ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আমির তান্ডবে ৩০৭ রানেই অলআউট অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত: ১১:২৮, ১৩ জুন ২০১৯

আমির তান্ডবে ৩০৭ রানেই অলআউট অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পাকিস্তান দলটিকে নিয়ে ভবিষ্যত বাণী করা যায় না! তা সবারই জানা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপে টনটনের ম্যাচটিতে তার প্রমাণ আবারও মিলল। আগে ব্যাটিং করে শুরুটা কী অসাধারণ করল অস্ট্রেলিয়া। একটা সময় মনে হয়েছিল ৪০০ রানের কাছাকাছি অনায়াসেই করবে অসিরা। কিন্তু মোহাম্মদ আমিরের (৫/৩০) বোলিং ধাঁধায় পড়ে ডেভিড ওয়ার্নারের সেঞ্চুরি (১০৭) ও এ্যারন ফিঞ্চের ৮০ রানের পরও ৩০৭ রানের বেশি করতে পারল না অস্ট্রেলিয়া। ৪৯ ওভারেই আবার গুটিয়ে গেল। পাকিস্তানের সামনে জিততে ৩০৮ রানের টার্গেট দাঁড় হলো। টনটনের কাউন্টি গ্রাউন্ড অন্য স্টেডিয়াম থেকে ছোট্ট। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে যে দলই ব্যাটিং নির্ভর উইকেট পাচ্ছে, তারাই ৩০০ রান অনায়াসে অতিক্রম করে সাড়ে তিন শ’ রান করে ফেলছে। ছোট্ট মাঠ হওয়াতে অস্ট্রেলিয়া সেই রকম কিছুই করবে, তা মনে হতে থাকে। টস হেরে আগে ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়ে শুরুতেই যে অসাধারণ খেলতে থাকেন দুই ওপেনার ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার। খুব বুঝে এগিয়ে যেতে থাকেন। দুইজন মিলে খুব দ্রুতই ১০০ রানের জুটি গড়ে ফেলেন। ১০০ বলে স্কোরবোর্ডে ১০০ রান যোগ হয়ে যায়। দেখতে দেখতে ১৫০ রানের কাছেও চলে যায় অস্ট্রেলিয়া। ফিঞ্চ ও ওয়ার্নার হাফসেঞ্চুরিও করে ফেলেন। যখন দলের রান ১৪৬ রানে যায়, তখনই বিপদ ঘনিয়ে আসে। যেখানে বিশ্বকাপে প্রথম ৪০০ রানের আলামত মিলছিল, সেখানে ফিঞ্চকে (৮২) মোহাম্মদ আমির আউট করে দিতেই পাকিস্তানের দিকে খেলা ঘুরতে শুরু করে দেয়। ২২তম ওভারে ১৪৬ রান হয়ে যাওয়ায় হাতে থাকে ২৮ ওভার। একই গতিতে রানের চাকা চললে স্বাভাবিকভাবেই ৪০০ রান বা তার কাছাকাছি হওয়ার কথা। কিন্তু আমির যে ‘ব্রেক থ্রু’ এনে দেন, এরপরই খেলা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে থাকে পাকিস্তান। যেখানে অসিদের ১ উইকেট শিকার করতে ১৪৬ রান পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়, সেখানে পরের ৯টি উইকেট ১৬১ রানেই হজম করে ফেলে পাকিস্তান। যে আমিরকে বিশ্বকাপ দলেই নেয়া হয়নি শুরুতে, সেই আমির বুঝিয়ে দেন তাকে কতটা দরকার। ফিঞ্চ আউট হওয়ার পরও হাল ছাড়েনি অস্ট্রেলিয়া। ওয়ার্নার তো আগের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে যে বেশি বল খেলে কম রান করে আউট হয়েছিলেন, বুধবার যেন প্রতীজ্ঞা করে নামেন কিছু একটা করে দেখাবেন। তিনি ঠিকই করে দেখালেন। সেঞ্চুরির পর একবার ‘নতুন জীবন’ পেয়ে ১১১ বলে ১১ চার ও ১ ছক্কায় ১০৭ রান করে শাহিন শাহ আফ্রিদির গতির কাছে হার মেনে আউট হলেন। ততক্ষণে দলও ২৪২ রানে চলে যায়, কিন্তু রানের গতি কমে যায়। কারণ, এরআগেই যে স্টিভেন স্মিথকে (১০) মোহাম্মদ হাফিজ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে (২০) শাহিন শাহ আফ্রিদি আউট করে দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে বেহাল দশায় ফেলে দেন। এরপর আর কোন ব্যাটসম্যান নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ঠিক যেন ভারতের ম্যাচের মতো হলো। ফিঞ্চ, ওয়ার্নার, স্মিথ, ম্যাক্সওয়েল, খাজা আউট হতেই ভারতের জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। ঠিক তেমনি পাকিস্তানের সঙ্গেও ফিঞ্চ, স্মিথ, ম্যাক্সওয়েল, ওয়ার্নারের পর দলের ২৭৭ রানের সময় উসমান খাজা (১৮) আউট হতেই সাড়ে তিন শ’ রানও যে অসিরা করতে পারবে না, তা বোঝা হয়ে যায়। খাজা আউটের পরত ৩০ রানেই ৫ উইকেট খতম হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার। এরমধ্যে শেষ ৫ উইকেটের চারটিই আমির হজম করেন। কী অসাধারণ বোলিং করেন। টস জিতে যখন পাকিস্তান ফিল্ডিং নিল, ফিঞ্চ ও ওয়ার্নার খুব স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে থাকলেন, তখন ফিল্ডিং নেয়াই ভুল ছিল; এমন মনে হচ্ছিল। কিন্তু যেই আমির প্রথম উইকেট শিকার করলেন, খেলাই ‘ইউটার্ন’ নিয়ে ফেলল। ১০ ওভার বোলিং করে ২ মেডেনসহ ৩০ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন আমির। তার বোলিং তান্ডবেই অস্ট্রেলিয়া ৩০৭ রানের বেশি করতে পারল না।
×