ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পতেঙ্গায় কন্টেনারবাহী জাহাজ ও অয়েল ট্যাঙ্কারের সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ১০:৩৪, ১৫ জুন ২০১৯

 পতেঙ্গায় কন্টেনারবাহী জাহাজ ও অয়েল ট্যাঙ্কারের সংঘর্ষ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামের পতেঙ্গার গুপ্তখাল এলাকায় শুক্রবার সকালে বিপরীতমুখী দুটি জাহাজে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় জাহাজের সম্মুখভাগ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংঘর্ষের পর পর বন্দর চ্যানেল দিয়ে জাহাজের আসা-যাওয়া বন্ধ ঘোষণা করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রায় তিন ঘণ্টা পর বন্দর কর্তৃপক্ষের ছয় টাগ বোটের সমন্বয়ে চেষ্টা চালিয়ে জাহাজ দুটি কাছের চট্টগ্রাম ড্রাইডক জেটিতে ভিড়িয়ে চ্যানেল জাহাজ চলাচল উপযোগী করা হয়। এ ঘটনায় বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলমকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বন্দর সূত্রে জানা গেছে, সকাল সোয়া ৮টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় জোয়ার ছিল। জোয়ারের সময় সাধারণত বন্দরের জেটিতে জাহাজ ভিড়ে এবং ত্যাগ করে। ওই সময় গুপ্তখাল এলাকার ডলফিন জেটি থেকে আমদানির তেল খালাস করে এমটি বুরগান নামের একটি অয়েল ট্যাঙ্কার জেটি ত্যাগ করে বহির্নোঙ্গর অভিমুখে যাত্রা করে। ঠিক ওই সময় বহির্নোঙ্গর থেকে জেটির উদ্দেশ্যে প্রবেশ করছিল কন্টেনারবাহী জাহাজ এমভি এক্সপ্রেস মহানন্দা। এমটি বুরগান জেটি ত্যাগ করে চ্যানেলের বাম দিক দিয়ে যাওয়ার আগেই মধ্যবর্তী এলাকায় বিপরীত দিক থেকে অগ্রসরমান কন্টেনারবাহী জাহাজ এমভি এক্সপ্রেস মহানন্দার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে দুটি জাহাজেরই সম্মুখভাগ দুমড়েমুচড়ে যায়। বন্দর সূত্রে জানানো হয়, সৌভাগ্য যে, অয়েল ট্যাঙ্কারটিতে তেল ছিল না। পক্ষান্তরে, কন্টেনারবাহী জাহাজটি দ্রুতগতির থাকায় এটির ক্যাপ্টেন নিয়ন্ত্রণ রক্ষা করতে পারেননি। দুর্ঘটনার পর কন্টেনার জাহাজটি আংশিক কাত হয়ে গেলেও কোন কন্টেনার সাগরে পড়েনি। খবর পেয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ দ্রুত ৬টি টাগবোট প্রেরণ করে পরিস্থিতি মোকাবেলা শুরু করে। বন্দর সূত্রে জানানো হয়, অয়েল ট্যাঙ্কারটি একটি টাগবোটকে সাইড দিতে গিয়ে চ্যানেল অতিক্রম করে দক্ষিণ পাশে যেতে ব্যর্থ হয়। এ সময় বিপরীতমুখী কন্টেনার বোঝাই জাহাজটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে যায়। বন্দর কর্তৃপক্ষের ৬টি টাগবোট অকুস্থলে পৌঁছে দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। পরে তিন ঘণ্টার মধ্যে জাহাজ দুটিকে বিভিন্নভাবে বেঁধে টো করে নিয়ে যায় ড্রাইডক জেটিতে। দীর্ঘ তিন ঘণ্টাব্যাপী বন্দর চ্যানেল বন্ধ থাকার কারণে ওই সময়ে বহির্নোঙ্গর থেকে নির্ধারিত পাঁচ কন্টেনার জাহাজ জেটিতে প্রবেশ করতে পারেনি। পাশাপাশি বন্দর জেটি থেকেও কোন জাহাজ বহির্নোঙ্গরে যেতে পারেনি। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোঃ ওমর ফারুক জানান, শ্রীলঙ্কা থেকে ৭৪৪ কন্টেনার বোঝাই আমদানিপণ্য নিয়ে জেটিতে আসছিল এক্সপ্রেস মহানন্দা। আর কুয়েতী অয়েল ট্যাঙ্কার এমটি বুরগান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের আমদানির তেল খালাস করে জেটি ত্যাগ করছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর বেলা সোয়া ১১টার দিকে বন্দর চ্যানেল পুনরায় জাহাজ চলাচল উপযোগী ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এ সময় জোয়ার গড়িয়ে সাগরে ভাটা হয়ে যায়। ভাটার সময় জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকে বলে ওই সময়ে আর কোন জাহাজ আগমন ও তাগের কার্যক্রম চলেনি। বিকেলে পুনরায় জোয়ার হলে সিডিউল অনুযায়ী অপেক্ষমাণ কন্টেনার বোঝাই জাহাজ বন্দর জেটিতে ভেড়ানোর কার্যক্রম শুরু হয়। বন্দর সচিব আরও জানিয়েছেন, সংঘর্ষের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটিকে দুর্ঘটনার কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
×