল বা টপ, হাতে চুড়ির গোছা কমিয়ে হালকা ধাঁচের ব্রেসলেট পরা যায়। ভারি হার গলায় কাঁটা না হয়ে যায় যেন, খেয়াল রাখা চাই। চুল ছেড়ে বের হলেও চাইলেই চুলটা বেঁধে নেয়ার প্রস্তুতি রাখতে হবে।
×