ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

লভ্যাংশের ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত করমুক্ত হচ্ছে ॥ শেয়ারবাজার চাঙ্গা করার উদ্যোগ

প্রকাশিত: ১০:০৯, ১০ জুন ২০১৯

 লভ্যাংশের ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত করমুক্ত হচ্ছে ॥ শেয়ারবাজার চাঙ্গা করার উদ্যোগ

অপূর্ব কুমার ॥ শেয়ারবাজার চাঙ্গা করতে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশের অর্জিত আয়ে আরও ছাড় দেয়া হচ্ছে। আগামী বাজেটে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় বাজেটে এটি অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। এছাড়া সরকারী কোম্পানির শেয়ারের সরবরাহ বাড়ানোর ঘোষণাও জাতীয় বাজেটে উল্লেখ থাকবে। শেয়ারবাজারের গভীরতা বাড়াতে ভাল শেয়ারের যোগান বৃদ্ধির অংশ হিসেবে বাজেটে অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জানা গেছে, বর্তমানে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বছরে যে পরিমাণ লভ্যাংশ ঘোষণা করে, তার সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্জিত আয় করমুক্ত। সূত্র জানায়, এবারের বাজেটে লভ্যাংশের অর্জিত আয়ে আরও ছাড় দেয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে করমুক্ত সীমা বিদ্যমান পঁচিশ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে পঞ্চাশ হাজার টাকা করা হচ্ছে। কর ছাড়ের এ প্রস্তাব কার্যকর হলে বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবেন এবং শেয়ারবাজার চাঙ্গা হবে বলে আশা করছে সরকার। জানা যায়, তালিকাভুক্ত অনেক কোম্পানি মুনাফা করার পর তার শেয়ার হোল্ডারদের ঠিকমতো লভ্যাংশ দেয় না। আবার অনেক কোম্পানি আছে বছরের পর বছর লভ্যাংশ ঘোষণা করে না। এতে করে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এনবিআর সূত্র বলেছে, লভ্যাংশের অর্জিত আয়ে আরও কর ছাড় দিলে কোম্পানিগুলো বেশি করে মুনাফা দিতে উৎসাহিত হবে। এতে করে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কিনতে উৎসাহিত হবেন এবং বাজার চাঙ্গা হবে। অন্যদিকে জাতীয় বাজেটে এবারও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগের কথা উল্লেখ থাকবে। শেয়ারবাজারে ভাল কোম্পানির সরবরাহ বাড়াতে এবারের বাজেটের সরকারী শেয়ার ছাড়ার ঘোষণা থাকবে। এছাড়া নির্দিষ্ট প্রণোদনা না থাকলেও বাজেটে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে মিউচুয়াল ফান্ডকে শক্তিশালীকরণের কথা উল্লেখ থাকবে। যোগাযোগ করা হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি আজিজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে লভ্যাংশের (ডিভিডেন্ড) অর্জিত আয়ে কর ছাড়ের যে সীমা আছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। এই সীমা আরও বাড়াতে হবে। এটা করা হলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত হবেন। ফলে সামগ্রিকভাবে শেয়ার বাজারে ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে। তিনি আরও বলেন, কোম্পানি মুনাফার ওপর কর দেয়ার পর অবশিষ্ট মুনাফা থেকে শেয়ার হোল্ডারদের নির্দিষ্ট হারে লভ্যাংশ (ডিভিডেন্ড) দেয়া হয়। এই লভ্যাংশের ওপর ফের কর কেটে রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে দ্বৈত কর দেয়ার যে নিয়ম আছে, তা পরিহার করতে হবে। এটা করলে বিনিয়োগকারীরা আরও উৎসাহিত হবেন বলে মনে করেন তিনি। এ ছাড়া শেয়ারবাজার দীর্ঘদিন খারাপ থাকার কারণে ইতোমধ্যে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এসব পদক্ষেপে বাজারে তারল্য সঙ্কট কমার কথা। কিছু ক্ষেত্রে শেয়ার নিয়ে কারসাজিও বন্ধ হবে।
×