ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক রব

স্বাধীনতার পক্ষের সব দল নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের পরিধি বাড়ানো হবে

প্রকাশিত: ১২:৩৪, ১১ জুন ২০১৯

 স্বাধীনতার পক্ষের সব দল নিয়ে  ঐক্যফ্রন্টের পরিধি  বাড়ানো হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাধীনতার পক্ষে সব দলকে নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পরিধি বাড়ানো হবে, জোটের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব সোমবার একথা বলেছেন। তিনি বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের বিষয়ে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্ব পরবর্তী সভাটি হবে। এদিন উত্তরায় আ স ম রবের বাসায় জোটটির শীর্ষ নেতাদের স্টিয়ারিং কমিটির বেঠক হয়। আ স ম রব বলেন, সরকারবিরোধী যত রাজনৈতিক দল আছে, সেসব দলকে নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়ার মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের হাত থেকে গণতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলন অব্যাহত রাখব। উন্নয়নের নামে রাষ্ট্রীয় সম্পদের হরিলুট চলছে অভিযোগ করে আ স ম রব বলেন, একটা বালিশ তুলতে ১ হাজার টাকা লাগে, এটা কেউ শোনেনি। একটা বালিশের দাম ৬ হাজার টাকা, সারা দুনিয়ায় এমন ইতিহাস নেই। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে জাতির কাছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠাসহ রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন করা। এই প্রতিশ্রুতিতে নির্বাচনে গিয়েছিলাম। এটা এখনও আদায় করতে পারিনি। আদায় না করা পর্যন্ত আন্দোলন ও ঐক্য অব্যাহত থাকবে। দেড় মাস পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে ভোট ডাকাতি হয়েছে অভিযোগ করে রব বলেন, বিষয়টি নিয়ে আপনাদের প্রশ্ন থাকতে পারে। কিন্তু এর উত্তর আজকে আমরা দেব না। আমাদের নেতা ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করার পর আপনাদের মাধ্যমে জনগণের উত্তর দেব। সাংবাদিকদের উদ্দেশে রব বলেন, আপনারা জনগণের অংশ, আমাদের অংশ। আশা করি পজেটিভ নিউজ করবেন, যা করলে জনগণের ক্ষতি না হয়। রব আরও বলেন, সরকার রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে বেআইনীভাবে প্রয়োগ করে রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনে অন্যায়ের বিস্তার করে দিয়েছে। আজকে প্রতিদিন নারী-শিশু নির্যাতন হচ্ছে, কৃষক ধানের দাম পাচ্ছে না। যারা বিদেশে চাল রফতানি করছে, তাদের ভর্তুকি দিচ্ছে, কৃষককে দিচ্ছে না। ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যুর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রব বলেন, তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। একটি নির্যাতনের বিচার হয়নি। রিপোর্ট পাওয়া যায় না। ফলে ঘুষ, দুর্নীতি বেড়েই চলেছে। অন্যায় করলে বিচার হবে, এই কথা দেশের মানুষ ভুলে গেছে। অন্যায় করলে তোমার বিচার হবে, এটা বোঝাতে হবে। ঐক্যফ্রন্টের এই নেতা বলেন, কাদের সিদ্দিকী যে চিঠি দিয়েছেন ড. কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্টের কাছে এই চিঠি উত্তর কী হবে? যদি সংসদ অবৈধ হয়, তাহলে আপনাদের দলের লোকেরা কেন গেলো? তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া কারাগারে। তার হাসপাতালে বোমা পাওয়া গেছে। তার জীবন হুমকির মুখে। হাজার হাজার কর্মী কারাগারে। তাদের কারাগারে রেখে আমরা ঘুমাতে পারি না। খালেদা জিয়াসহ সরকারবিরোধী সব নেতাকর্মীকে কারামুক্ত না করা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান। ৯ মে সংবাদ সম্মেলন করে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী জোটের অসঙ্গতির কথা বলেছিলেন। ৮ জুনের মধ্যে অসঙ্গতি দূর না হলে তিনি জোট ছাড়বেন বলেও জানান। কাদের সিদ্দিকী জোটের সমস্যা নিয়ে ড. কামাল হোসেন ও জোটকে চিঠি দিয়েছিলেন। সোমবারের বৈঠকে কাদের সিদ্দীকীর চিঠি প্রসঙ্গে রব বলেন, কামাল হোসেন সুস্থ হয়ে বৈঠক না ডাকা পর্যন্ত কাদের সিদ্দিকীর প্রস্তাব স্থগিত থাকবে। কামাল হোসেনের উপস্থিতিতে বিষয়টি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। দেশে মানুষের নিরাপত্তা নেই জানিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, বর্তমান অবস্থা থেকে বাঁচতে হলে জাতীয় বৃহত্তর ঐক্য দরকার। এখনকার ঐক্যফ্রন্টের চেয়ে সুদৃঢ় ঐক্য দরকার। সেটা করতে চাই। তবে এখন পর্যন্ত জাতির প্রত্যাশা ঐক্যফ্রন্ট পূরণ করতে পারেনি বলে তিনি জানান।
×