ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচেও বৃষ্টির সম্ভাবন

প্রকাশিত: ১০:৩৩, ১৬ জুন ২০১৯

 বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচেও বৃষ্টির সম্ভাবন

মিথুন আশরাফ ॥ এবার ক্রিকেট বিশ্বকাপ যেন ‘ফ্লপ শো’ হয়ে গেছে। আর তা হচ্ছে বৃষ্টির তোপে। বৃষ্টি কেড়ে নিচ্ছে একের পর এক ম্যাচের ফল। চার ম্যাচ এরইমধ্যে বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে। তাতে সব হিসাব নিকাশ যেন পাল্টে যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ। যে দলগুলোর বিপক্ষে জেতার সম্ভাবনা, সেই দলগুলোর বিপক্ষেই বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হচ্ছে ম্যাচ। ব্রিস্টলে যেমন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়েছে। এবার সোমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টনটনের কাউন্টি গ্রাউন্ডের ম্যাচটিতেও চোখ রাঙাচ্ছে বৃষ্টি। সম্ভাবনা আছে বৃষ্টি হওয়ার। যদি বৃষ্টিতে এবারও ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশের বিপত্তি আরও বাড়বে। ব্রিস্টল থেকে টনটনে এসেও বৃষ্টির মধ্যে আটকা পড়েছে বাংলাদেশ দল। দুইদিন ছুটি ছিল ক্রিকেটারদের। কিন্তু তা থাকলে কী হবে, শান্তিমতো ঘুরে বেড়ানোও যায়নি। বৃষ্টিতে হোটেল বন্দী হয়ে থাকতে হয়েছে। তিন-চারজন ক্রিকেটার লন্ডনে গিয়ে ঘুরেছেন। বাকিরা টনটনে হোটেল বন্দীই ছিলেন। এখন তিনদিন অনুশীলন সেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলতে নামবেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচটির আগে ৫ দিন সুযোগ পেয়েছেন টাইগাররা। কোন খেলা ছিল না। এই সুযোগ, বিশ্রাম বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের পূর্ণোদ্যমে খেলার জন্য তৈরি করবে। ফুরফুরে মেজাজ তৈরি করবে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জেতার পর নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের কাছে হার এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হওয়ায় মানষিকতায় যে ধাক্কা লেগেছে তা দূর হবে। চাঙ্গা মানষিকতাও মিলবে। কিন্তু মাঠে তো খেলা হতে হবে। আবহাওয়ার ভিন্ন ভিন্ন পূর্বাভাস মিলছে। ইন্টারনেট দুনিয়ায় ঘেটে যা দেখা যাচ্ছে, কোথাও সোমবার সারাদিন না হলেও মাঝে মাঝে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। আবার কোথাও বৃষ্টির কোন আলামতই দেখা যাচ্ছে না। বৃষ্টি না হলে তো ভালই। কিন্তু হলে? বিপাকে পড়বে বাংলাদেশই। বৃষ্টি হওয়া মানে উইকেট পেস নির্ভর হয়ে থাকবে। এমনিতেই ছোট্ট মাঠ টনটনে পেসাররা বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন। তা এবার বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড-আফগানিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান ম্যাচেই দেখা গেছে। নিউজিল্যান্ড-আফগানিস্তান ম্যাচে পড়া ১৩ উইকেটের সবকটি পেসাররা নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান ম্যাচে ২০ উইকেটের ১৮টিই পেসারদের দখলে গেছে। বৃষ্টি না হলেও পেসাররা প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের বারোটা বাজিয়ে ফেলছেন। সেখানে বৃষ্টি হলে তো মহাবিপদ থাকছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে পেসার ওশানে থমাস, শেলডন কটরেল, জেসন হোল্ডার, আন্দ্রে রাসেল, কার্লোস ব্রাথওয়েট রয়েছেন। প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের আতঙ্ক তারা। বাংলাদেশকে তাই খুবই সাবধানে খেলতে হবে। পরিকল্পনাও তাই সুন্দরভাবে সাজাতে হবে। ব্যাটসম্যানদেরই আসলে বিশেষ ভূমিকা নিতে হবে। পেসবান্ধব উইকেটে মাশরাফি বিন মর্তুজা, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের উপরই ভরসা করতে হচ্ছে। এখন তারা কতটা কী করতে পারবেন, তা সময়ই বলে দেবে। এমন উইকেটে গতির বোলার খুব জরুরী। সেখানে রুবেল ছাড়া আর কোন বোলারই তেমন নেই। এখানেই বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকছে। বৃষ্টি আসলে গতির বোলার তো আরও বেশি করে জরুরী। বৃষ্টির উইকেট মানেই তো কথায় আছে ‘যত গতি, তত ক্ষতি’। বাংলাদেশ এখানে এগিয়ে থাকতে পারছে না। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াই করে হেরেছে। পাত্তা পায়নি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। আশা ছিল, শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে জয়ের ধারায় ফিরবে বাংলাদেশ। কিন্তু সেই আশা হতাশায় পরিণত করল বৃষ্টি। এক পয়েন্টেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো। মোট ৩ পয়েন্ট নিয়ে এখনও সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখা হচ্ছে। কিন্তু কোনভাবে যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচটিও বৃষ্টি পরিত্যক্ত হয়, তাহলে শেষ চারে খেলার আশায় হতাশা যুক্ত হয়ে যেতে পারে। তখন যে বাংলাদেশের ৫ ম্যাচ হয়ে যাবে। হাতে থাকবে চার ম্যাচ। যে চার ম্যাচের সবকটিতেই বাংলাদেশকে জিততে হবে। কিংবা কম করে হলেও তিন ম্যাচ জিতে আশায় থাকতে হবে। এখন পর্যন্ত সামনে পড়া যে ম্যাচগুলো (শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ) জেতার আশা করা হচ্ছে, সেই ম্যাচগুলোতে বৃষ্টির বাধা আসছে। ব্রিস্টলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। সোমবার বাংলাদেশের ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচটিতেও বৃষ্টি চোখ রাঙাচ্ছে!
×