ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ড্র করলেই বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ১১ জুন ২০১৯

 ড্র করলেই বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথম পর্বে প্রতিপক্ষের মাটিতে গিয়ে জিতে কাজ অর্ধেক সারা, এখন নিজেদের মাটিতে দ্বিতীয় পর্বের ফিরতি ম্যাচে ড্র হলেই কেল্লাফতে। কিন্তু ড্র নয়, আজ মঙ্গলবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হওয়া ম্যাচে জয়ের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে স্বাগতিক বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। প্রতিপক্ষ লাওস। এই ম্যাচে আজ না হারলেই বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে লাল-সবুজ বাহিনী। গত ৬ জুন প্রথম পর্বের ‘এ্যাওয়ে’ ম্যাচে স্বাগতিক লাওসকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এই জয়ে তাই প্রতিপক্ষের চেয়ে অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থানে আছে জেমি ডের শিষ্যরা। খেলার টিকেটের মূল্য ভিআইপি ১০০ এবং গ্যালারি ৫০ টাকা। টিকেট বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম ও মতিঝিলের বাফুফে অফিসে পাওয়া যাবে। স্কুল ছাত্রছাত্রীদের জন্য আইডি কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে গ্যালারির ৫ ও ৬নং গেট উন্মুক্ত রাখা হবে। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বিটিভি এবং বাংলা টিভি। প্রথম ম্যাচে জয় পাওয়া আত্মবিশ্বাসী জামাল ভূঁইয়ারা গোলপোস্ট অক্ষত রেখে আগে গোল আদায় করে নিয়ে ম্যাচটা জিতে নিতে দৃঢ়প্রত্যয়ী। খেলা উপলক্ষে সোমবার এক ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সম্মেলন কক্ষে। এতে উপস্থিত বাংলাদেশের কোচ জেমি ডে বলেন, ‘আমরা জানি এই কঠিন ম্যাচ হবে। প্রথম লেগের ম্যাচটাও তাই ছিল। ওই ম্যাচে আমরা ভাল খেলেছি। তাছাড়া ভাগ্যও সহায় ছিল, তাই জিতেছি। আমাদের প্রস্তুতি ভাল হয়েছে। মঙ্গলবার আমরা জয়ের জন্যই নামব। জানি লাওস আক্রমণাত্মক খেলবে। কারণ তাদের গোল এবং জয় প্রয়োজন। আমরা সেভাবেই পরিকল্পনা সাজিয়েছি।’ বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেন, ‘প্রথম লেগটা আমাদের জন্য কঠিন ছিল। বিশেষ করে প্রথমার্ধে। দ্বিতীয় ম্যাচে জিততে চাই। সে লক্ষ্যেই আমরা মাঠে নামব।’ প্রথম পর্বের ম্যাচে হেরে স্বভাবতই লাওস এখন মরিয়া। বাংলাদেশের জন্য সেটা কতটা চাপের? ‘এ নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। ঠিকমতো খেলতে পারলে ম্যাচের ফল আমাদের পক্ষেই যাবে।’ জেমির মন্তব্য। তিনি আরও যোগ করেন, ‘সেটপিসে লাওস খুব বিপজ্জনক। বিশেষ করে তাদের অধিনায়ক। তবে সবাইকে নিয়েই আমরা পরিকল্পনা করছি। কাউকে নিয়ে আলাদা করে কিছু ভাবছি না। প্রথমার্ধে আমাদের প্রাধান্য বিস্তার করে খেলতে হবে। শুরুতেই গোল আদায় করে নিতে হবে। জিততে হলে অবশ্যই নিজেদের গোল হজম করা চলবে না। সেজন্য রক্ষণভাগকে সেরা খেলাটাই খেলতে হবে। আমাদের ডিফেন্ডাররা প্রস্তুত।’ জামাল ভূঁইয়ার অভিমত, ‘কোচের নির্দেশনা মেনে চলা আমার লক্ষ্য। মধ্যমাঠে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তা না হলে ম্যাচটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। ম্যাচে মধ্যমাঠ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ভবিষ্যত নিয়ে ভাবছি না। এখন কালকের ম্যাচটা নিয়ে ভাবছি। কারণ এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সবাই এই ম্যাচের দিকে তাকিয়ে।’ লাওসের কোচ ভি সুন্দরাম মূর্তি বলেন, ‘প্রথম পর্বের ম্যাচের পর আমরা নিজেদের ভুল ত্রুটিগুলো নিয়ে কাজ করেছি।’ লাওস অধিনায়ক সৌক আফনি বলেন, ‘এই ম্যাচে আমরা নিজেদের শতভাগ দিতে চেষ্টা করব এবং দ্বিতীয় লেগে জিততে চেষ্টা করব। এটি নির্ভর করবে আমার সবার সম্মিলিত নৈপুণ্যের ওপর।’ মঙ্গলবারের ম্যাচে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে প্রচুর দর্শক হতে পারে। যাদের প্রায় শতভাগই থাকবেন বাংলাদেশী। এ প্রসঙ্গে লাওস অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা দর্শকপূর্ণ স্টেডিয়ামে খেলতে উপভোগ করি। এটা কোন চাপ নয়।’ লাওস কোচ বলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নতি করেছে। তারা দ্রুতগতির ফুটবল খেলে। লং থ্রোতে ভাল। সেট পিসেও বিপজ্জনক। তাদের কিভাবে আটকানো যাবে সেভাবে কাজ করব। আমরা জয়ের জন্যই নামব।’ লাওস যাওয়ার আগে মাত্র দশদিনের প্রস্তুতি নেয়ার সময় পেয়েছিল বাংলাদেশ দল। তবে কোচ জেমি ডে ঠিকই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তার শিষ্যদের নিয়ে। এ জন্য তারা আগে সফর করেন থাইল্যান্ড। সেখানে থাই লীগের দুটি ক্লাবের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে। তাতে একটি ড্র ও অপরটিতে জিতে প্রয়োজনীয় আত্মবিশ্বাস নিয়েই পা রাখে লাওসের মাটিতে। লাওসের বিপক্ষে এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের অক্টোবরে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে নিজেদের মাঠ সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে একই ব্যবধানে জিতেছিল লাল-সবুজরা। এর আগে লাওসের মাঠে ২০১৮ সালের মার্চের প্রীতি ম্যাচটি ২-২ ড্র হয়েছিল। এখন দেখার বিষয়, আজ ঢাকায় লাওসের বিরুদ্ধে না হেরে বিশ্বকাপ প্রাক-বাছাইয়ে খেলার যোগ্যতা আদায় করে নিতে পারে কি না বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল।
×