ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে যুবরাজের অবসর

প্রকাশিত: ১১:৫৪, ১১ জুন ২০১৯

 আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে যুবরাজের অবসর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দ্য ওভালে অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দেয়ার পর গোটা দেশ আনন্দে মাতোয়ারা। এর মধ্যেই গতকাল সোমবার দেশের বাণিজ্য নগরীতে ব্যাট প্যাড তুলে রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন যুবরাজ সিং। অথচ এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না। পঞ্জাবতনয় স্বয়ং চেয়েছিলেন, ২০১৯ সালের পরে তিনি অবসরের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেবেন। মানুষ যা ভাবে তা তো সব সময় হয় না। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, বিরাট কোহালিরা যখন রানীর দেশে নিজেদের নিংড়ে দিচ্ছেন, ঘাম ঝরাচ্ছেন, তখন যুবরাজ হৃদয়বিদারক সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেললেন। গত কয়েক বছর ধরে তার অবসর নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। শেষের দিকে প্রায় প্রতিটি সাংবাদিক সম্মেলনে নিয়ম করে তাকে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়া হতো, ‘কবে অবসব নেবেন?’ চুপ করে থাকতেন যুবি। একই প্রশ্ন শুনতে শুনতে বিরক্ত বাঁ-হাতি অলরাউন্ডার একবার বলে ফেলেছিলেন, ‘একটা সময়ের পর সবাইকেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। ২০০০ সাল থেকে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছি। ১৭-১৮ বছর হয়ে গেল। ২০১৯-এর পর আমি এই বিষয়ে ভাবব।’ কথা কিন্তু রাখলেন না দেশের হয়ে ৪০ টেস্ট, ৩০৪ ওয়ানডে ও ৫৮ টি২০ খেলা যুবরাজ। তিনি যে অবসর নিতে চলেছেন, এ রকম একটা খবর রবিবার থেকেই উড়ছিল ভারতীয় ক্রিকেট মহলে। ভারত-অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ ম্যাচের জন্য যুবির অবসরের খবরটা চাপা পড়ে যায়। সোমবার সকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়ের মতো ছড়িয়ে পড়ে যুবির অবসর নেয়ার খবর। দুপুরেই তিনি জানিয়ে দিলেন, তার সরে যাওয়ার খবর। সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন, ‘ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির ফাইনাল, ২০০৭ টি২০ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডর স্টুয়ার্ট ব্রডকে এক ওভারে ছটি ছক্কা হাঁকানো তার ক্রিকেট জীবনের স্মরণীয় ঘটনা।’ তার সাংবাদিক সম্মেলন শুরুর ঠিক আগে একটি আবেগপ্রবণ ভিডিও দেখানো হয়। সেখানে তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘আমি এই খেলাটা ভালবাসি। আবার এই খেলাটাকেই আমি ঘৃণা করি। ক্রিকেট আমাকে সুপারস্টার বানিয়েছে। আমাকে সব দিয়েছে। তাই এই খেলাটাকে আমি খুব ভালবাসি। কিন্তু এই ক্রিকেটই আমাকে মানসিক দিক থেকে যন্ত্রণা দিয়েছে। বাবা যোগরাজ সিংহ বড় মাপের ক্রিকেটার হতে পারেননি। ছেলেকে ক্রিকেটার বানিয়ে নিজের অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণ করতে চেয়েছিলেন। যোগরাজ মাঝে মাঝে নির্দয় হয়ে উঠতেন ছোট্ট যুবির উপরে। যুবরাজ সিংয়ের ক্রিকেট ক্যারিয়ার কম বর্ণময় নয়। ক্যারিয়ারে আকাশ ছুঁয়েছেন তিনি। টি২০ বিশ্বকাপে স্টুয়ার্ট ব্রডকে ছ’টা ছক্কা হাঁকানো, ২০১১ বিশ্বকাপ প্রায় একার হাতেই জিতিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তার পরই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ক্রিকেট থেকে সাময়িক বিরতির পরে ফিরে আসেন রাজকীয় ভাবেই। আইপিএল খেলে জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন দেখছিলেন তিনি। সেই স্বপ্ন আর সফল হবে না বুঝতে পেরেই বিশ্বকাপের মাঝখানেই অবসরের ঘোষণা করে দিলেন তিনি।
×