ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শেরপুরে ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা ও সচেতনতা’ শীর্ষক প্রচারণামূলক সেমিনার

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ১১ জুন ২০১৯

শেরপুরে ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা ও সচেতনতা’ শীর্ষক প্রচারণামূলক সেমিনার

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর ॥ প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের পরিচালক (অর্থ ও কল্যাণ) মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেছেন, সরকার চাকরির জন্য বিদেশ গমনকারীদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। বিশ্বের ১৬৮টি দেশে বাংলাদেশের জনশক্তি পাঠানো হচ্ছে। এর মধ্যে ২০১৭ ও ১৮ সালেই জনশক্তি পাঠানো হয়েছে ১৭ লক্ষাধিক। অন্যদিকে প্রতিবছর ওই খাত থেকে ১৪ থেকে ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে। জনশক্তিকে আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা সম্ভব হলে বৈদেশিক মুদ্রা আরও অধিক অর্জিত হবে। তিনি বলেন, কোন কোন দেশের প্রবাসী কর্মীরা চুক্তির মেয়াদ শেষে আর বিদেশে থাকেন না। কিন্তু আমাদের দেশের প্রবাসীরা একবার বিদেশে যেতে পারলে মৃত্যুর আগে আর ফিরতে চান না। ফলে বার্ধক্য ও অসুস্থতাসহ নানা কারণে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫-২০ জন প্রবাসী কর্মীর লাশ দেশে ফিরছে। গত বছর প্রবাসী কর্মীর মৃত্যুর সংখ্যা ছিল প্রায় ৪ হাজার। তিনি মঙ্গলবার সকালে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে-তত্ত্বাবধানে শেরপুর জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষ রজনীগন্ধায় আয়োজিত ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা ও সচেতনতা’ শীর্ষক প্রচারণামূলক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওইসব কথা বলেন। সেমিনারে স্থানীয় বক্তারা শেরপুরে রিক্রুটিং এজেন্ট নিয়োগ, ডেমো অফিস স্থাপন ও প্রতি উপজেলায় গড়ে ১ হাজার জনকে বিদেশ পাঠানোর ঘোষণা বাস্তবায়নের দাবিসহ মাঠ পর্যায়ে বিদেশ গমনেচ্ছুদের প্রতারণা ও দুর্ভোগ লাঘবে নিরাপদ অভিবাসনের বিষয়ক ব্যাপক গণসচেতনতা গড়ে তোলার উপর মতামত তুলে ধরলে প্রধান অতিথি ওই বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন। ‘জেনে বুঝে বিদেশ যাই, অর্থ সম্মান দুটোই পাই’ এ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে সেমিনারে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, প্রবাসী কর্মৗদের জন্য সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে বিমানবন্দরে প্রবাসী কর্মীদের নিরাপদে বিদেশ গমন ও প্রত্যাবর্তনে সহায়তা, প্রবাসী কর্মীর সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, মৃত প্রবাসী কর্মীর মৃতদেহ দেশে আনয়ন এবং সৎকারসহ মৃতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান, কর্মীর মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ আদায় এবং ওয়ারিশদের মধ্যে বিতরণ, প্রবাসে আটক কর্মীদের মুক্তকরণ ও নারী কর্মীর জন্য সেইফ হোম স্থাপনসহ ফেরত আনয়ন, আহত ও অসুস্থ কর্মীদের দেশে ফেরত আনয়ন, চিকিৎসার ব্যবস্থা ও আর্থিক সাহায্য প্রদান। এজন্য ২০১৬ সালে প্রবাসে মৃত ৫ হাজার ১০৫ জন প্রবাসী কর্মীর পরিবারকে প্রায় ১৪৫ কোটি টাকা এবং ২০১৮ সালে ৩ হাজার ৯৪২টি পরিবারতে প্রায় ১১৪ কোটি টাকার অনুদান প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ২০১৮ সালে মৃত ১ হাজার ৫৮ জন কর্মীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণবাবদ আদায়কৃত ৬৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুবের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) এটিএম জিয়াউল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জন কেনেডি জাম্বিল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এবিএম এহছানুল মামুন, নবাগত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তোফায়েল আহমেদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুন, প্রবাসী ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব খান শাহানুর আলম, ওই মন্ত্রণালয়ের আইসিটি কর্মকর্তা পাপ্পু মজুমদার, জেলা খামারবাড়ির উপ-পরিচালক আশরাফ উদ্দিন, জেলা তথ্য কর্মকর্তা তাহলিমা জান্নাত লিনা, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা লুৎফুল কবীর, প্রেসক্লাবের সভাপতি শরিফুর রহমান, সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার, সাধারণ সম্পাদক মেরাজ উদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবিহা জামান শাপলা, সাংবাদিক দেবাশীষ সাহা রায়, সঞ্জীব চন্দ বিল্টু, দেবাশীষ ভট্টাচার্য, মাসুদ হাসান বাদল প্রমুখ। ওইসময় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণসহ বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
×