সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ ভারতের প্রখ্যাত অভিনেতা, পরিচালক, লেখক ও নাট্যব্যক্তিত্ব গিরিশ কারনাড আর নেই। খ্যাতিমান এই সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সোমবার ভোরে বেঙ্গালুরুর লাভেলি রোডের নিজের বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। গুণী এই শিল্পীর প্রয়াণে ভারতের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শোক প্রকাশ করেছেন। গিরিশ কারনাডের মৃত্যুতে তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বেঙ্গালুরুতে দুইদিনের শোক এবং একদিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতের একাধিক গণমাধ্যম জানায়, গিরিশ কারনাড অনেকদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। অসুস্থতার কারণে তাকে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তিও করতে হয়েছিল। সোমবার তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তৎকালীন বম্বে (বর্তমানে মুম্বাই) শহরে ১৯৩৮ সালের ১৯ মে জন্ম গ্রহণ করেন। গিরিশ কারনাড চার দশকের বেশি সময় ধরে নাট্যচর্চায় যুক্ত ছিলেন। অভিনয়ের পাশাপাশি সমানতালে নাটক লিখেছেন। ১৯৬০ সাল থেকে কন্নড় ভাষার লেখক হিসেবে তিনি পরিচিতি পেতে শুরু করেন। গিরিশ কারনাড হিন্দি ছাড়াও কয়েকটি ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। পাশাপাশি চলচ্চিত্র পরিচালনাও করেছেন। পদ্মশ্রী (১৯৭৪), পদ্মভূষণ (১৯৯২) ও জ্ঞানপীঠ (১৯৯৮) সম্মাননা ছাড়াও ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও চারটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারও পেয়েছেন।
১৯৭০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘সংস্কার’ ছিল তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র। এরপর ‘নিশান্ত’ (১৯৭৫), ‘মন্থন’ (১৯৭৬), ‘স্বামী’ (১৯৭৭), ‘পুকার’ (২০০০)-এর মতো জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ইকবাল’-এ তার অভিনয় দারুণভাবে গ্রহণ করে নিয়েছিল দর্শক। এরপর ২০১২ সালে সালমান খানের সঙ্গে ‘এক থা টাইগার’ এবং ২০১৭ সালে এর সিক্যুয়াল ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’তেও গিরিশ অনবদ্য অভিনয়ের ছাপ রেখেছেন। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি ছোট পর্দায়েও ছিল তার পদচারণা। বিশেষ করে ১৯৮৬-৮৭ সালে জনপ্রিয় টিভি ধারাবাহিক ‘মালগুডি ডেজ’-এ তার অভিনয় দীর্ঘদিন মনে রাখবে দর্শক। বাংলাদেশেও জনপ্রিয় ছিলেন গিরিশ। তার ‘যযাতি’ নাটকটি ‘সময় নাট্যদল’র প্রযোজনা করেছে। ‘যযাতি’ ভারতের মঞ্চেও প্রদর্শিত হয়েছে।
