ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলের সন্তোষে লালপুল সংস্কার না করায় ভোগান্তি চরমে

প্রকাশিত: ০৯:৩৭, ১৩ জুন ২০১৯

 টাঙ্গাইলের সন্তোষে লালপুল  সংস্কার না করায়  ভোগান্তি চরমে

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ১২ জুন ॥ টাঙ্গাইল পৌর শহরের সন্তোষে ভেঙ্গে যাওয়া লালপুলটি পুনর্নির্মাণ না করায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সড়কে চলাচলকারী জনসাধারণ। ভোগান্তি লাঘবে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের কারও যেন নজরে আসছে না। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে পশ্চিমাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ অসহনীয় কষ্ট নিয়ে চলাচল করছে। জানা যায়, চলতি বছরের গত ১১ মে ভোরে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চাড়াবাড়ি সড়কের পৌর শহরের সন্তোষ বাজারের পশ্চিম পাশে ‘লালপুল’ নামে খ্যাত বেইলি ব্রিজে বালুভর্তি একটি বড় ট্রাক উঠে গেলে এটি ভেঙ্গে পড়ে। এরপর এলজিইডি এই ভাঙ্গা ব্রিজের নিচে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নির্মিত একটি স্লুইসগেটকে বিকল্প ব্রিজ হিসেবে ব্যবহার করে একটি এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করে দেয়। এখন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পশ্চিম অঞ্চলের পোড়াবাড়ি, দাইন্যা, কাতুলী, হুগড়া ও মাহমুদনগর ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ এই বিকল্প ব্রিজ ব্যবহার করে যাতায়াত করছে। বিকল্প সড়ক ভারি যান চলাচল করার অনুপযোগী এবং এ্যাপোচ সড়কটি এবড়োথেবড়ো হওয়ায় হালকা যান চলাচলেও অসুবিধা হচ্ছে। এছাড়া মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং এমএম আলী কলেজ ও সন্তোষ জাহ্নবী স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতে প্রতিনিয়ত সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে ব্রিজটি পুনর্নির্মাণ না হওয়ার কারণে। সড়কে চলাচলকারী সিএনজি-অটোচালক, মোটরসাইকেল আরোহী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা বলেন, শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কের ওপর ব্রিজটি ভেঙ্গে গেছে একমাস হয়েছে। অথচ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কারও যেন কোন মাথা ব্যথা নেই। তারা দায়িত্ব এড়িয়ে চলছেন। সড়কে চলাচলকারী কাবিলাপাড়ার সিএনজি চালক মুছা মিঞা বলেন, এই সড়কে যাত্রী নিয়ে চলাচল খুবই কষ্টের। যাত্রীদের ব্রিজের রক্ষিত বেলতা অংশে নামিয়ে দেই। ফলে যাত্রীদের হেঁটে ব্রিজ পার হয়ে অপর প্রান্তে গিয়ে সিএনজিতে চড়তে হয়। এ কারণে যাত্রীদেরও সমস্যা হচ্ছে। আমাদের আয় কম হচ্ছে। অটোচালক মনিরুল হক বলেন, এই ব্রিজে চলাচলের সময় খুব ভয়ে থাকি। একবার এই ব্রিজের ঢাল বেয়ে নামার সময় যাত্রী নিয়ে উল্টো পড়ে গিয়েছিলাম। এছাড়া এই সড়ক ও ব্রিজ ব্যবহারের ফলে অটোর অনেক ক্ষতি হচ্ছে। সরকারী এমএম আলী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র পোড়াবাড়ি ইউনিয়নের পানিয়াবান্দা গ্রামের খায়রুল ইসলাম জানান, আমাদের দুটি কলেজ বাস এই ব্রিজ ব্যবহার করে ছাত্রছাত্রী আনা-নেয়া করত। বর্তমানে বাস দুটি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অনেক ছাত্রছাত্রী কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণের দাবি জানান তিনি। মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র শাহরিয়ার সৈকত জানান, ব্রিজের পশ্চিমপাশে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রছাত্রী থাকে। বর্তমানে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ ও ৪ নম্বর গেট ব্যবহার করে যাতায়াত করছে। এতে অনেক পথ ঘুরে আসতে হচ্ছে। ফলে অনেক সময় তারা ক্লাসে দেরিতে উপস্থিত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের কাছে যত দ্রুত সম্ভব ব্রিজটি নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি। তোরাবগঞ্জ বাজারের পল্লী চিকিৎসক বসির আহমেদ ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এই ব্রিজের কারণে রোগী পরিবহনে অন্য সড়ক ব্যবহার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠাতে হচ্ছে।
×